মঙ্গলবার (১লা ডিসেম্বর) বিজয়ের মাসের সুচনা লগ্ন ঘরির কাঁটায় তখন বেলা ১২ টা বেজেছে। নিজ কার্যালয়ে উপজেলার বেশ কয়েকজন অফিসারকে নিয়ে কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন ইউএনও।
এমন সময় হটাৎ ইউএনও’র অফিস কক্ষে ছেড়া নোংরা পোশাক পরিহিত দরিদ্র ঘরের একটি মেয়ে প্রবেশ করেন। প্রবেশ করেই মেয়েটি ইউএনও’কে জানান, সে ৮ম শ্রেণীতে অধয়নরত এক স্কুল ছাত্রী। গত ১৫ দিন পূর্বে জোর করে তার পিতা, তার ফুপাতো ভাইয়ের সাথে বিয়ে দিয়েছেন। এরপর সে কৌশলে সেখান থেকে পিতার বাড়ীতে পালিয়ে চলে এসেছে,এখন জোর করে তাকে তার শশুড় বাড়ী পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সে বিয়ে না করে আরো পড়তে চান, বাল্যকালে সে সংসার করবে না। ওই স্কুল ছাত্রীর মা মিনা খাতুন মেয়ের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় তাকে বেধরক মারপিট করেছে তার বাবা। মা মিনা খাতুন সেই দুঃখে হারপিক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্ঠা করেন।
বর্তমানে ওই স্কুল ছাত্রীর মা পাংশা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এমন কথা শুনে তাৎক্ষনিক ইউএনও বিষয়টি খোঁজ নিলেন বিষয়টির সত্যতা জানতে পেরে পদক্ষেপ গ্রহনের সয়ম বাধে বিপত্তি। ঘটনাটি যে রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার মধ্যে পড়েছে। এ সময় ওই ছাত্রীর সাথে কথা বলতে বলতে ইউএনও কালুখালীকে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নিজ হাতে একটি পত্র লিখে নিজে স্বাক্ষর করে সীল মেরে দিলেন, একই সাথে মুঠোফোনে ইউএনও কালুখালীকে তরিৎ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ করেন। ওই ছাত্রীকে নিজের ব্যাক্তিগত ফোন নাম্বার দিলেন সেই সাথে আর্থিক সহায়তা প্রদান করলেন। বলছিলাম রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মানবিক মানুষ বিপুল চন্দ্র দাসের কথা।
বিপুল চন্দ্র দাস অল্প কিছুদিন পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসাবে কাজ করছেন এই অল্প সময়ের মধ্যে সরকারি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কর্মকান্ড করে পাংশার মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য মানুষ হিসাবে বিবেচিত হয়েছেন। ওই মেয়েটি কালুখালী উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের ধামচন্দ্রপুর হাইস্কুলের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী। সে বোয়ালিয়া ইউনিয়নের গৌরাঙ্গপুর গ্রামের ইউনুস হোসেন’র মেয়ে। এই মানবিক ইউএনও মানুষটি পাংশা থেকে অল্প সময়ের মধ্যেই বিদায় নিবেন, এই কথা শুনে অনেকেই দুমরে-মুচরে পড়ছেন। সেই সাথে প্রার্থনাও করেন যেন এই মানুষটি পূনরায় এ জেলায় বড় পদে আশিন হয়ে আসেন এমন প্রত্যাশা পাংশার মানুষের। ইউএনও সকল শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে মিলে মিশে ইতি মধ্যেই উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে চলছেন।
মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে পাংশা উপজেলা পরিষদ চত্বরে নান্দনিক একটি লেডিস ক্লাব স্থাপন করেছেন, যা আগামী ২ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করা হবে। করেছেন অফিসার্স ক্লাবের সামনে দৃষ্ঠি নন্দন খেলার মাঠ। একই সাথে ব্যস্ত সময় পার করছেন মুজিববর্ষ উপলক্ষে পাংশা উপজেলায় ১০০ ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ঘর নির্মান কাজের মধ্য দিয়ে। ইতি মধ্যে গৃহ নির্মান কাজ প্রায় ৬০ ভাগ সম্পূন্য করেছেন তিনি, যা করা ছিল সত্যিই কষ্টসাধ্য ব্যপার।