কুষ্টিয়ার সাংবাদিকতার ঐতিহ্যে পচন ধরেছে আগেই। এখন দুর্গন্ধ বাতাসে ছড়াচ্ছে। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন ও রাষ্ট্রীয় বৈষম্য বেপরোয়া হলে চতুর্থ স্তম্ভের প্রতীকী খেতাব পাওয়া জাতির বিবেক হরিজনে পরিণত হয়। কাঙাল হরিনাথের আর্থিক অনটন কুষ্টিয়ার সংবাদকর্মীদের দামী বাইক ও গাড়ির ধোঁয়ায় ভেসে গেছে। দ্রুত নাদুস-নুদুস হওয়ার অসম প্রতিযোগিতার কাছে হেরে যাচ্ছে পেশাদারিত্ব।
গলির মাদক বিক্রেতা যেভাবে নেতা হয়েছে, সেভাবে সাংবাদিকতার কার্ড ঝুলিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কিছু দায়হীন হলদেটে দাঁতের মানুষ।
কুষ্টিয়াতে এখনও সময়ের সেরা প্রতিভাবান তরুণেরা সাংবাদিকতা করে। প্রবীণদের মধ্যেও রয়েছেন সর্বজন স্বীকৃত, শ্রদ্ধা ও সম্মানের অতলস্পর্শী নির্মহ সাংবাদিক।
কুষ্টিয়ার মাটির নির্যাস থেকে বেড়ে ওঠা প্রজন্ম দেশের মূলধারার সাংবাদিকতায় দেশে-বিদেশে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। সংস্কৃতির জনপদের এ জেলা আজ শিক্ষা, সাংবাদিকতায় বিশেষ গৌরব অর্জনের পথে। অথচ এ রকম একটি সময়ে সেখানকার সাংবাদিকরা দ্বিধা-বিভক্ত, পেশার বাইরে, ব্যক্তিগত বিষয় নিয়েও কাঁদা ছুড়াছুড়ি করছেন। হাতে গোনা কয়েকজনের কারণে দীর্ঘদিনের অর্জন লজ্জায় ডুবতে বসেছে।
তিল থেকে তাল হওয়ার পথে যে তুচ্ছ ঘটনায় তোলপাড়, তা যেন তৃতীয় পক্ষের মোক্ষম সুযোগ তৈরি করে না দেয়! চরমপন্থী অধ্যুষিত এ জেলার সাংবাদিকদের প্রতি রাজনীতিবিদ-প্রশাসনের অনেকেরই ক্ষোভ আছে। সমস্যা সমাধানে উগ্রপন্থা কারও কাম্য না, পেশাগত উৎকর্ষতা বরাবরই মেধা ও পরিশ্রমের উপরই নির্ভর করে। নিজেদের মধ্যে কামড়া-কামড়ি করে চোর-বাটপার আর কমিশনভোগীদের কাছে হাসির পাত্র হওয়ার দরকার নেই।
সুহৃদ সাংবাদিক ভায়েরা, চলমান এ সংকট দূর করুন। রেষারেষি ভুলে কাজে মনোযোগ দিন। শক্তি দেখানো অথবা বিচার চাওয়া কোনটাই আমাদের জন্য সুখকর নয়, নিশ্চয়ই আপনাদের ভালোটা বুঝতে ভুল করবেন না।
লেখক : সম্পাদক, দৈনিক সময়ের কাগজ এবং নির্বাহী সদস্য, কুষ্টিয়া সাংবাদিক ফোরাম ঢাকা।