কুষ্টিয়া দৌলতপুরে পুলিশের চাকুরী দেয়ার নাম করে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র, অর্থ দিতে গিয়ে মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবার সর্বস্বান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
উপজেলার বোয়ালীয়া ইউনিয়নের মধুগাড়ী গ্রামের মজির উদ্দিন মন্ডলের ছেলে ভুক্তভোগী সিরাজুল ইসলাম জানান, ২০১৭ সালে ডিসেম্বর মাসে আমার প্রতিবেশী মৃত জামির মন্ডরের ছেলে আব্দুল লতিফ ও প্রাগপুর ইউনিয়নের মহিষকুন্ডি গ্রামের ভাদুর ছেলে দুলাল, আমার ছেলে রাকিব কে পুলিশের চাকরি দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়।
তিনি আরও জানান, ২০১৭ সালে ডিসেম্বর মাসে কুষ্টিয়ায় পরিক্ষা হয়, সেই সুবাদে লতিব ও দুলাল আমার সাথে পুলিশের কনস্টেবল পদে লোক ধরে চাকুরী নিয়ে দিবে তার জন্য ১২ লক্ষ টাকা কন্ট্রাক্ট হয়। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি নাজিম উদ্দিন, সিরাজ শেখ ও ইউপি সদস্য ফারুক হোসেনের উপস্থিতে ৩ লক্ষ টাকা দেই। পরে আমার ছেলে রাকিবকে ২০১৭ সালে ডিসেম্বর মাসে কুষ্টিয়ায় কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য নিয়ে যায়। সেখানে পরীক্ষায় টিকে ওয়েটিং লিস্টে আছে এমন ব্যবস্থাপত্র দেখায় লতিব। ওয়েটিং লিস্টে থাকা কাগজপত্র দেখিয়ে ওয়েটিং লিস্ট থেকে নাম কাটাতে হবে দাবি করে একদিনের ভিতর আরো সাত লক্ষ টাকার দাবি করেন, আমি এক রকম বাধ্য হয়ে আবাদি জমি কম দামে বিক্রয় করে ও সুদের টাকা নিয়ে সাত লক্ষ টাকা পরিশোধ করি। তারপরও আমার ছেলের চাকরি হয় নাই। তিন বছর হতে চলেছে লতিব ও দুলাল তিন লক্ষ টাকা ফিরত দিলেও বাকী সাত লক্ষ টাকা ফিরত দিচ্ছেনা।
এ বিষয়ে রাকিবুল জানান, প্রতারক চক্র প্রতারনা করে আমার বাবা আবাদি জমি বিক্রয় করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বিষয়টি তদন্ত করে বিচার দাবি করছি।
এ দিকে নাজিম উদ্দিন, সিরাজ শেখ ও ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন জানান, আমাদের উপস্থিতিতে তারা টাকা লেনদেন করেছে। কিন্তু চাকুরী দিতে না পারায় তিন লক্ষ টাকা ফেরৎ দিলেও এখনো বাকী ৭ লক্ষ টাকা ফেরৎ দিচ্ছেনা।
এ বিষয়ে লতিব এর বাড়ীতে গেলে বাড়ীতে না পেয়ে পরিবারের লোক জনের কাছে তার মুঠোফোনের নাম্বার চাইলে পরিবারের লোকজন দাবি করেন তিনি ফোন ব্যবহার করেন না। তার পরিবারের লোকজনের কাছে সহযোগীতা না পেয়ে এলাকাবাসীর কাছে থেকে লতিবের মুঠোফোনের নাম্বার নিয়ে যোগাযোগ করেলে প্রথম কলে লতিব ফোন উঠান আর জানান, তিনি বলেন আমি যে তিন লক্ষ টাকা নিয়েছি সেটা ফেরৎ দিয়েছি বাকী কোন টাকা আমি নেই নাই। পুলিশের চাকুরী কি টাকা দিয়ে হয়? এমন প্রশ্ন উত্তরের কোন সদুত্তর দিতে পারেনি আব্দুল লতিফ।
অপর আরেক অভিযুক্ত দুলালের সাথে যোগাযোগ করতে লতিবের দেওয়া তথ্য গরমিল হয়ে যায়।
দুলাল জানান, আব্দুল লতিব আমার মামা, যেই দিন টাকার লেনদেন করেছে আমি সেখানে বেড়াতে গিয়ে দেখেছিলাম মামার বাড়িতে । কিন্তু যে টাকা আমার উপস্থিতিৃতে লেনদেন হয়েছে তা চার লক্ষ টাকা আমার উপস্থিতিতে আবার ফেরৎ দেওয়া হয়েছে। লতিব বলছে তিন লক্ষ টাকার লেনদেনের কথা কিন্তু আরেক অভিযুক্ত দুলাল বলছে টাকা ফেরৎ হয়েছে চার লক্ষ টাকা।
তাই বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবি করছে প্রতারণার ফাঁদে পড়া পরিবার ও এলাকাবাসী।
দৌলতপুর থানা পুলিশ জানায়, এ বিষয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ হয়েছিলো এলাকার আইন শৃঙ্খলা সুষ্ঠ রাখার স্বার্থে তাদের ডাকা হলে লতিব থানায় আসেন নাই।