বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:২৩ অপরাহ্ন

প্রতিপক্ষের হাতুড়ীর আঘাতে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে বাকরুদ্ধ রেজাউল ।

মমিন হোসেন ডালিম / ১১৯৯ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম: বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৫:২৯ অপরাহ্ন

কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানার ৩নং জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বাগচিসাতপাখিয়া গ্রামের কুমারখালী থানা আওয়ামীলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এ. কে. এম আব্দুল জলিল এর ছেলে মোঃ রেজাউল ইসলাম মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন ও তার শরীরের ডান পাশ প্যারালাইসিস হয়ে গেছে।

জানাগেছে, এলাকার ঈদগাহ গোরস্থানের কমিটি গঠন করা কে কেন্দ্র দির্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলছিল এ. কে. এম আব্দুল জলিল এর সংগে একই গ্রামের হাজী নুরুল ইসলামের সাথে। এ. কে. এম আব্দুল জলিলের অভিযোগ, নুরুল দির্ঘ ৩০/৩৫ বছর যাবৎ একক ভাবে ঈদগাহ গোরস্থানের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন এবং সে তার ইচ্ছা মত ঈদগাহ গোরস্থানের বিষয়ে এককভাবে সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দির্ঘদিন ধরে অনুলোধ করে আসছি একটা কমিটি গঠন করার জন্য, এবং আমরা তিনটি গ্রামের গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গদের নিয়ে আহবায়ক করে তাকে নোটিশ করেছিলাম কিন্তু হাজী নুরুল নোটিশে সই করেনি এবং উপস্থিতও হয়নি।

ঈদগাহ গোরস্থানটি কুমারখালী থানা ও খোকসা থানার সীমান্ত হওয়াই এখানে খোকসা থানাধীন সন্তোসপুর, শ্যামগঞ্জ ও কুমারখালী থানাধীন বাগচিসাতপাখিয়া এই তিনটি গ্রামের মানুষ সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির সাথে দির্ঘদিন যাবৎ ঈদের নামায আদায় করে। এই তিনটি গ্রামের গন্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে নোটিশের মাধ্যমে আমরা একটা কমিটির তালিকা করে কুমারখালী থানা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী ও পৌর মেয়র শামসুজ্জামান অরুন মহদ্বয়ের কাছে প্রেরন করি।

সেই প্রেক্ষিতে আমরা গত ১৪ই সেপ্টেম্বর ( সোমবার ) ৯.০০ ঘটিকার দিকে ঈদগাহ ময়দানে আহবায়ক কমিটির সদস্যেদের পরিচিতি সভার জন্য একটা মিটিং ডাকি ১০.০০টার দিকে সেখানে পুলিশ আসে এবং আমাদের মিটিং করতে নিষেধ করে আমরা মিটিং স্থগিত করে সেখান থেকে চলে আসার সময় পথের মধ্যে ওৎ পেঁতে থাকা হাজী নুরুলের লোকজন তার আদেশে এবং সামাদের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোটা ও হাতুড়ী দিয়ে আমার ছেলেদের উপড় আঘাত করে এতে আমার ছেলে শফিকুল, নাতী ছেলে রনি ও রেজাউল মারাত্মক ভাবে আহত হয় এবং রেজাউল তাৎক্ষনিক জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এবং এখন তার ডান পাশ অবশ (প্যারালাসিস ) হয়ে গেছে।

এলাকাবাসী ও প্রতক্ষ্যদর্শী সুত্রে জানা গেছে, গত ১৪ই সেপ্টেম্বর ( সোমবার ) সকাল ৯.০০ ঘটিকার দিকে মাওলানা এ.কে. এম আব্দুল জলিল বাগচিসাতপাখিয়া ঈদগাহ ও গোরস্থান ময়দানে নতুন কমিটির সদস্যেদের সাথে মতবিনিময় করতে যান সেখান থেকে ফেরার পথে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় গোপগ্রাম ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী মাজেদুল ইসলাম বলেন সেদিন সেখানে আমিও উপস্থিত ছিলাম এবং সেখানে মহেন্দ্রপুর ক্যাম্পের পুলিশ ও কুমারখালী থানা পুলিশের উপস্থিতেই এই ঘটনা ঘটে। এবং তিনি এই হামলার তিব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের শাস্তীর দাবী জানিয়েছেন। আর একজন প্রত্যক্ষ্যদর্শী, সন্তোসপুর গ্রামের আনোয়ার আলী শেখের ছেলে মুনিরুল শেখ বলেন, ক্যাম্পের পুলিশ ও কুমারখালী থানার পুলিশ বলেন সন্তোষপুর গ্রামের যারা আছেন তারা চলে যান এবং সেই মোতাবেক সন্তোষপুর গ্রামের যারা তারা চলে আসে আর এই সুযোগেই তারা হামলা করে রেজাউলকে পঙ্গু করে দিয়েছে। তবে সেখান থেকে পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনার বিষয়ে, হাজী নুরুল ইসলাামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ছেলে সালাম কুষ্টিয়ার সময় প্রতিনিধিকে জানান, আমার বাবা শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ্য তিনি মুঠোফোনে কথা বলার মত অবস্থাতে নেই তবে তার পিতার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা দাবী করে তিনি বলেন আমার বাবা দির্ঘদিন ধরে ঈদগাহ গোরস্থানের দায়িত্ব পালন করছে এবং গ্রামের লোকের অনুরোধেই সে এখনও দায়িত্ব পালন করছেন আমরা প্রতিহিংসার স্বীকার আর হামলার সাথে আমরা জড়িত নই।

তবে এই ঘটনায় মোট ১১ জনকে আসামী করে কুমারখালী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মজিবুর রহমান এবং ঘটনাস্থল থেকে আসামীদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এবং তিনি এটাও বলেন কুমারখালী থানাতে অপরাধ করে কেউই পার পেয়ে যাবেনা অপরাধীদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো খবর...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর