কুষ্টিয়া দৌলতপুরে পানের বাম্পার ফলন সত্বেও বাজার মূল্য কম হওয়ায় লাভের পরিবর্তে লোকসান গুনছেন পান চাষীরা। পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন।
উপজেলার মথুরাপুর এলাকার পানচাষী সিহাব উদ্দিন বলেন, বর্তমান সময়ে পানের দাম একেবারে কম থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে দু’বেলা দু’মুঠো ডাল ভাত যোগাড় করা কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে। পূর্বে যে পানের পোন বিক্রি হতো ১শ’৫০ থেকে ১শ’ ৮০টাকা তা এখন বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪০ থেকে ৬০/৬৫ টাকায়। আগে যে পান ৪০/৬০টাকা বিক্রি হতো এখন সেই পান পোন প্রতি ৮/১২ টাকা।
মথুরাপুর ইউনিয়নের বাগোয়ান গ্রামের পানচাষী সাজু আহমেদ বলেন, ঋণ নিয়ে দুই বিঘা জমিতে বরজটি দাঁড় করেছি। পানের বাজারের যে অবস্থা, এতে ঋণের টাকা পরিশোধ দুরের কথা- এখন সংসার চালাতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে।
উপজেলার মথুরাপুর কলেজপাড়ার গ্রামের শিক্ষিত যুবক পানচাষী আঃ হালিম জানান, বরজে কাজ করা দিনমজুরের দাম লাগামহীন ভাবে বেড়ে গেছে। সে তুলনায় বর্তমান যে পানের দাম তাতে পান বিক্রি করে মজুরির টাকা পরিশোধ করাও দুস্কর হয়ে পড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে পানচাষীরা পানচাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে বলে ধারণা করছেন তিনি।
বুধবার (৬অক্টোবর) সকালে উপজেলার সর্ববৃহৎ ঐতিহ্যবাহী পানের হাট মথুরাপুর সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে কাক ডাকা ভোর থেকেই মথুরাপুর পান বাজারে পান বিক্রেতারা বিভিন্ন বাহন ও মাথায় করে তাদের উৎপাদিত পান নিয়ে বাজারে আসছেন। ক্রেতারাও জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছেন পান ক্রয়ের জন্য।
আড়ৎদার সাজদার আলী বলেন, মথুরাপুর,প্রাগপুর, ডাংমড়কা,বাগোয়ান এলাকার পানচাষীরা বিক্রি করার জন্য প্রতি দিন সকালে নিয়ে আসলেও পানের দাম কম থাকায় সঠিক দাম দিতে পারছি না। ভরা মৌসুমেও পানের দাম না পেয়ে দুশ্চিন্তায় চাষিরা। পাশের দেশ ভারত থেকে পান আমদানী করায় পানের দাম কম হওয়ায় চাষীদের চরমভাবে লোকসান গুনতে হচ্ছে ।
পানচাষী বাখের আলী জানান, গত ১০ বছর যাবৎ ৩ একর জমিতে পানচাষ করছি এখন পর্যন্ত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে সরকারি কোনো বরাদ্দ পাইনাই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূরুল ইসলাম জানান, উপজেলার প্রায় ৫’শ ৫৪ হেক্টর জমিতে চাষিরা পান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তা বলেন, সরকারিভাবে পান চাষিদের জন্য কোনো বরাদ্দ নেই। তারপরও আমাদের কর্মকর্তারা চাষিদের বিভিন্ন সময় পরামর্শ দিয়ে থাকেন।