শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ২০২০ সালের মার্চে যখন বন্ধ হলো তখন ভেবেছিলাম খুব শীগ্রই হয়তো সব ঠিক হয়ে যাবে।
ছেলের স্কুলের এক অভিভাবক বলেছিলেন- এ বছর আর স্কুল খুলছে না। সেদিন ভীষণ বিরক্তি নিয়ে তার দিকে তাকিয়েছিলাম। তার অতি বুদ্ধির জন্য মনে মনে যে দুটো গালি দেইনি সেটা বললে মিথ্যা বলা হয়।
অথচ এই খুলে তো সেই খুলে করতে করতে আজ প্রায় দেড় বছর হতে চলল। আমরা জানি না আমাদের ছেলেমেয়েরা কবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চৌকাট স্পর্শ করবে।
শরৎচন্দ্রের উপন্যাসে পড়েছি প্লেগ হয়ে গ্রামের পর গ্রাম উজাড় হয়ে যেত। মানুষ গ্রাম ছেড়ে পালাতো। লাশ দাহ করার জন্য মানুষ খুজে পাওয়া যেত না এসব পড়ে সে সময় মানুষের জন্য খুব দুঃখ হতো। ভাবতাম আমরা একটা ভালো সময়ে জন্মগ্রহণ করেছি। যখন কিনা কোন রোগ একসাথে এত মানুষকে ভোগায়না। একসাথে এত মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয় না। কিন্তু করোনা সেসব ধারণা, বিশ্বাস একেবারে ওলট-পালট করে দিল।
করোনা প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। আমরা যারা এখনো বেঁচে আছি তাদেরকে মানসিকভাবে পঙ্গু করে ফেলছে।
যে মেধাবী ছেলেটি স্বপ্ন দেখেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে ভালো একটা চাকরি করবে। সংসারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেবে। বাবাকে ভারমুক্ত করবে। সে ছেলেটির স্বপ্ন আজ দুঃস্বপ্ন।
যে মেয়েটি স্বপ্ন দেখেছিল নিজ পায়ে দাঁড়িয়ে তারপর সংসার জীবনে প্রবেশ করবে। সে মেয়েটির স্বপ্ন আজ দুঃস্বপ্ন ।
এভাবে হাজারো মানুষের হাজারটা স্বপ্ন আজ শুধুই দুঃস্বপ্ন।
আমরা জানি না কবে হতাশা মুক্ত হব। জানিনা কবে নির্ভয়ে মুক্ত বাতাসে শ্বাস নেবচাতকের মত শুধুই চেয়ে আছি সুদিনের পানে।
লেখক : আবৃত্তিকার