কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্প বাস্তায়নে ধীরগতি এবং অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একনেকের সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পরিকল্পনানমন্ত্রী এম এ মান্নান।
মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় এ নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
জানা গেছে, আলোচিত এই প্রকল্পের নাম, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন। ১১ বছর ধরে চলমান প্রকল্পটির সংশোধন প্রস্তাবে অনুমোদন না দিয়ে তদন্ত করে পরবর্তী একনেক সভায় প্রতিবেদন দিতে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, “কি কারণে প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি। এর আগেও ২০১৮ সালে এ প্রকল্পটি নিয়ে নির্দেশনা দিয়েছিলাম”। তিনি প্রকল্পের মেয়াদ এবং ব্যয় বাড়ানোর কারণ ও ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছিলেন।
জানা যায়, প্রকল্পটি অনুমোদনের সময় স্বাস্থ্য সচিব ও পরিকল্পনামন্ত্রীকে কোন কথা বলার সুযোগ দেননি প্রধানমন্ত্রী। সচিব প্রকল্পের বিস্তারিত বলতে গেলে প্রধানমন্ত্রী থামিয়ে দিয়ে বলেন, নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে না পারার পেছনে কারা কারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে বিভাগীয় পর্যায়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এই প্রকল্পের মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ২৭৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। বাস্তবায়ন মেয়াদ ছিল জানুয়ারি ২০১২ থেকে ডিসেম্বর ২০১৪ সাল পর্যন্ত। কিন্তু গত আট বছরে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে পারেনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রকল্পটি প্রথম অনুমোদনের পর দুই দফা মেয়াদ বাড়িয়ে বাস্তবায়ন মেয়াদ ২০১৬ সাল পর্যন্ত করা হয়।
এর পর প্রথম সংশোধন করা হয়। প্রথম সংশোধনীর পরও প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়িয়ে ডিসেম্বর ২০২০ সাল পর্যন্ত করা হয়। মঙ্গলবার দ্বিতীয় সংশোধনের জন্য একনেক সভায় উপস্থাপন করা হলে প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পটি ফিরিয়ে দেন। গত আট বছরে প্রকল্পটির ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৮২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
প্রস্তাবনায় দেখা যায়, চিকিৎসা শিক্ষার জন্য অবকাঠামো নির্মাণ করা, চিকিৎসক তৈরির মাধ্যমে চিকিৎসক এবং জনসাধারণের আনুপাতিক হার যৌক্তিক করা, চিকিৎসা শিক্ষাকে বিকেন্দ্রীকরণ করা, প্রান্তিক জেলায় তৃণমূল জনসাধারণ পর্যায়ে চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করা, চিকিৎসা শিক্ষার চাহিদা পূরণ করা, হাসপাতালকে ক্লিনিক্যাল এবং ব্যবহারিক পরীক্ষাগার হিসেবে মেডিকেল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য উপযোগী করা, কুষ্টিয়া ও তার পার্শ্ববর্তী জেলার জনগণের জন্য আধুনিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করা, উপযুক্ত এবং আধুনিক চিকিৎসা সুবিধার উপযোগী পরিকাঠামো তৈরি করা, বিশেষ পরিষেবা প্রদানের মাধ্যমে বিনামূল্যে কার্যকর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা, শিশু এবং মাতৃ-মৃত্যুর হার হ্রাস নিশ্চিত করা, চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে মানুষের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি করা এবং ডাক্তার এবং অন্যান্য পেশার জনগণের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করার জন্যই গ্রহণ করা হয়েছিলো প্রকল্পটি।