শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৫৮ পূর্বাহ্ন

হাজারো মামলার আতঙ্ক নিয়ে নামমাত্র কর্মসূচিতে দৌলতপুর বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক / ১০৫ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম: রবিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২২, ৩:৫৫ অপরাহ্ন

অন্তত তিন হাজার নেতাকর্মীর নামে দু’হাজারের বেশি মামলা। এসব মামলা রাজনৈতিক হিসাবের এবং অধিকাংশ বিতর্কিত, এমন দাবি কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের বিএনপি নেতাকর্মীদের। নাশকতার চেষ্টা, নাশকতা, নাশকতার পরিকল্পনা এসব বিভিন্ন নামে হওয়া এসব মামলার বাদি পুলিশ, বিবাদীরা প্রত্যেকেই দেশের অন্যতম রাজনৈতিক সংগঠন বিএনপি বা বিএনপি’র সহযোগী সংগঠনের নেতা কিংবা কর্মী।

গেল এক দশকের বিভিন্ন সময়ে হওয়া এসব মামলা থেকে অনেকেই আইনি প্রক্রিয়ায় নিরাপরাধও প্রমাণিত হয়েছেন। এই রাজনৈতিক দলটির দৌলতপুরের নেতাকর্মীদের দিনের চলাচল আর রাতের ঘুম সবই নাকি হারিয়ে গেছে এখন প্রায়! সম্প্রতি নাশকতার পরিকল্পনাকারী হিসাবে অভিযুক্ত এক শিক্ষার্থী নিরাপরাধ হিসাবে একটি মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর জানান, মামলাগুলোর অধিকাংশই আজগুবি এবং বানানো অভিযোগের। আরেকদিকে, নামমাত্র ফটোসেশনের কর্মসূচী করে সমর্থকদের বিভ্রান্ত করার অভিযোগ উঠেছে দৌলতপুর উপজেলা বিএনপি’র নামে। জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দলের অবস্থান না পেলেও দেশে এখনও দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসাবে পরিচিত বিএনপি।

উপজেলা বিএনপি’র অন্যতম নেতা আব্দুল লতিফ বলেন, আমার নামেই ৮টি মামলা আছে। দৌলতপুরে অন্তত দেড় থেকে দুই হাজার এমন রাজনৈতিক মামলার সংখ্যা। যারা (বিএনপি দলীয় লোক) লেয়াজু করে চলে তারা এসব মামলা থেকে রেহায় পায়। সাধারণত উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাদের অভিযুক্ত করে এধরণের মামলা দেয়া হচ্ছে।

দৌলতপুর উপজেলা যুবদল নেতা বাচ্চু বলেন, আমার নামে যে মামলা সেখানে ১ শ ২৫ জন দলীয় ছেলেকে আসামি করা হয়েছে। বক্তব্যে, লেয়াজু করে মামলা থেকে রক্ষা পেয়ে চলার বিষয়ে অভিযোগও তোলেন তিনি। আরও বলেন, পুলিশ যেভাবে সাজায় সেভাবেই মামলা হয়।

উপজেলা বিএনপি’র শীর্ষ নেতা সাবেক সংসদ সদস্য রেজা আহাম্মেদ বাচ্চু মোল্লা বলেন, নাশকতার মামলা ২০১৮ সাল থেকে শুরু হয়েছে, অনেক নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছে। বাড়িতে ছাড়া সাংগঠনিক কোন প্রোগ্রাম করতে পারিনা। বাড়িতে প্রোগ্রাম করি, তা-ও কতজন পর্যন্ত এখানে আসবে সেটা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। পুলিশ বাদী হয়ে মামালা দেয়। নেতাকর্মীরা এসব ভূয়া মামলা আর হামলার ভয় করেনা। তবে গণতন্ত্র চর্চায় এসবে বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতাকর্মী জানিয়েছে, বিএনপি গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত সংগঠিত হচ্ছে। কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন নির্দেশনা বাস্তবায়নের চাপ আছে। কর্মীরা হতাশায় থাকলেও দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচীতে অংশ নিতে হচ্ছে তাদের। তবে, বিএনপি চেয়ারপার্সনের মুক্তি এবং প্রত্যাশা মতো নির্বাচন বাস্তবায়ন করতে যে কোনো কিছুর জন্য প্রস্তুত তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা এমনটাই আভাস দিচ্ছেন তারা। পাশাপাশি নিশ্চিত করছেন, অনেকেই চক্ষু লজ্জার খাতিরে বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন, অনেকেই পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছেন।

এদিকে দেখা গেছে, দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবি পাঠানোর জন্য নামমাত্র ফটোসেশনের নানা কর্মসূচী বাস্তবায়ণের হিড়িক পড়েছে দৌলতপুরে। নিজেদের অভ্যন্তরিণ গ্রুপিংও বেশ প্রকাশ্য। পাশাপাশি রাজনৈতিক ভাবে সুসংগঠিত হয়ে নানা কর্মসূচী সফল বাস্তবায়নে তৎপর দলটির উপজেলা পর্যায়ের নেতারা। যার প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক আসন্ন সময়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি প্রসঙ্গে শঙ্কা আছে সাধারণের মধ্যে।

এদিকে, এক প্রশ্নের জবাবে দৌলতপুর থানার ওসি জাবিদ হাসান বলেন, দৌলতপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে আগামীর সময়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির কোন সুযোগ নেই।

বিএনপি’র রাজনৈতিক সমর্থক অনেক সাধারণ মানুষ আহ্বান জানান, রাজনৈতিক উদ্যেশ্য হাসিলের জন্য নেতারা যেন কর্মীদের অপব্যবহার করে ঝুঁকিতে না ফেলে। দীর্ঘ বছরের শক্ত আন্দোলনের হুশিয়ারি লাগাতার বিফলে যাওয়ায় দলটির ওপর থেকে কর্মী- সমর্কদের আস্থা হারানোরও খবর পাওয়া গেছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো খবর...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর