রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৩৩ পূর্বাহ্ন

মুক্তিযোদ্ধাদের নানা অভিযোগ, ইউএনও বললেন বাজেট নাই

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৯৬ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম: শনিবার, ২৬ মার্চ, ২০২২, ১:৪৬ অপরাহ্ন

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় বিভিন্ন আয়োজনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করে উপজেলা প্রশাসন। স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে সকাল ৬টায় উপস্থিত হন উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা। উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান ও অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আব্দুল জব্বার।

মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে ফুল দেয়ার জন্য সকাল ৬টায় উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় থেকে আমরা উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে উপস্থিত হই। কিন্তু উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করা হয়েছে।

তারা বলেন, প্রচন্ড রোদের মধ্যে আমাদের বসার জায়গা করা হয়। পর্যাপ্ত ফ্যান ও সামিয়ানার ব্যবস্থা ছিল না। মুক্তিযোদ্ধাদের সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আলোচনা সভায় বসিয়ে রাখা হয়। উপজেলা প্রশাসনের অব্যবস্থাপনার কারণে অনেক মুক্তিযোদ্ধা দাঁড়িয়ে ছিল আর চেয়ারে বসেছিল সাধারণ মানুষ। তাছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরিয়ানির প্যাকেটে দেয়া হয় পাউরুটি ও বিস্কুট। ইউএনও নির্ধারিত সময় শুরুর আগেই স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়েছে। এছাড়া ফুল দেয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুগ্রুপের মধ্যে হট্টঘোলের সৃষ্টি হয়। সুন্দরভাবে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান উদযাপনে ব্যর্থ হয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বিষয়টি তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। একই সাথে তারা অনিয়মের সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গনি ও আবুল হোসেন বলেন, পূর্ব ঘোষিত স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য ভোর বেলায় আমরা উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে উপস্থিত হই। সকালে শহীদ মিনারে ফুল দিই। তারপর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করি। স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করা হয়েছে। তাদের সকাল থেকে রোদের মধ্যে বসিয়ে রাখা হয়েছে। প্রচন্ড রোদ ও গরমের মধ্যেও পর্যাপ্ত ফ্যান এবং সামিয়ানার ব্যবস্থা ছিল না। চেয়ার না পেয়ে অনেক মুক্তিযোদ্ধা দাঁড়িয়ে ছিলেন। আর খাবার দেওয়া হয়েছে পাউরুটি ও বিস্কুট। উপজেলা প্রশাসন ব্যাপক দুর্নীতি করেছেন। সরকার থেকে বাজেট থাকলেও তা আমাদের পেছনে খরচ করা হয়নি। মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান ও দুর্নীতিতে জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করছি।

মুক্তিযোদ্ধা হায়দার আলী বলেন,স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান উদযাপন নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা খাবার ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে নানান অভিযোগ করেছেন। মুক্তিযোদ্ধারা ভোর থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন। রোদে তাদের অনেক কষ্ট হয়েছে। আর বিরানির প্যাকেট দেওয়া হয়েছে বিস্কুট পাউরুটি ও বরই। আমি সে নাস্তা খাইনি, অন্য একজনকে দিয়ে দিয়েছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, অন্যান্যবার উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বড়বড় বেসরকারি কলকারখানা, ফ্যাক্টরি, প্রতিষ্ঠান ও ইটভাটা থেকে চাঁদা তুলে বিরানি অথবা ভালো খাবার দেওয়া হতো মুক্তিযোদ্ধাদের। এবার আগের মতো ভালো খাবার দেওয়া হয়নি। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ইউএনও নিজেই। মৌখিকভাবে আমি ভারপ্রাপ্ত উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকি। আজকের অনুষ্ঠানে প্রায় ৬০০ মুক্তিযোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ অস্বীকার করে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আব্দুল জব্বার বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ সঠিক নয়, বাজেট কম। আমার শক্তি ও সামর্থ্য অনুযায়ী আয়োজন করেছি। কারো কাছে থেকে কোনো কন্ট্রিবিউশান নেয়া হয়নি। সরকারিভাবে ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। সেই টাকা দিয়েই আয়োজন করা হয়েছে। আমি বাজেটের বাইরে যাবো কিভাবে? তারা কি চাই যে, আমি চাঁদাবাজি করি?

 


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো খবর...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর