বুধবার রাতে হয়ে গেল দৌলতপুর সাংবাদিক ফোরাম, কুষ্টিয়ার আয়োজনে ‘বর্তমান এবং আগামীর দৌলতপুর, গণমানুষের গণমাধ্যম’ শীর্ষক মতবিনিময় অনুষ্ঠান। সন্ধ্যা ৭টা থেকে শুরু হয়ে রাত ১১টা পর্যন্ত টানা চার ঘণ্টাব্যাপী চলা এই মতবিনিময়ে অংশ নেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নীতিনির্ধারক ও সামাজিক ব্যক্তিবর্গ।
এতে আলোচনা হয়, কেমন আছে বর্তমান দৌলতপুর এবং কেমন হবে আগামীর দৌলতপুর। পাশাপাশি গণমাধ্যম প্রেক্ষাপট নিয়ে বিস্তর আলোচনা করেন অতিথিরা। দৌলতপুর সাংবাদিক ফোরাম, কুষ্টিয়ার আহ্বায়ক, দেশে বেসরকারি রেডিও ও টেলিভিশন সংবাদ উপস্থাপকদের সংগঠন এনবিএ’র আজীবন সদস্য সাবেক মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশন সেক্রেটারি, কুষ্টিয়া সাংবাদিক ফোরাম ঢাকার সদস্য, সাবেক নির্বাহী সদস্য, মাছরাঙা টেলিভিশনের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি তাশরিক সঞ্চয়ের সঞ্চালনায় এতে প্রধান আলোচক ছিলেন, কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের সংসদ সদস্য, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আঃ কাঃ মঃ সরওয়ার জাহান বাদশাহ্।
বিশেষ আলোচক ছিলেন- দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার, দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আব্দুল হান্নান, কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, দৌলতপুর জোনাল অফিসে নিযুক্ত ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মির্জা কে ই তুহিন, কুষ্টিয়া জেলা পরিষদ সদস্য হুমায়ুন কবির, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাক্কির আহমেদ, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম।
স্বাগত আলোচক ছিলেন, দৌলতপুর সাংবাদিক ফোরামের সদস্য সচিব, দৌলতপুর প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক, ভোরের কাগজ প্রতিনিধি এস আর সেলিম। আলোচনায় অংশ নেন- সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম গেদু, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা সমাজ ও সাংস্কৃতিক কর্মী ওয়াসিম কবিরাজ, সাবেক ছাত্র নেতা মোমিনুর রহমান, তরুণ ইউপি সদস্য রিপন মণ্ডল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠক তাশফীন আব্দুল্লাহ এবং দৈনিক আজকের পত্রিকার দৌলতপুর প্রতিনিধি, দৌলতপুর সাংবাদিক ফোরামের অন্যতম সদস্য তামিম আদনান। এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় অপেশাদার সাংবাদিকতা, অখ্যাত গণমাধ্যমের কার্ড নিয়ে তার নিয়মিত অপব্যবহার আর না জেনে না বুঝে কাজ করার ব্যপক বিস্তার ঘটেছে, তার নেতিবাচক প্রভাব প্রতিনিয়ত সমাজে পড়ছে বলে আলোচকদের বক্তব্যে উঠে আসে।
বক্তারা বলেন, পাঠকের চাহিদার দিকেও খেয়াল রাখে না অনেকে, পাঠক হিসাবে তারা আরও বস্তুনিষ্ঠ ও পেশাদার খবর প্রত্যাশা করেন সকল গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে। অনেকেই ভুলভাল বাক্য, ভুলে ভরা বানান আর মনগড়া কথা লিখে খবরের আদলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়ে থাকেন বলেও মত আসে। বক্তারা বলেন, গণমাধ্যম আর স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যে এসব অভিযোগ একচেটিয়া নয়, অনেক গণমাধ্যম এবং সংবাদকর্মী আছেন, যারা পেশাদার ভাবেই জেলা-উপজেলায় কাজ করছেন।
মতবিনিময়ে কথা ওঠে, বর্তমান সরকারের চলতি মেয়াদে উপজেলার চরাঞ্চলের চারটি ইউনিয়নে শতভাগ বিদ্যুৎ ও রাস্তার কাজ শুরু হওয়ায় আর্থসামাজিক ও বাণিজ্যিক উন্নয়ন ঘটেছে ব্যাপক, উপজেলাব্যাপী অভাবনীয় ও রেকর্ড পরিমাণ উন্নয়ন ঘটেছে সড়ক যোগাযোগ ও শিক্ষা খাতে। দৌলতপুরে শিক্ষা-সড়কে অবকাঠামো এখন যে কারোর চোখে পড়ার মতো। ডিজিটালাইজেশন ক্রমেই বাড়ছে উপজেলাটিতে এবং মানুষ অভ্যস্ত হচ্ছে বলেও মত দেন বক্তারা।
আগামীর দৌলতপুরে নদী ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় সকল এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ, উপজেলাজুড়ে কৃষি গবেষণা ও উন্নয়ন বেগবান, অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থায় আরও উন্নয়ন, স্থলবন্দর বাস্তবায়নের জোর চেষ্টা অব্যহত রাখা, ফায়ার সার্ভিস বাস্তবায়ন হওয়া, সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে আরও বেগবান করার পাশাপাশি দৌলতপুরের সাংবাদিকদের আরও বেশি ঐক্য এবং আরও বেশি পেশাদারিত্ব বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হয়। পরে নৈশভোজের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় অনুষ্ঠানটি। অনুষ্ঠানস্থলকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। এমন গুরুত্বপূর্ণ ও মনোমুগ্ধকর আয়োজন যেন ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত রাখে দৌলতপুর সাংবাদিক ফোরাম, সে প্রসঙ্গে উৎসাহ জানান উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা।