আইপি টিভি মুভি বাংলার সিভিল টিমের নামে দেশজুড়ে চাঁদাবাজি ও প্রায় ডজন খানেক মামলার আসামী কৌশিক গংদের গ্রেফতারের দাবীতে মিরপুর প্রেসক্লাবে ৩ মে সংবাদ সম্মেলন করেছে বেশ কয়েকজন ভূক্তভোগী। তাদের বিরুদ্ধে গত ২ মে আদালতে চাঁদাবাজী মামলা দায়ের হয়েছে, যার তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশের চৌকশ বাহীনি পিবিআই-কে।
এছাড়াও কৌশিকের বিরুদ্ধে পুর্বে রয়েছে মাদক ব্যবসা, দস্যুতা-ডাকাতি, নাশকতা, চাঁদাবাজি, নারী নির্যাতনসহ প্রায় ডজন খানেক মামলা। মামলাগুলোর নম্বর ও বিবরণসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। মুভি বাংলার ফেসবুক লাইভে ও সিভিল টিমের মিথ্যা সংবাদ প্রচার করায় মিরপুরের নারী উদ্যোক্তা ও একাধীক সাংবাদিক শাহ আলী ও দারুস সালাম থানায় জিডি এবং অভিযোগ দায়ের করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, মুভি বাংলার ইউটিউবে সংবাদ প্রচারের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজ কৌশিক আহমেদ, জাহিদ হাসান মিশু, ক্যামেরা পার্সন আলতাফ হোসেন অমি গংদের বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছে মিরপুরবাসী।
ভুল সংবাদ প্রচার করা, মিথ্যা ও বানোয়াট প্রমাণ ছাড়া সংবাদ প্রচার করা, ভদ্র নিরপরাধ নিরীহ মানুষকে সংবাদের ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা, চিহ্নিত সন্ত্রাসীদেরকে সাংবাদিক হিসেবে নিয়োগ দেয়া, যাদের সাংবাদিকতা নিয়ে ন্যূনতম জ্ঞানটুকু নেই তাদেরকে সাংবাদিক হিসেবে নিয়োগ দেয়া, আইপি চ্যানেলের সংবাদ পরিবেশন করার অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও মিথ্যা, ভুল সংবাদ বানোয়াট সংবাদ প্রচার করা, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অহেতুক প্রশ্নবিদ্ধ করা , সংবাদ মাধ্যমকে টাকা আয়ের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা।
মুভি বাংলার ইউটিউব ও ফেসবুক পেইজে প্রবেশ করলেই দেখা যায় ইদানিং বেশ কিছু কনটেন্ট আছে যে কনটেন্ট গুলি সম্পূর্ণরূপেই বিতর্কিত, অভিযোগ ছাড়া তথ্য ছাড়া প্রমাণ ছাড়া মন গড়া সংবাদ ও ভিডিও প্রকাশ করা। নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা না-থাকায় সাংবাদিকদের পেশাদারীত্বের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারে না এই ভূয়া সাংবাদিকর কৌশিক।
এরপরেও প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক গোলাম মুক্তাদির কোন পদক্ষেপ নিলেন না সন্ত্রাসী কৌশিক এর বিরুদ্ধে। তার এই নীরবতায় প্রমাণ করে যে, গোলাম মুক্তাদির তিনি নিজেও একজন অপসংবাদিকতায় বিশ্বাসী।
শুধুমাত্র ফেসবুক লাইভে এসে দু-চারটি অসুদ্ধ বাংলায় কথা বলেই সে নিজেকে মস্ত বড় সাংবাদিক হিসেবে জাহির করতে চায়। এতে বিতর্কের মুখে পরছে মূল ধারার সাংবাদিকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই কৌশিক বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষদের টার্গেট করে সংবাদ প্রকাশের ভয়ভীতি দেখিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়ি, কারখানা থেকে নিয়মিত চাঁদাবাজি করে আসছে। মিরপুরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ও অবৈধ স্পট থেকে মোটা অঙ্কের মাশোয়ারা নিয়ে তাদের নানারকম সুবিধা দিয়েও আসছে এই চাঁদাবাজ কৌশিক।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ক্যামেরা বুম নিয়ে চ্যানেলে নিউজ প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে নানা রকম হয়রানি করে থাকে। কৌশিকের গ্রামের বাড়ি মাগুরায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এলাকায় বিভিন্ন অপকর্মের কারণে মামলা রয়েছে তার এবং দীর্ঘদিন জেল খেটে ঢাকায় এসে আশ্রয় নেয় এই চিহ্নিত অপরাধি কৌশিক।
অনুসন্ধানে আরো জানাযায়, মিরপুরের বিভিন্ন ফুটপাত থেকে লাইনম্যানদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা আদায় করে এই কৌশিক। কেউ টাকা দিতে না-চাইলে মুভি বাংলার ফেসবুক পেইজে এসে লাইভ করে ভয়ভীতি দেখায়। টাকা দিলেই মুছে ফেলা হয় সেই ভিডিও। কৌশিককে মোটা অঙ্কের মাশোয়ারা দিয়ে রাজধানিতে চলছে বেশকিছু সিএনজি। চোরাই মটরসাইকেল কেনা-বেচা চক্রের সদস্য হিসেবেও গ্রেফতার হয়েছিল এই কৌশিক।
কৌশিক শুধুমাত্র মাগুরা সদর থানাতেই ৫টি মামলার এজাহারে অভিযুক্ত আসামী যেগুলো হলো: জিআর নং-৪৪৪/০৯, জিআর নং-৮১৪/১২, এফআইআর নং-৪৯/১৩, জিআর নং-২৮/১৯, জিআর নং-৫৬১/১৬ ইত্যাদি। এছাড়াও সে মাগুরা শ্রীপুর থানার এজাহার নং-১৬/২০১৪ এর অভিযুক্ত আসামি।
এসকল মামলার কোনটি মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত আবার কোনটি দস্যুতা বা ডাকাতি সংক্রান্ত আবার কোনটি মারামারি থেকে শুরু করে হত্যাচেষ্টা সংক্রান্ত। এমনকি বিশেষ ক্ষমতা আইনের লঙ্ঘন করেও দুটি মামলার অভিযুক্ত আসামি হয়েছে সে।
মিরপুর -১ এ সাংবাদিক পরিচয়ে শাহ্ আলী, কোঅপারেটিভ, মুক্তিযোদ্ধা, হক প্লাজা সহ পুলিশের মাধ্যমে মার্কেট লাইনম্যানের কাছ থেকে মাসিক হারে চাঁদা নিয়ে থাকে। এই চক্রটি প্রায়শই সিভিল টিমের স্টিকার লাগিয়ে টেকনাফে যাতায়াত করে থাকে। এসময় মাদক নিরাপদে আনা নেওয়া করে থাকে। এই মাদক দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে থাকে। আট দশ বছর আগে পারিবারিক যৌতুক দাবি ও নারী নির্যাতনের মামলায় কারাবাস ভোগ করে।
সংবাদ সম্মেলনে এই অপ-সাংবাদিকদের রুখে দেওয়ার জোর দাবী জানানো হয় মূল ধারার সাংবাদিকদের প্রতি।