এদের মধ্যে উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের দয়রামপুর ঘোষপাড়ায় অবস্থিত “রূপাই ডেইরি ফার্মে” পালিত মার্শাল নামের ষাঁড়টির ওজনই প্রায় সাড়ে পনেরশো কেজি। সাদা কালো মিশেল হলেষ্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের বিশালাকৃতির মার্শালের দৈর্ঘ্য সাড়ে ১০ ফুট ও উচ্চতা সাড়ে ৬ ফুট।
জানা গেছে, প্রায় সাড়ে চার বছর আগে ঐ ফার্মেই জন্ম হয় মার্শালের। জন্ম থেকেই হৃষ্ট-পুষ্ট হওয়ার কারণে মনযোগ কারে খামারীর। সেই থেকেয় আদর যতেœ বেড়ে ওঠে মার্শাল। তবে গড়নে বিশালাকৃতির হলেও মার্শাল স্বভাবে বেশ শান্ত শিষ্ট।
উওর বঙ্গের দিনাজপুর থেকে আসা মঈদুল ইসলাম দীর্ঘ ৫ বছর ধরে কাজ করছেন “রূপাই ডেইরি ফার্মে”। তিনি জানান, এই ফার্মে ৯০ টি গাভী সহ ছোট-বড় ১৫৫ টি গরু রয়েছে। এদের সাথে একত্রে প্রাকৃতিক খাবার খেয়েই মার্শাল এত বড় হয়েছে। কাঁচা ঘাস, খড় ছাড়া ও প্রতিদিন তাকে ১৩ থেকে ১৬ কেজি দানাদার খাবার দেয়া হয়। এগুলোর তালিকায় রয়েছে- গমের ভূষি, মসুর, মুগ, কলাই ও এ্যাংকর ডালের গুঁড়া, সরিষা ও সয়াবিনের খৈল। এছাড়াও দেয়া হয় চিটাগুড়। হৃষ্ট-পুষ্ট করনে কোন প্রকার ফিড বা এন্টি বায়োটিক ব্যবহার না করায় প্রকার ফ্যান ছাড়া ও থাকতে পারে স্বাভাবিক। শুধু দিনে দুই বার গোসল করান বলে জানান তিনি।
রূপাই ডেইরি ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুশান্ত কুমার রায় জানান, গো খাদ্যের মূল্য বেশি হওয়ায় মার্শালের পেছনে বছরে গড়ে খরচ হয়েছে দু লক্ষ টাকার বেশী। এ হিসেবে এখন পর্যন্ত ১০ লক্ষ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। মার্শাল কে ১৩ লক্ষ টাকায় বিক্রির ইচ্ছার কথাও জানান তিনি।
অন্যদিকে উপজেলার কয়া ইউনিয়নের বারাদি গ্রামের ৭ ফুট ৮ ইি দৈর্ঘ্য ও ৫ ফুট প্রস্থের ৯০০ কেজির সাদা কালো মিশেল একই জাতের “বুলেট” নামের অপর একটি ষাঁড়ের দাম হাঁকানো হয়েছে ১০ লক্ষ টাকা।
খামার মালিক মনিরুজ্জামান জানান, নিতান্তই শখের বশে নিজের সন্তানের মত নিবিড় যত্নে৪ বছর ধরে তিলে তিলে বড় করেছি বুলেট কে। খাবারের দাম অনেক বেশি তাই আর পালতে পারছি না। নিজের সন্তানের মতই ওর প্রতি মায়া পরে গেছে। ওকে বিক্রি করে দেব এ কথা ভাবলে চোখের জল ধরে রাখতে পারি না।
এদিকে কোরবানিকে সামনে রেখে এই উপজেলায় আকর্ষণের কেন্দ বিন্দুতে রয়েছে ষাঁড় দুটি। তাই মার্শাল, বুলেটকে দেখতে প্রতিনিয়তই ভীড় করছে উৎসুক জনতা।
উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন এবারের কোরবানি ঈদ কে সামনে রেখে উপজেলায় ৩ হাজার ৮শ টি খামারে গরু, মহিষ, ছাগলসহ মোট পশু প্রস্তুত রয়েছে প্রায় ২৪ হাজার। যা এই উপজেলার চাহিদা থেকে বেশি। উদ্বৃত্ত পশুগুলো চলে যাবে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। গরু মোটাতাজা করনে বিভিন্ন প্রদর্শনী ও প্রণোদনা দিয়ে খামারিদের সহযোগিতা করছে সরকার। তবে গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় গরু মোটাতাজা করন প্রক্রিয়া কিছুটা বাধাগ্রস্থ হয়েছে।