হোয়াইট হাউসের মসনদে আগামী চার বছরের জন্য আবারও ডোনাল্ড ট্রাম্প থাকবেন কিনা সেই সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার নেবেন মার্কিন ভোটাররা। ১৯৭০ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে সক্রিয় বারাক ওবামার আমলের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন রিপাবলিকান দলীয় ডোনাল্ড ট্রাম্প।মার্কিন নির্বাচনী সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে বাড়ছে জনমত জরিপ। এখন পর্যন্ত প্রায় অধিকাংশ জরিপেই এগিয়ে বাইডেন।
দেশজুড়ে একজন প্রার্থীর জনপ্রিয়তা বোঝার জন্য জাতীয় জনমত জরিপ একটি ভালো মাপকাঠি। তবে নির্বাচনের ফলের ব্যাপারে আভাস দেয়ার জন্য সবসময় এ জরিপ যথেষ্ট নয়।উদাহরণ হিসেবে ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কথা বলা যেতে পারে। ওই বছর প্রায় সব জনমত জরিপে এগিয়ে থেকেও; এমনকি প্রায় ৩০ লাখ বেশি ভোট পেয়েও ট্রাম্পের কাছে হারতে হয় সেই সময়ের ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে। অর্থাৎ বেশি ভোট পেয়েও ইলেকটোরাল কলেজ ব্যবস্থার কারণে একজন প্রার্থীর জয়ী হওয়ার সুযোগ নেই।চলতি বছরের শুরু থেকেই প্রায় অধিকাংশ জাতীয় জরিপে ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে জো বাইডেন। এগিয়ে থেকেও সেই সতর্কবার্তা মাথায় নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে হচ্ছে ডেমোক্র্যাট শিবিরকে। সর্বশেষ জনমত জরিপেও ডোনাল্ড ট্রাম্পের তুলনায় জো বাইডেন এগিয়ে আছেন প্রায় ১০ পয়েন্ট।
২০১৬ সালের জরিপগুলো তেমন পরিষ্কার ছিল না। নির্বাচনের একেবারে আগের দিনগুলোতে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটন হালকা ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন।গতবারের নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটন একটি বিষয় পরিষ্কার করেছেন, বেশি ভোট পেলেও সেটি জয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নাও হতে পারে। অধিকাংশ রাজ্যে প্রায় একই ধাঁচে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বেশকিছু রাজ্য রয়েছে; যেগুলোতে দুই প্রার্থীর জয়ের সুযোগ আছে। এই রাজ্যগুলোই নির্ধারণ করতে পারে কে জিতবেন আর কে হারবেন। এসব রাজ্য ব্যাটলগ্রাউন্ড হিসেবে পরিচিত।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ব্যবস্থা অনুযায়ী- প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ইলেকটোরাল কলেজের মাধ্যমে। কোন দলের কতজন প্রার্থী প্রতিনিধি পরিষদ এবং সিনেটে যেতে পারবেন তা প্রত্যেকটি রাজ্য থেকে ভোটারদের ভোটে নির্বাচিত হন। দেশটিতে মোট ইলেকটোরাল কলেজের ভোটের সংখ্যা ৫৩৮; একজন প্রার্থীর নির্বাচিত হওয়ার জন্য দরকার ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট।২০১৬ সালের নির্বাচনে কিছু ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প বড় জয় পেলেও এবারে সেই চিন্তায় ভাঁজ ফেলেছেন জো বাইডেন। ওই বছর আইওয়া, ওহাইও ও টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থীর সঙ্গে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ব্যবধান ছিল আট থেকে দশ শতাংশ। কিন্তু চলতি বছরে এই তিন রাজ্যে ট্রাম্প-বাইডেন কাছাকাছি অবস্থানে আছেন।এসব হিসাব-নিকেশের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু রাজনৈতিক বিশ্লেষক ট্রাম্পের পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ খুবই কম বলে মন্তব্য করেন।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রভাবশালী সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট বলছে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জো বাইডেনের হারানোর সম্ভাবনা খুবই কম। রাজনৈতিক বিশ্লেষণী ওয়েবসাইট ফাইভথার্টিএইট এবারের নির্বাচনে জো বাইডেনের জয়ের পক্ষেই বাজি ধরছে। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প যেকোনও মুহূর্তে ঘুরে দাঁড়াতে পারেন বলেও প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেছে ফাইভথার্টিএইট।রোববার অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প; আইওয়া, মিশিগান, নর্থ ক্যারোলিনা, জর্জিয়া এবং ফ্লোরিডায় সমাবেশ করেছেন তিনি। ওয়াশিংটনে সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তৃতায় ট্রাম্প বলেছেন, তার নেতৃত্বে সরকারি গাড়ি উৎপাদন শিল্প পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। বর্তমানে দেশটির অর্থনীতি অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
চলতি বছরের তৃতীয় অর্থনৈতিক প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি রেকর্ড ভাঙা ৩৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। যদিও দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশটির অর্থনীতিতে ৩১ শতাংশ সংকোচন ঘটে; যা যুক্তরাষ্ট্রের ৮০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ সংকোচন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন অর্থনীতির ওপর এই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে কয়েক বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দেশটির অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক এই প্রভাব পড়েছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তারা।
পরবর্তীতে আইওয়া অঙ্গরাজ্যে কন্যা ইভানকা ট্রাম্প এবং সহযোগী হোপ হিকসের সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন ট্রাম্প। এ সময় তিনি সীমান্ত সুরক্ষা এবং আদালতে আরও রক্ষণশীল বিচারক নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।করোনাভাইরাস মহামারির ব্যাপারে সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তাদের কাছে দুটি বিষয় রয়েছে; যেখান থেকে তারা যেকোনও একটি বেছে নিতে পারেন। এর মধ্যে একটি বাইডেনের প্রাণঘাতী লকডাউন অন্যটি মহামারি শেষ করতে সক্ষম নিরাপদ ভ্যাকসিন।ট্রাম্প যখন আইওয়াতে ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা করেছেন; ঠিক সেই সময় বাইডেন তার নিজ রাজ্য ও জন্মস্থান পেনসিলভানিয়ায় ছুটেছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এই রাজ্যকে অন্যতম প্রধান হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
২০১৬ সালের নির্বাচনে সামান্য ব্যবধানে জয় পেয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু চলতি বছরের জনমত জরিপগুলোতে এই রাজ্যে জো বাইডেনের এগিয়ে থাকার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।ফিলাডেলফিয়ায় নির্বাচনী সমাবেশে অংশ নিয়ে জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রে পদ্ধতিগত বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আহ্বান জানান। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলার কৌশলের তীব্র সমালোচনা করেন তিনি।তিনি বলেন, ট্রাম্প করোনাভাইরাস মোকাবিলা করেছেন প্রায় অপরাধমূলক উপায়ে। কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে; যা একেবারে অপ্রয়োজনীয়।
এর আগে, এক টুইটে জো বাইডেন বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প লাতিন পরিবারগুলোর মর্যাদায় আঘাত হেনেছেন। আমি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে এটির অবসান ঘটবে।
যুক্তরাষ্ট্রের এবারের নির্বাচনে প্রধান প্রধান কিছু ইস্যুতে নেয়া দুই প্রতিদ্বন্দীর নীতিমালায় মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় গত জানুয়ারিতে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বর্তমানে এই টাস্ক ফোর্স দেশে সবকিছু চালু এবং সুরক্ষার ব্যাপারে তাদের মনযোগ ঘুরিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কোভিড-১৯ এর চিকিৎসা অথবা ভ্যাকসিন তৈরির কাজ দ্রুতগতিতে শেষ করতে মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট এক হাজার কোটি ডলারের প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। কিন্তু জো বাইডেন নির্বাচিত হলে প্রত্যেক রাজ্যে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য অন্তত ১০টি কেন্দ্র চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এছাড়া জাতীয়ভাবে কন্ট্যাক্ট-ট্রেসিং কর্মসূচি বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। দেশজুড়ে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধানের ব্যাপারেও নিজের সমর্থনের কথা জানিয়েছেন বাইডেন।
জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে ট্রাম্প শুরু থেকেই সন্দেহপ্রবণ অবস্থানে রয়েছেন। পুনর্নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্প্রসারণ করতে চান না তিনি। এছাড়া প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তিনি।তবে জো বাইডেন বলেছেন, তিনি নির্বাচিত হওয়া মাত্রই যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস চুক্তিতে ফেরাবেন। শুধু তাই নয়, ২০৫০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃস্বরনের পরিমাণ শূন্যের কোটায় আনতে চান তিনি। দ্বিতীয় দফায় নির্বাচিত হলে আগামী ১০ মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাশাপাশি নতুন নতুন ক্ষুদ্র ব্যবসা খাতে আরও ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা এবং আয়কর হ্রাস ও যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে কোম্পানিগুলোকে সরকারের দেয়া ঋণেও সুদ হার কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।অন্যদিকে, জো বাইডেন দেশের উচ্চ আয়ের মানুষদের কর বৃদ্ধি করতে চান। তবে যারা বছরে ৪ লাখের বেশি ডলার আয় করেন তাদের ওপর প্রয়োগ করতে চান আয় কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত।
আগের মতো নির্বাচনের রাতেই কি মিলবে ফল?
যুক্তরাষ্ট্রের অতীতের নির্বাচনের দিকে তাকালে দেখা যায়, ভোট গণনা করতে কয়েকদিন সময়ের দরকার হয়। কিন্তু কে হতে যাচ্ছেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট; তা নির্বাচনের রাতেই প্রায় পরিষ্কার হয়ে যায়।
২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় পরদিন বিকেল ৩টার দিকে উল্লাসরত সমর্থকদের উদ্দেশে বিজয়ী ভাষণ দেয়ার জন্য নিউইয়র্কে মঞ্চে আসেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
কিন্তু এবার নির্বাচনী ফল এতো দ্রুত নাও আসতে পারে। দেশটির কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, চূড়ান্ত নির্বাচনী ফল জানতে এবারে কয়েকদিন এমনকি কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত লেগে যেতে পারে। কারণ হিসেবে চলতি বছরের নির্বাচনে রেকর্ড গড়া আগাম ভোটের কথা বলছেন তারা।
দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯ কোটি ১০ লাখের বেশি মানুষ আগাম ভোট দিয়েছেন; যাদের প্রায় অর্ধেকই ডাক যোগে। এছাড়া ২০০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল জানতে ভোট গ্রহণের দিন থেকে প্রায় এক মাস সময় অপেক্ষা করতে হয়েছিল। কারণ সেই সময় দেশটির সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বিজয়ী প্রেসিডেন্টের নাম ঘোষণা করা হয়। ইউরোপে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি শুরু হয়েছে। প্রতিদিন কয়েক লাখ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। মহামারি ভাইরাসটির বিস্তার ঠেকোতে সোমবার থেকে ‘লকডাউন লাইট’ কার্যকর হয়েছে জার্মানিতে। ইউরোপের অনেক দেশে আরও কড়া বিধিনিয়ম চালু করা হয়েছে। খবর জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে অনলাইনের।
গত কয়েক মাসে বিশেষ চাপ অনুভব না করলেও আশঙ্কাজনক হারে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সোমবার থেকে এক মাসের জন্য আরও কড়া বিধিনিয়ম চালু করা হচ্ছে। চার সপ্তাহের জন্য এই ‘লকডাউন লাইট’ মানুষের মেলামেশা যতটা সম্ভব কমিয়ে এনে সংক্রমণের গতির পথে বাধা সৃষ্টি করবে, এমনটাই আশা কর্তৃপক্ষের।মানুষকে বোঝানো হয়েছে যে, এখন এমন ‘ত্যাগ’ স্বীকার করলে ডিসেম্বর মাসে বড়দিন উৎসব কিছুটা হলেও পালন করা সম্ভব হবে। উল্লেখ্য, রবার্ট কচ ইনস্টিটিউটের সূত্র অনুযায়ী রোববারও জার্মানিতে নতুন করে ১৪ হাজার ১৭৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। অর্থাৎ গত কয়েক দিনের তুলনায় সংক্রমণের হার কিছুটা কমেছে।
বার-রেস্তোরাঁ, সিনেমা-থিয়েটার ইত্যাদি বন্ধ হওয়ার আগে সপ্তাহান্তে জার্মানির মানুষ যতটা সম্ভব সুযোগের সদ্ব্যবহার করে নিয়ে নিয়েছেন। বিশেষ করে মিউনিখ ও বার্লিন শহরে বাড়তি উৎসাহ চোখে পড়েছে।সোমবার থেকে মিউজিয়াম ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সব অনুষ্ঠানও বন্ধ থাকছে। শরীরচর্চা বা শরীরের যত্ন নিতে জিম, সুইমিং পুল, বিউটি ও মাসাজ পার্লার, উলকি আঁকার দোকানও খুলতে পারবে না। তবে চুল কাটার সেলুন খোলা থাকবে। এমনকি স্টেডিয়ামে গিয়ে বুন্দেস লিগার ফুটবল ম্যাচ দেখারও উপায় থাকবে না।মোট কথা প্রকাশ্যে সর্বোচ্চ দুটি পরিবারের মধ্যে দশ জনের বেশি মানুষের সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এত বাধা সত্ত্বেও জীবনযাত্রা ও অর্থনৈতিক কার্যকলাপ চালু রাখতে স্কুল ও কিন্ডারগার্টেন খোলা থাকছে।
বেশিরভাগ দোকানবাজারও খোলা থাকছে, যদিও বদ্ধ জায়গায় ক্রেতাদের সর্বোচ্চ সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ মাথা গুনে দোকানে প্রবেশের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। যাদের পক্ষে ঘরে বসে অফিস করা সম্ভব, তাদের দফতরে না যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বাকি বিশ্বের তুলনায় ইউরোপের করোনা পরিস্থিতি অনেক অবনতি হয়েছে সম্প্রতি। মাত্র পাঁচ সপ্তাহের ব্যবধানে ইউরোপে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। রয়টার্সের হিসাব অনুযায়ী রোববার আক্রান্তদের সংখ্যা এক কোটির মাত্রা অতিক্রম করেছে। অথচ সেখানে ৫০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হতে প্রায় নয় মাস সময় লেগেছিল।
বিশ্বের দশ শতাংশ জনসংখ্যা বাস ইউরোপে। অথচ এ পর্যন্ত মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ২২ শতাংশ ইউরোপের। গত মাসে লাতিন আমেরিকা ও এশিয়া মহাদেশেও করোনা সংক্রমণের সংখ্যা এক কোটি ছাড়ায়। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই আক্রান্তের সংখ্যা ৯০ লাখেরও বেশি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জার্মানি ছাড়াও ফ্রান্স, ব্রিটেন ও পর্তুগালের মতো দেশ নানা মাত্রায় লকডাউন চালু করেছে। স্পেন ও ইতালিতে আরও কড়া বিধিনিষেধ কার্যকর করা হয়েছে। এমন পদক্ষেপের মেয়াদ শেষ পর্যন্ত কত বাড়ানো হবে, সে বিষয়ে জল্পনাকল্পনা চলছে।
ইউরোপের কিছু কিছু দেশের সরকার কমপক্ষে আগামী বছরের বসন্তকাল পর্যন্ত বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতির আশা দেখছে না। পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়নভূক্ত (ইইউ) দেশগুলো নাগরিকদের সমস্যা কমাতে ব্যর্থ হলে ব্যাপক অসন্তোষের আশঙ্কা করছে কিছু মহল।