এদিকে গত ৯ নভেম্বর আদালতে দাখিলকৃত ফাতেমার ময়নাতদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে ফাতেমাকে হত্যা করার আগে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে। দলবদ্ধ ধর্ষণের কারণেই তার যৌনাঙ্গের ভিতরে এবং বাইরে ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। ধর্ষণের পরই তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
কুষ্টিয়ার মিরপুরে নবম শ্রেণীর ছাত্রী উম্মে ফাতেমার (১৪) গণধর্ষণ ও নৃশংস হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহতের পরিবার। সংবাদ সম্মেলন থেকে চাঞ্চল্যকর ও লোমহর্ষক এই হত্যার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয় একজন আসামির পক্ষে কোনভাবেই গণধর্ষণ শেষে এমন নির্মম ও নৃশংস হত্যাকান্ড ঘটানো সম্ভব নয়।
পরিবারের অভিযোগ ময়নাতদন্ত রিপোর্টে গণধর্ষণের আলামত মিললেও পুলিশ কিছুতেই তাদের কথা আমলে নিচ্ছে না। রবিবার বেলা সাড়ে ১০টায় কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাবের এম এ রাজ্জাক মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ তোলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন স্কুলছাত্রী নিহত উম্মে ফাতেমার পিতা খন্দকার সাইফুল ইসলাম। এ সময় স্কুলছাত্রী নিহত ফাতেমার মা হালিমা খাতুন, দুই চাচা খন্দকার সোহল রানা ও খন্দকার মাহাফুজুর রহমান ও চাচী মোমেনা আফরোজ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ১৫ জুলাই সকালে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ভাঙা বটতলা এলাকায় একটি ভুট্টা ক্ষেত থেকে নবম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রী উম্মে ফাতেমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই পুলিশ মিরপুর পৌরসভার কুরিপোল মধ্যপাড়া এলাকার রংমিস্ত্রি মিলনের ছেলে ও আমলা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আপনকে গ্রেপ্তার করে।
পরের দিন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন গ্রেফতারকৃত আসামি আপন একাই ধর্ষণ শেষে স্কুল ছাত্রী ফাতেমাকে হত্যা করেছে।
পরে আদালতে আসামি আপন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন হত্যার পর পরিবারের পক্ষ থেকে ৪-৫ জনকে আসামি করার কথা বলা হলেও পুলিশ তা না করেই মাত্র একজনকে আসামি রেখে তাদের কাছ থেকে এজাহারে স্বাক্ষর করে নেয়। পরবর্তীতে তাদের পক্ষ থেকে একাধিকবার চাঞ্চল্যকর এই গণধর্ষণ ও হত্যাকান্ডের ঘটনা আসামি আপনের একার পক্ষে ঘটানো সম্ভব নয় বলে পুলিশের কাছে দাবি জানানা হয়।
এদিকে গত ৯ নভেম্বর আদালতে দাখিলকৃত ফাতেমার ময়নাতদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে ফাতেমাকে হত্যা করার আগে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে। দলবদ্ধ ধর্ষণের কারণেই তার যৌনাঙ্গের ভিতরে এবং বাইরে ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। ধর্ষণের পরই তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
ময়নাতদন্ত রিপোর্টে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের পক্ষ থেকে অবিলম্বে মামলাটি সিআইডি অথবা পিবিআইর হাতে ন্যস্ত করার দাবি জানানো হয়।
ধর্ষণ ও হত্যার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খায়রুল আলম জানান, এটি মেডিকেল রিপোর্ট। ডিএনএ রিপোর্ট আসার পরই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।