পরিবার মেনে নেয়নি প্রেম-পরিণয়। বাধ্য হয়ে পালিয়ে বিয়ে করেছিলেন কুমারখালীর হাসান আলী ও তার নাবালিকা প্রেমিকা। কিন্তু বিয়ের ৬ মাস যেতে না যেতেই শুরু হয় বিপত্তি! ডিভোর্সের জেরে ৬ মাসেই ভেঙে যায় হাসানের সুখের সংসার। কিন্তু ৬ মাসেও শুকায়নি পালিয়ে বিয়ে করা সে পরিণয়ের ক্ষত। ডিভোর্স হয়েছে তাতে কী, ভালোবাসার আবেগে সাবেক স্ত্রীকে নিয়ে টিকটক ভিডিও বানিয়ে ফেলেন একুশ শতকের মজনু- হাসান আলী। আর তা শেয়ার দেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। আর চূড়ান্ত বিপত্তিটার সূচনা এখানেই। ঘটনাটি কুষ্টিয়ার কুমারখালীর আলাউদ্দিন নগর বাজারের।
এ নিয়ে দুই পরিবারের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৪ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার নন্দনালপুর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন নগর বাজারে ঘটে এমন তুঘলকি কাণ্ড। পরে আলাউদ্দিন নগরের পল্লীবালা শপিং কমপ্লেক্স ও শিক্ষাপল্লী মঞ্চ ভাংচুর করেন স্বামী পক্ষের লোকজন।
পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতরা হলেন- বউয়ের চাচা মিলন ও নানা শাহাবুদ্দিন এবং স্বামীর দুই ভাই সাব্বির ও হোসাইন। আহতদের কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, নন্দনালপুর ইউনিয়নের চকরঘুয়া গ্রামের রেলপাড়ার হিদায়েতের দশম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ের সাথে একই ইউনিয়নের পুটিয়া রেলপাড়া এলাকার আব্দুল খালেকের দশম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে হাসান আলীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে পালিয়ে বিয়ে করেন নাবালক এই জুটি।
তবে, পরে দুই পরিবারই তাদের বিয়ে মেনে নেন। কিন্তু বিয়ের ৬ মাসের মাথায় পারিবারিক কলহের জের ধরে পারিবারিকভাবে ডিভোর্স হয় তাদের। ডিভোর্সের ৬ মাস পরেও সাবেক বউকে নিয়ে নিয়মিত টিকটক তৈরি করে হাসান। আবার সেটি ফেসবুকেও শেয়ার দেয়। বিষয়টি মেয়ের পরিবারের নজরে আসলে ছেলের পরিবারকে সতর্ক করা হয়। বারবার সতর্ক করার পরও হাসান আলী সাবেক বউকে নিয়ে টিকটক বানিয়ে ফেসবুকে শেয়ার করলে দুই পরিবারের সমর্থকদের (আত্মীয়) মাঝে মঙ্গলবার আলাউদ্দিন নগর বাজার এলাকায় কথা কাটাকাটি হয়। পরে তা রুপ নেয় সংঘর্ষে।
এ সময় স্বামী হাসান আলীর আত্মীয়রা আলাউদ্দিন নগর পল্লীবালা শপিং কমপ্লেক্স ও শিক্ষা পল্লীমঞ্চে ভাংচুর চালায়। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৪ জন আহত হলে স্বজনরা উদ্ধার করে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এ বিষয়ে মেয়ের আহত চাচা মিলন বলেন, ভাতিজিকে ভালোবেসে পালিয়ে বিয়ে করেছিল হাসান। কিন্তু ৬ মাসের মাথায় ডিভোর্স হয়ে যায় ওদের। তারপরও এমন কাণ্ড ঘটালে আমরা সতর্ক করতে গেলে আমাদের পিটিয়ে আহত করে।
হাসানের বড় ভাই সাব্বির বলেন, হাসান আমার ছোট। আমার আগেই বিয়ে করায় ওর সাথে কথা বলি না আমি। আজ বিকেলে শুনলাম বাবাকে মেয়ে পক্ষের লোকজন মারছে। খবর পেয়ে সেখানে গেলে ওরা আমাকে ও আমার ছোট ভাই হোসাইনকে রড ও হকিস্টিক দিয়ে মারপিট করে।
তবে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, ফেসবুকে তালাকপ্রাপ্ত বউকে নিয়ে টিকটক শেয়ার করায় দুই পরিবারের সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিব।