কুষ্টিয়ায় এনআইডির জালিয়াতির ঘটনায় এক উপসচিবসহ পাঁচজন নির্বাচনি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত বছর জালিয়াতির মাধ্যমে ৬ জনের এনআইডি পরিবর্তন করে কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর গেট এলাকার কয়েক কোটি টাকা মূল্যের ১৭ কাঠা জমি আত্মসাৎ করার চেষ্টা করে একটি চক্র। ওই সময় জমির মালিক ওয়াদুদ কুষ্টিয়া মডেল থানায় ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০/১২ জনের নামে মামলা দায়ের করেন।
এদিকে এনআইডি জালিয়াতির ঘটনায় নির্বাচন অফিস থেকে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হয়। তদন্তের সত্যতা মেলায় গেল ৪ মার্চ কুষ্টিয়া মডেল থানায় এই মামলা করেন জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জাবিদ হাসান বলেন, এতে আসামি করা হয়েছে, ঢাকার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব নওয়াবুল ইসলাম, ফরিদপুরের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান, মাগুরা সদরের উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অমিত কুমার দাস, কুষ্টিয়া নির্বাচন অফিস সহকারী জিএম সাদিক সত্যবাদী।
একই দিনে অন্য একটি মামলা হয়েছে কুমারখালী থানায়। এতে আসামি করা হয়েছে কুষ্টিয়া সদরের নির্বাচন কর্মকর্তা সামিউল ইসলাম। ঘটনার সময় তিনি কুমারখালী উপজেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা ছিলেন।
এসব মামলায় দণ্ড বিধির ৪২০, ৪৬৮/১০৯ ধারা ছাড়াও ২০১০ সালের ভোটার তালিকা আইন এবং ডিজিটাল নির্বাচন আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কুষ্টিয়া শহরের এন এস রোডে ওয়াদুদ ও তার পরিবারের এনআইডি কার্ড জালিয়াতি করে শত কোটি টাকার সম্পত্তি বিক্রি করে দেয় একটি জালিয়াতি চক্র। এ ঘটনায় কুষ্টিয়াসহ সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়।
পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসতে থাকে জালিয়াতি চক্রের মুল হোতাদের নাম। এনআইডি জালিয়াতি করে শতকোটি টাকার জমি দখলের মুলহোতা বড় বাজারের হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী মহিবুল এবং যুবলীগ নেতা আশরাফুজ্জামান সুজনসহ ৭জন গ্রেফতার হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলার বিচার চলছে। বাকিরা এখনও পলাতক।
শতকোটি টাকার জমি দখল ও এনআইডি জালিয়াতি চক্রের পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করেন এসব কর্মকর্তা। তদন্তে প্রমাণ পাওয়ায় এখন তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলে জানায় বাদী জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান।