কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজনকে আজ সোমবার আদালতে হাজির করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন জানাবে পুলিশ। সকালে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, চারজনের প্রত্যেককে সাত দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করা হবে।
গ্রেপ্তার চারজন হলেন কুষ্টিয়া শহরের জগতি পশ্চিমপাড়া এলাকার ইবনি মাসউদ (রা.) মাদ্রাসার শিক্ষক ও জেলার মিরপুর উপজেলার ধুবইল গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে মো. আল আমিন (২৭), শিক্ষক ও পাবনার আমিনপুর থানার দিয়াড় বামুন্দি এলাকার আজিজুল মণ্ডলের ছেলে মো. ইফসুফ আলী (২৬), একই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগে অধ্যয়নরত ছাত্র ও কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার শিংপুর গ্রামের সমসের মৃধার ছেলে মো. আবু বক্কর ওরফে মিঠন (১৯) এবং জেলার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর (গোলাবাড়িয়া) এলাকার মো. সামছুল আলমের ছেলে মো. সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদ (২০)।
গত শুক্রবার রাতে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। গত শনিবার রাতে কুষ্টিয়া পৌরসভার সচিব কামাল উদ্দীন বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন।
গতকাল রোববার বেলা সাড়ে তিনটায় কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতের কার্যালয়ে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার মুহিদ উদ্দীন। সেখানে পুলিশ জানায়, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের বয়ানে উদ্বুদ্ধ হয়ে দুই মাদ্রাসাছাত্র বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করেছেন।
সাংবাদিকদের কাছে পুলিশের দেওয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, মাওলানা মামুনুল হক ও সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের বয়ানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আবু বক্কর ও সবুজ ইসলাম গত শুক্রবার রাতে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুর করেছেন। ঘটনার রাতে তাঁরা দুজন একসঙ্গে মাদ্রাসা থেকে হেঁটে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে পাঁচ রাস্তার মোড়ে যান। ভাস্কর্য নির্মাণে ব্যবহৃত বাঁশের মই বেয়ে দুজন ওপরে ওঠেন। এরপর সবুজ পিঠে থাকা ব্যাগ থেকে হাতুড়ি বের করেন। দুজন মিলে ভাস্কর্য ভাঙচুর করেন। আট মিনিট ধরে ভাঙচুরের পর তাঁরা আবার হেঁটে মাদ্রাসায় ফিরে যান। শনিবার সকালে তাঁরা বিষয়টি মাদ্রাসার শিক্ষক আল আমিন ও ইফসুফকে জানান। তাঁরা দুই ছাত্রকে পালিয়ে যেতে বলেন। দুই ছাত্র পরে তাঁদের নিজ নিজ বাড়িতে চলে যান। পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে।