কুষ্টিয়ার কুমারখালী দয়ারামপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও ২০ নং দয়ারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠটি দেখলে মনে হবে, বন্যায় প্লাবিত এলাকা অথবা কোনো জলাশয়। সেই জলাশয়ের সাথেই দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সেখানে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। জলাবদ্ধ জায়গাটি বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ। তবে সেখানে খেলাধুলার সুযোগ নেই। সেখানে জলকেলি করে হাঁসের দল। বছরে প্রায় তিন চার মাস খেলাধুলা থেকে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত থাকলেও নজর নেই কর্তৃপক্ষের।
উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের দয়ারামপুর গ্রামে একই সাথে অবস্থিত দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ। দুই মাস ধরে পানির নিচে থাকায় স্কুল খুললেও খেলাধুলা ও প্রতিদিনের সমাবেশ (অ্যাসেম্বলি) থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
রোববার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়টির পুরো মাঠ পানিতে থইথই করছে। অনেক ছাত্র তাদের প্যান্ট হাঁটু পর্যন্ত গুটিয়ে শ্রেণিকক্ষে যাওয়া-আসা করছে। শ্রেণিকক্ষে যাওয়া-আসার সময় ছাত্রীদের কাপড় ভিজে যাচ্ছে। ভেজা কাপড়ে অস্বস্তিতে ক্লাসে বসে থাকতে হয় তাদের । কয়েকজন শিক্ষক জানান, এতে একদিকে শিক্ষার্থীরা ক্লাসের পড়ালেখায় মনোযোগ দিতে পারে না, অন্যদিকে দিনের পর দিন এভাবে ভেজার কারণে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে।
বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে প্রাইমারি ও দাখিল মাদ্রাসায় প্রায় পাঁচ শতাধিক ছাত্রছাত্রী লেখাপড়া করছে। বিদ্যালয়ের মাঠটি খানিকটা নিচু হওয়ায় বৃষ্টির পানি জমে ২ মাস ধরে পানির নিচে ডুবে আছে এবং আরো দুই থেকে তিন মাস এভাবেই থাকবে। মাঠটি ভরাট করার জন্য একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করা হলেও কোনো ফল হয়নি।
ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া খাতুন বলে, বছরের তিন চার মাস মাঠে হাঁটুপানি জমে থাকে। এতে আমরা খেলাধুলাসহ স্বাভাবিক হাঁটাচলাও করতে পারি না। ক্লাসে আসার সময় সেলোয়ারের নিচের অংশ ভিজে যায়। যেকারণে নিয়মিত ক্লাস করলে ঠান্ডা লেগেই থাকে।
এ বিষয়ে দয়ারামপুর ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোঃ রাশিদুল ইসলাম জানান, প্রতিবছরই বর্ষার মৌসুমে স্কুল মাঠে বৃষ্টির পানি জমে যায়, পানি বের হবার কোন পথ না থাকায় তিন থেকে চার মাসের বেশি সময় ধরে বিদ্যালয় মাঠে পানি জমে থাকে। যার ফলে, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের চরম অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। তাছাড়া বিদ্যালয়ের মাঠে পানি জমে থাকার কারণে বিদ্যালয়ে অধ্যায়রত শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
অপর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দয়ারামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শামসুল আলম জানান, বৃষ্টির সময় হলেই বিদ্যালয়ের মাঠে পানি জমে যায়, এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসতে অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। অনেক সময় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় আসার সময় পানিতে পড়ে নানা দুর্ঘটনা ঘটে। তাছাড়া শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টা জানিয়েছি এবং ইতিপূর্বে উপজেলা চেয়ারম্যানকেও একাধিকবার জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিতান কুমার মন্ডল জানান, মাসিক মিটিং এ বিষয়টি জেনেছি। খুব দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।