কুষ্টিয়ার কুমারখালী-খোকসা উপজেলার অধিকাংশ সরকারি ওয়েবসাইটে নেই হালনাগাদ তথ্য। দীর্ঘদিন ধরে এসব ওয়েবসাইট আপডেট করা হয় না। এসব ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সরকারি অনেক সুবিধাই পাচ্ছেনা সেবা ও তথ্য প্রত্যাশীরা। অথচ ডিজিটাল ব্যবস্থার সুফল নিয়ে দেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে সরকারের প্রচারণার কমতি নেই। এদিকে এই দুই উপজেলার বিভিন্ন সরকারি ওয়েবসাইটে সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের সম্প্রতি কোনো তথ্য তেমন একটা চোখে পড়ে না। হালনাগাদ করা হয় না এসব ওয়েবসাইটের তথ্য ফলে ডিজিটাল বাংলাদেশে ঘরে বসে সহজেই তথ্যপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কুমারখালী-খোকসাবাসী।
কুমারখালী উপজেলার সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অপশনে প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল, মাদরাসা ও কলেজের কোনো তথ্য নেই। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরির অপশনে মসজিদ, ইদগাহ, কবরস্থানের ইউনিয়ন ভিত্তিক নাম উল্লেখ থাকলেও সংস্থা সংগঠন ক্যাটাগরির অপশনে গিয়ে দেখা যাই ৪টি ক্যাটাগরি রয়েছে। এগুলোতে একই ধরনের লেখা দিয়ে সাজানো হয়েছে সাইটটি। পৌরসভা ক্যাটাগরির অপশনে গেলে দেখা যাই কাউন্সিলরবৃন্দদের লিস্টটা সুন্দর করে সাজানো থাকলেও কারোরই নাম ঠিকানা নেই। এছাড়াও মেয়র কার্যালয়ের সাইটটি ব্লক করা।
তাছাড়া দপ্তরের কার্যক্রম, গুরুত্বপূর্ণ নোটিশ, কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের তথ্য, বিভিন্ন সভার কার্যবিবরণী, উন্নয়ন প্রকল্পের তথ্য নেই অধিকাংশ ওয়েবসাইটে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, উপজেলা প্রশাসন, একটি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়নের সরকারি অর্ধশতাধিক ওয়েবসাইটই রয়েছে। এসব ওয়েবসাইটের অধিকাংশেরই হালনাগাদ নেই। উপজেলার সরকারি প্রতিটি দপ্তর বিভাগ ও অধীন উপ-দপ্তরসহ সব দপ্তরের ওয়েবসাইট থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু কোথাও হালনাগাদ তথ্য নেই।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্প এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে সারাদেশের জেলা, উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ের সরকারি দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের সমন্বয়ে জাতীয় তথ্য বাতায়নের আওতায় আলাদা আলাদা ওয়েব পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে। যাতে করে সাধারণ নাগরিকরা ঘরে বসেই নিজ নিজ এলাকার প্রয়োজনীয় তথ্য ও সেবা অনলাইনে পেতে পারে।
কিন্তু কুমারখালী উপজেলার সরকারি পোর্টালগুলোতে সরকারের উন্নয়নকর্মকান্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য অনলাইনে না পাওয়াকে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার অন্তরায়। এ সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতা ও তদারকির অভাবকে দায়ী করেছেন এ দুই উপজেলার সচেতন মহল।
ঢাকা প্রকাশের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক কাজী সাইফুল বলেন, সংবাদ তৈরির কাজে প্রায় সময়ই বিভিন্ন তথ্যের প্রয়োজন হয়। উপজেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন সরকারি ওয়েবসাইটে কোনো হালনাগাদ তথ্যই পাওয়া যায় না। আবার এসবী ওয়েবসাইটে যে তথ্য দেওয়া থাকে সে তথ্যেও রয়েছে বেশ ভুল। এগুলো সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতা ও তদারকির অভাব ছাড়া আর কিছুই না।
কুষ্টিয়ার সহকারী প্রোগ্রামার আলিমুজ্জামান খান বলেন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে আইডি ও পাসওয়ার্ড দেওয়া আছে তথ্য হালনাগাদের জন্য তারা যদি তথ্য হালনাগাদ না করে থাকে তাহলে তাদেরকে জানোনা হবে।
এ ব্যাপারে খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন বিশ্বাস বলেন, এ ব্যাপারে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানকে জানিয়েছি এবং মাসিক মিটিংয়ে তাদেরকে বলেছি খুব শিগগিরই ওয়েবসাইটগুলোতে তথ্য হালনাগাদ করা হবে।
এ ব্যাপারে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মন্ডল বলেন, এ বিষয়ে সকল প্রতিষ্ঠানে চিঠি দিয়েছি ওয়েবসাইটের তথ্য হালনাগাদ করার জন্য। এখন তথ্য হালনাগাদের কাজ চলমান রয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে তথ্যগুলো হালনাগাদের কাজ শেষ হবে।