শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৪২ অপরাহ্ন

নানান রকম অভিযোগ উঠছে তবে কেনো!মুল হোতারা কেন ধরাছোঁয়ার বাহিরে!

কুষ্টিয়ার সময় ডেস্ক / ৯৯ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম: সোমবার, ১৫ আগস্ট, ২০২২, ৪:৫৪ পূর্বাহ্ন

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের উত্তর মিরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলাম দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবত স্বপরিবারে আমেরিকার নিউইয়র্কে অবস্থান করে আসছে। অথচ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ বহাল তবিয়তে ধরে রেখেছেন তিনি। এ যেনো মিষ্টির দোকানে অডার করে রাখা রসো গোল্লা। এদিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে গড়মিল কার্যক্রম।

এদিকে আবার বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আনিসের বিরুদ্ধে নিয়োগ সার্কুলারের একমাস আগেই চাকুরিতে যোগদানের অভিযোগ উঠেছে।

আনিসুর রহমান যার ইনডেক্স নাম্বার ৫৬৮০৮৩৯৪। তিনি সহকারী শিক্ষক বাংলা হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে সরকারি বেতন উত্তোলন করছে। অথচ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক আদেশ জারি প্রেক্ষিতে গত ২০০৫ সালে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া এন, টি, আর, সি কর্তৃক নিয়োগ দেওয়া হয়। অথচ ২০২২ সালে কিভাবে একজন সহকারি শিক্ষক পদে এন, টি ,আর, সি সনদ পত্র ব্যতীত এবং এন, টি, আর, সি কর্তৃক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া বিধিমালা না মেনে সম্পূর্ণ জালিয়াতি করে উক্ত শিক্ষককে বিদ্যালয়ের কার্যনির্বাহী কমিটি নিজ ক্ষমতায় সরকারি নিয়োগ দেন।

একটি বিশেষ সূত্রে জানা যায়, উক্ত শিক্ষক কে বিগত ইংরেজি ১২/৪/২০০৪ ইং তারিখের আবেদন পত্রের প্রেক্ষিতে ১৭/০৯/২০০৪ ইং তারিখে নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডের সুপারিশের প্রেক্ষিতে ইংরেজি ০৭/১১/২০০৪ ইং তারিখের বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের ০২নং সিদ্ধান্ত মোতাবেক বেসরকারি শিক্ষক শিক্ষিকা ও কর্মচারী নিয়োগ বিধি মোতাবেক ০৯/১১/২০০৪ ইং তারিখে উক্ত শিক্ষককে উত্তর মিরপুর (প্রস্তাবিত) মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি বিগত ২০০৪ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সহকারি প্রধান শিক্ষক এর দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

কিন্তু তিনি কিভাবে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হলেন? উক্ত শিক্ষককে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর কি ভাবে ০২/১২/২০০৪ ইং তারিখে দৈনিক বাংলাদেশ বার্তা কুষ্টিয়া পত্রিকায় উক্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য আরো বেশ কয়েকজন সহকারী শিক্ষককে নিয়োগ প্রদানের জন্য শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়।

একজন সহকারি প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রদান কারী ব্যক্তি কিভাবে সহকারী শিক্ষক পদে এমপিওভুক্ত বেতন উত্তোলন করেন তা নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন উঠেছে।

এ বিষয়ে আনিসের সাথে কথা হলে তিনি বলেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া হয় । প্রধান শিক্ষক প্রবাসে থাকায় আমার এ বেতনের পিছনে কলকাঠি নেড়েছেন স্কুল ম্যানেজিং কমিটি। আমি এখানে নিতান্তই অসহায় আমি পরিস্থিতির শিকার মাত্র। সামনে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন আমি টিআর পদে দাঁড়ানোর কারণে আমার দিকে এই ধরনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।

এইদিকে দুর্নীতিবাজ ও আমেরিকার প্রবাসী প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলাম দুর্নীতি করেই থেমে থাকেননি চাকুরি পাওয়ার পর দীর্ঘ পাঁচ বছর আমেরিকার প্রবাসে থাকলেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছুটি দেওয়ার মালিক । তাদের কারণে আমি দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে থাকতে পেরেছি। ম্যানেজিং কমিটি আমার ছুটি মঞ্জুর না করলে আমি প্রবাসে থাকতে পারতাম না।

সরজমিনে গিয়ে তদন্ত করে জানা যায় ম্যানেজিং কমিটির কাছে অসুস্থতার কথা বলে একের পর এক দীর্ঘ পাঁচ বছর প্রবাসে থাকেন এই প্রধান শিক্ষক মনিরুল। অথচ সাংবাদিকদের কাছে প্রধান শিক্ষক মনিরুল বলেন অসুস্থতার কথা বলে ছুটি নিয়েছিলাম। আমেরিকাতে আমি দোকানে চাকুরি করতাম। সেখানে ঘন্টায় আমার বেতন ছিল ৭ ডলার ও আমার স্ত্রীর বেতন ছিল ১৯ ডলার নিউইয়র্কের বাসা থেকে পাতাল ট্রেনে চড়ে ৫০ কিলোমিটার দূরে কর্মস্থলে যোগদান করতাম । ট্রেনে যাওয়ার সময় কোথাও কোনো দিক তাকানো যেত না তাকালেই জরিমানা।

নিয়োগ সম্পর্কে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের সৎ উত্তর দিতে পারেননি প্রধান শিক্ষক মনিরুল । নানা ভাবে বিষয়টি এড?িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। গত ২৯/০৬/ ৯৭ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ । অথচ আপনি ১২/১১/১৯৯৮সালে সার্টিফিকেট পেলেন। কিভাবে এক বছর আগে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেলেন? নিয়োগের পাঁচ বছরের মাথায় কিভাবে প্রধান শিক্ষকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে যোগদান করলেন? এমন কর্মকাণ্ডে সার্টিফিকেট হাতে পাওয়ার আগেই দুর্নীতি করে চাকুরি নেওয়ায় জনমনে নানা প্রশ্ন উঠেছে।

এদিকে সার্টিফিকেট অর্জন করার এক বছর আগেই দুর্নীতি করে চাকুরী, অপরদিকে প্রবাসে পাড়ি জমানো, অন্যদিকে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে দুর্নীতি করে নিয়োগ, সবমিলিয়ে ধীরে ধীরে ওই বিদ্যালয়টি দুর্নীতির মহা উৎসবে মেতে উঠেছে। এ অবস্থায় ঐ বিদ্যালয়ের দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে না পারলে শিক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হবে বলে ধারণা করছেন অভিভাবকবৃন্দ।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো খবর...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর