কুষ্টিয়ার খোকসার সনাতন ধর্মাবলম্বী বাঙালিরা মেতেছেন দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমীতে। একে তো মহামারি করোনা, তার ওপর সকাল থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। তবে তাই বলে কী থেমে থাকবে উৎসব? সে সাধ্য আছেই বা কার? তাইতো মহাসপ্তমী পেরিয়ে।সকালে, দেবীর মহা অষ্টমীর শুভসূচনা ও মহাষ্টমীবিহিত পূজা শুরু হয়। তারপরই সন্ধিপূজা।
মহাঅষ্টমীর সন্ধিপূজা মানেই দূর্গাপূজা। সন্ধি মানে মিলন। যদিও যুদ্ধারতা দেবী দুর্গা কখনো কারও সাথে সন্ধি করেননি। আর এই মুহূর্তটি হল অষ্টমী তিথি ও নবমী তিথির মিলন সময়- মহাসন্ধিক্ষণ! আর তাইতো দেবী দুর্গার কাছে ভক্তরা বন্দনা করছেন করোনা বধের।
উপজেলার সব মন্দিরে মন্দিরে বিশেষ এই পূজা করতে ভিড় জমান সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। দুর্গাপুজায় এই সন্ধিক্ষণের বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে।পুরাণ অনুসারে অসুরদের সঙ্গে ভীষণ যুদ্ধের সময়ে দেবী অম্বিকার কপালে থাকা তৃতীয় চক্ষু থেকে ঠিক এই সময়েই দেবী কালিকা প্রকট হয়েছিলেন। আর বর্তমানে অসুররূপী ধর্ষকদের প্রতিরোধে প্রার্থনার আরাধ্যও ছিল ভক্তদের মুখে।
এর আগে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় মন্দিরে পুষ্পাঞ্জলি ও প্রসাদ বিতরণের মধ্য দিয়ে।বৃষ্টি এবং করোনা মিলিয়ে এবার পূজা অর্চনাকারীদের জন্য পরিবেশটা বেশ প্রতিকূল। তারপরও থেমে নেই দেবী দুর্গার ভক্তরা। অন্যান্যবারের মতো উৎসবে কিছুটা ভাটা পড়লেও ঠিকই এসেছেন ভক্তরা।
সন্ধি পুজোর সময়েই দেবী মহামায়া মৃন্ময়ী মূর্তি থেকে চিন্ময়ী রূপে আসেন ও ভক্তের আরাধ্য গ্রহণ করেন। ১০৮টি জলন্ত প্রদীপের প্রার্থনা গ্রহণ করে সংসারের সব আঁধার মোচন করেন জ্ঞানের আলো জ্বেলে দেন দুর্গা দেবী।
উল্লেখ্য, করোনা মহামারীর কারণে করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে এবছর বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। উৎসব সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পরিহার করে সাত্ত্বিক পূজায় সীমাবদ্ধ রাখতে হবে বিধায় এবারের দুর্গোৎসবকে ‘দুর্গাপূজা’ হিসেবে অভিহিত করেছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। সন্ধ্যায় আরতির পরই বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে পূজামন্ডপ। থাকছে না সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ধুনুচি নাচের প্রতিযোগিতা। জনসমাগমের কারণে সাস্থ্যবিধি যাতে ভঙ্গ না হয় সেদিকে খেয়াল রেখেই দুর্গা পূজায় আগেই প্রসাদ বিতরণ ও বিজয়া দশমীর শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এবার পুজা হচ্ছে উপজেলার ৫৮ টি মন্দিরে।