খোকসা উপজেলা প্রতিষ্ঠার ৩৮ বছরে পানির স্তর এতো নিচে নামেনি কখনোই। উপজেলার অধিকাংশ অগভীর নলকূপে এখন পানি নেই। সরেজমিনে পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সবখানেই বিশুদ্ধ পানির ব্যাপক সংকট।
চরপাড়া মুদি দোকানদার ফারুক হোসেন কুষ্টিয়ার সময়কে বলেন, বারো বছর আগে বাড়িতে একটি টিউবওয়েল দিয়েছিলাম। ওই টিউবওয়েলের পানি দিয়ে আমাদের খাওয়া-দাওয়াসহ গৃহস্থালির সব কাজ করতাম। এখন আর টিউবওয়েলে পানি ওঠে না। টিউবওয়েল মিস্ত্রী চেক করে এসে বলেছে, পানির লেয়ার নিচে নেমে যাওয়ায় টিউবওয়েলে পানি উঠবে না। বাধ্য হয়েই গত সপ্তাহে দোকানের মাল না তুলে সাবমার্সিবল পাম্প কিনে এনে গভীর নলকূপের মাধ্যমে বাড়িতে পানির ব্যবস্থা করেছি।
কমলাপুর হিন্দুপাড়া গিয়ে একই চিত্র চোখে পড়ল। প্রায় ৩৫ পরিবারের বসবাস। প্রতিটি বাড়িতেই ছিল টিউবওয়েল। কিন্তু পার্শ্ববর্তী গড়াই নদীর পানির স্তর একেবারে নিচে নেমে যাওয়ায় এসব টিউবওয়েলে পানি ওঠছে না। ভুক্তভোগীরা জানান, এলাকার সব টিউবওয়েলে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। যা পান করার যোগ্য নয়।
খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে ৬ টি টিউবওয়েল থাকলেও অধিকাংশ টিউবওয়েল থেকে পানি ওঠছে না। উপজেলা পরিষদের মাঝেও ছিল বেশকিছু টিউবওয়েল। যার অধিকাংশ অকেজো হয়ে পড়ে আছে। সম্প্রতি উপজেলা পরিষদের স্ব-স্ব দপ্তর নিজস্ব উদ্যোগে গভীর নলকূপ স্থাপন করে সাবমার্সিবল পাম্পের মাধ্যমে পানি ও জলের চাহিদা মেটাচ্ছেন।
জানিপুর পৌর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ হার্ডওয়ারের দোকানে গভীর নলকূপ বসিয়ে সাবমার্সিবল পাম্প কেনার হিড়িক পড়ে গেছে। এতে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর আরও নিচে নেমে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় ভূ-প্রকৌশলীরা।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যে জানা যায়, দীর্ঘ আট মাস বৃষ্টি না হওয়ায় পার্শ্ববর্তী পদ্মা ও গড়াই নদীর পানির স্তর নেমে গেছে। গভীর নলকূপের মাটির নিচ থেকে পানি উত্তোলন করায় অগভীর এ সকল টিউবওয়েল লেয়ার পাচ্ছে না।
যদিও জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. সুমন আলীর দাবি, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে উপজেলায় অগভীর নলকূপ স্থাপন করা হয় ১৩৪টি, গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয় একশটি। যার অধিকাংশই সচল রয়েছে।