বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন

‌আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে: কুমারখালীর কুয়েট শিক্ষক সেলিমের বাবা

এনামুল হক ইমন / ১১৫৭ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম: শুক্রবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০০ অপরাহ্ন

‘আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে, আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি’- কুষ্টিয়ার কুমারখালীর বাঁশগ্রামের শুকুর আলীর ছেলে কুয়েটের অধ্যাপক সেলিম হোসেনের মৃত্যুতে তার বাবা আহাজারি করে কথা গুলো বলেন। এ সময় সেলিম হোসেনের শোকার্ত দু’বোন বাবার পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন এবং সেলিম হোসেনের সহপাঠীদের উদ্যোগে দোষীদের বিচারের দাবিতে বাঁশগ্রাম বাজারে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সেলিমের বাবা শুকুর আলী বলেন, তার অত্যন্ত মেধাবী ছেলে সেলিম ২০০০ সালে এসএসসি পাশ করার পর পর্যায়ক্রমে উল্লেখযোগ্য রেজাল্ট করে এবং ২০১০ সালে কুয়েটে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ছেলেকে লেখাপড়া করানোর জন্য নিজের সর্বস্ব বিক্রি করে দেন। বর্তমানে ছেলের পাঠানো টাকায় তার সংসার চলে। ২০১১ সালে তিনি স্ত্রীকে হারিয়েছেন।

তিনি আরো জানান, বর্তমানে তিনি শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ। তার সোনার মতো ছেলে সেলিম পুরো সংসারের সকলের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলো। তিনি আরো বলেন তার ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে তিনি মামলা করবেন। তার ছেলের ৬ বছর তিন মাসের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তার ছেলের বউ চুয়াডাঙ্গা বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন বলে জানান তিনি।

সেলিমের বন্ধু বাঁশগ্রাম বহুমুখী বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক রুপকুমার জানান, সেলিম ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছিলো তার এই অকাল মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তাকে মানষিকভাবে নির্যাতন করে যারা মেরে ফেলেছে তাদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেছেন তারা।

তিনি বলেন সেলিমের এসএসসির বন্ধু আমরা যারা আছি সকলে মিলে এই মানববন্ধনের উদ্যোগ নিয়েছি। দোষীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালিত হবে বলে জানান তিনি।

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক সেলিম হোসেন (৩৮) বিশ্ববিদ্যালয়টির লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষের দায়িত্বেও ছিলেন। ক্যাম্পাস থেকে বাসায় ফিরে গত মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে তিনি মারা যান। বুধবার সকাল ১০টায় গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালীর বাঁশগ্রামে তাঁকে দাফন করা হয়।

মারা যাওয়ার আগে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁকে মানসিক নিপীড়ন করেছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকেরা একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রয়েছেন। পালন করছেন নানা কর্মসূচি। অধ্যাপক সেলিমের বিভাগের শিক্ষার্থীরা তার মৃত্যুতে গভীর শোকাহত। তারাও বৃহস্পতিবার বিকেলে শোক র‌্যালি ও প্রতিবাদ সভা করেছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো খবর...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর