গেল ১২ সেপ্টেম্বর থেকে দিনে আধ বেলা কাজ করছেন দেশের সকল প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের কর্মী এবং খোদ কর্মকর্তাও। একই রীতি চলছে সংশ্লিষ্ট জেলা অফিসেও। খোদ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এমন কর্মবিরতীর ঘোষণায় সেবা গ্রহিতারাও বিষয়টি নিয়ে আগ্রহি হয়ে উঠেছেন।
আজ ১৫ সেপ্টেম্বর নিজ নিজ জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলীপি হস্তান্তরের মাধ্যমে শেষ হবে এই দফা। একেক জেলায় স্মারকলীপি দিতে অংশ নিবেন অন্তত ৪০ জনের মতো কর্মচারী-কর্মকর্তা।
কর্মবিরতি পালনে দৌলতপুর অফিসের ছবি
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ২০১২ -এর আলোকে নিজেদের নানা প্রাপ্য বাস্তবায়ণের দাবিতে এই কর্মসূচী। জনবল কাঠামো নিয়োগ বিধি বাস্তবায়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতাধীন কর্মকতা হলেও এই বিভাগের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা পদধারীদের গ্রেড উন্নয়নের ভিত্তিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা হিসাবে পদায়ন, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তাদের গ্রেড উন্নয়ন। বাংলাদেশ সচিবালয়ের অনুসরণে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সকল কর্মচারীদের পদের নাম পরিবর্তন এবং সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন পদে শুণ্য থাকা ৭শ’ জনকে নতুন নিয়োগ ব্যবস্থার দাবিতে এই কর্মসূচী।
দেশের পিআইও, ডিআরআরও এবং কর্মচারীদের আলাদা তিনটি সংগঠনের সম্মিলিত সংগঠন ’দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরাধীন কর্মকর্তা কর্মচারী কল্যান পরিষদ’র উদ্যোগে এই কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে সারাদেশে। এর অংশ হিসাবে গেল ১২ সেপ্টেম্বর থেকে আজ ১৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত প্রতি কার্যদিবসে আধাবেলা কর্মবিরতী পালন করে কুমারখালি-খোকসা-দৌলতপুর-মিরপুর-ভেড়ামারা-কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পিআইও অফিসসহ সংশ্লিষ্ট জেলা কার্যালয়।
দৌলতপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান জানান, আমাদের এই ন্যায্য দাবিগুলো বাস্তবায়ন হোক, এতে করে সারাদেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় বর্তমানের তুলনায় কাজের গতি ও স্বচ্ছতা আরও অনেক বেশি বাড়বে। প্রকৃতপক্ষে জনবল অনুপাতে আমাদের দপ্তরের কাজ সামলানো খুবই কষ্টসাধ্য। মিরপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাহমুদুল ইসলাম বলেন, আমাদের দাপ্তরিক নথিগত এবং আউটডোরের পরিদর্শন পর্যবেক্ষণ সমানতালে করতে হয়, এক্ষেত্রে বর্তমান ব্যবস্থাপনা অনুসারে কাজ করতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়। প্রায় প্রতিদিনই এই দপ্তরের স্টাফদের দশ ঘণ্টার বেশি কাজ করা লাগে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বলেন, ২০১২ সালে পাশ হওয়া আইন অনুসারে আমাদের প্রাপ্য পাঁচটি দাবি নিয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট উচ্চ পর্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছি। ১৯৭২ সালে এই দপ্তর চালু হওয়ার পর থেকে আজ অবধি কোন শ্রেণীতেই গ্রেড উন্নয়ন হয়নি। আমাদের দাবিগুলো ন্যায্য এবং যৌক্তিক। আমরা ভীষন ভাবে আশাবাদী অচিরেই আমাদের এই পাঁচ দফা দাবি মেনে নেয়া হবে।
দাবি আদায় না হলে স্মারকলীপির পর কোন কর্মসূচীতে যাবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে, তবে আমরা আশা করছি বর্তমান সরকার দেশের উন্নয়নের স্বার্থে, রাষ্ট্রীয় নানা কাজ বেগবান করতে আমাদের দাবি মেনে নিবেন।
বৃহস্পতিবারের কর্মবিরতী শেষে জেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্মারকলীপি প্রদান করবেন কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলামকে। উল্লেখ্য, সারাদেশে বর্তমান সরকারের অবকাঠামো ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যপক ভুমিকা পালন করছে এই দপ্তর।