সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম বাবা আশরাফুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক ভারসাম্যহীন। নিজের বাড়িটুকু ছাড়া সহায়-সম্বল বলতে তেমন কিছু নেই। টিউশনি করে কোনো রকমে সংসার চালাচ্ছেন মা আসমা খাতুন। তবু লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া থেকে পিছপা হয়নি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ধুবইল গ্রামের যমজ দুই বোন সামিয়া খাতুন ও সাদিয়া খাতুন। শত প্রতিকূলতা কাটিয়ে বড় বোনের মতো তারাও এবারের এসএসসি পরীক্ষায় পেয়েছে গোল্ডেন এ প্লাস। যমজ দুই বোনের এমন সাফল্যে খুশি পরিবার ও প্রতিবেশীরা।
সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম বাবা আশরাফুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক ভারসাম্যহীন। নিজের বাড়িটুকু ছাড়া সহায়-সম্বল বলতে তেমন কিছু নেই। টিউশনি করে কোনো রকমে সংসার চালাচ্ছেন মা আসমা খাতুন। তবু লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া থেকে পিছপা হয়নি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ধুবইল গ্রামের যমজ দুই বোন সামিয়া খাতুন ও সাদিয়া খাতুন। শত প্রতিকূলতা কাটিয়ে বড় বোনের মতো তারাও এবারের এসএসসি পরীক্ষায় পেয়েছে গোল্ডেন এ প্লাস। যমজ দুই বোনের এমন সাফল্যে খুশি পরিবার ও প্রতিবেশীরা।
এই দুই বোন বলে, অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা করছি। শত প্রতিকূলতার ভেতরে এভাবে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া দুষ্কর। মাঝেমধ্যে খরচ জোগাতে না পেরে পড়ালেখা বন্ধই হয়ে যায় প্রায়। তবু হাল ছাড়িনি। মায়ের টিউশনিতে সংসারের খরচ মেটানো সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই বাধ্য হয়ে নিজেরাই টিউশনি শুরু করি। টিউশনি থেকে যে অর্থ পাই তাতে পড়ালেখার খরচ চলে কোনোমতে। শতকষ্টের মধ্যেও এমন ফলাফলে আমরা দারুণ খুশি। ভবিষ্যতে সামিয়া হতে চায় চিকিৎসক। আর সাদিয়া হতে চায় প্রশাসনের কর্মকর্তা। তবে তাদের এমন ফলাফলের পুরো কৃতিত্বটুকু তাদের মা আসমা খাতুনকে দিতে চায় দুই বোন। তারা বলে, মায়ের সদিচ্ছা ছাড়া এমন ফলাফল কখনোই সম্ভব ছিল না। তিনি কষ্ট করে আমাদের পড়ালেখার সুযোগ করে দিয়েছেন। ভবিষ্যৎ অগ্রযাত্রার পথ অনেক বন্ধুর বলেও দাবি তাদের।
তাদের মা আসমা খাতুন জানান, মেয়েরা বড় হওয়ার সাথে সাথে সংসারে শুরু হয় আরো টানাপড়েন। তিন মেয়ে, কোনো ছেলেসন্তান নেই। বড় মেয়ে নির্জনা আক্তার পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছেন। অনেক কষ্ট করে তাকে সেখানে ভর্তি করিয়েছেন। এমন সংকটের মধ্যেও সামিয়া ও সাদিয়ার পড়ালেখা চলে। নিজেরা টিউশনি করে নিজেদের খরচ জোগাত তারা। মা বলেন, ‘আজ আমাদের দুই যমজ সন্তান ভালো ফলাফল করেছে। গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে। সংসারে সংকট থাকলেও আজ কোনো সংকট মনে হচ্ছে না।’ আবেগাপ্লুত হয়ে এভাবেই মেয়েদের এমন ফলাফলে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেন তিনি।
সামিয়া-সাদিয়ার এমন ফলাফলে খুশি প্রতিবেশীরাও। তাদের দাবি, সামিয়া-সাদিয়ার এমন ফলাফল তাদের কঠোর পরিশ্রমের ফসল। তাদের মতো অদম্য এসব মেধাবী শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ানোর কথা জানান অনেকেই।
মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল কাদের বলেন, সামিয়া-সাদিয়া স্থানীয়দের অনুপ্রেরণা হতে পারে। কারণ অনেক প্রতিকূলতার ভেতর দিয়ে তারা এবারের এসএসতি যে সফলতা অর্জন করেছে তাতে নিঃসন্দেহে তারা প্রশংসার দাবিদার।