শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:১৩ অপরাহ্ন

প্রতারণার মাধ্যমে ইসলামি ব্যাংক থেকে কুমারখালীর শহিদুলের টাকা উধাও

এনামুল হক ইমন,কুমারখালী(কুষ্টিয়া) / ১১০ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম: শুক্রবার, ২২ অক্টোবর, ২০২১, ৩:৫৩ পূর্বাহ্ন

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে প্রবাসীর কষ্টার্জিত অর্থ ইসলামি ব্যাংকের দুটি উপশাখা থেকে চেকের সই জাল করে প্রতারণার মাধ্যমে উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ টাকা প্রদানের সময় একাউন্ট হোল্ডারের সাথে যোগাযোগ না করেই টাকা প্রদান করেছেন বলে প্রবাসী জানিয়েছেন।

প্রতারণার মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করেছেন কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের কয়া গ্রামের মৃত রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে রাফা বস্ত্রালয়ের স্বত্বাধিকারী আব্দুর রহিম (৪০)।

ভুক্তভোগী প্রবাসী শহিদুল ইসলাম জানান, তিনি দীর্ঘদিন সৌদি আরবে ছিলেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ এসে তার সমস্ত অর্থ বাংলাদেশ ইসলামি ব্যাংক কালিগঞ্জ শাখার সঞ্চয়ী হিসাব ১০২৩ নং একাউন্টে জমা রাখেন। তিনি চলতি বছরের আগষ্ট মাসের ১৫ তারিখে তার অসুস্থ বোনকে চিকিৎসা করাতে খুলনা যান। এবং প্রায় ১ মাস পর বাড়িতে আসেন। বাড়িতে ফেরার পর ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারেন আগষ্ট মাসের ১৯ তারিখে ঝিনাইদহের শেখপাড়া উপশাখা থেকে ১ লাখ টাকা ও ২৪ তারিখে কুষ্টিয়া চৌড়হাস উপশাখা থেকে ৩ লাখ টাকা তার একাউন্ট থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। তিনি দুটি উপশাখায় গিয়ে জানান, তিনি কোন টাকা উত্তোলন করেননি তাহলে কিভাবে তার একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন হয়েছে বা কে তুলেছে? সেসময় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানান আব্দুর রহিম নামের একজন তার একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করেছে। কোন ম্যাসেজ বা ফোন না দিয়ে কিভাবে এতো টাকা তারা দিয়েছেন এমন প্রশ্নের কোন সঠিক জবাব তারা দেননি বলে জানান । যেকারণে তিনি যশোর জোন ইনচার্জ বরাবর তার কষ্টার্জিত অর্থ ফিরে পাবার জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু দুই মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কোন সুরাহা করেনি বলে জানান তিনি। তিনি আরো জানান এ বিষয়ে কুমারখালী থানায় পরবর্তীতে সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

বিষয়টি জানতে সরেজমিন ঝিনাইদহের শেখপাড়া উপশাখার প্রিন্সিপাল অফিসার এন্ড ইনচার্জ মো. মোস্তাক আহমেদকে জিজ্ঞেস করলে জানান, আব্দুর রহিম নামের ব্যক্তি শহিদুল ইসলামের নামের ১ লাখ টাকার চেক জমা দিলে আমরা শহিদুল ইসলামের মোবাইল নাম্বারে ফোন দিলে তার ফোন বন্ধ দেখায় সেসময় আব্দুর রহিম শহিদুল ইসলামের স্ত্রীর সাথে কথা বলিয়ে দিলে টাকা দেওয়া হয়। একাউন্ট হোল্ডারের সাথে কথা না বলে টাকা দেবার কোন বিধান আছে কিনা জিজ্ঞেস করলে জানান ভুল হয়েছে এটা ঠিক হয়নি।

কুষ্টিয়ার চৌড়হাস উপশাখার প্রিন্সিপাল অফিসার এন্ড ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান জানান, লোকবল কম থাকার কারনে এতোবড় ত্রুটি হয়ে গেছে। তবে আব্দুর রহিমকে পরবর্তীতে ব্যাংকে হাজির করে তার কাছ থেকে স্বীকারোক্তি নেয়া হয়েছে। দ্রুত গতিতে আব্দুর রহিম একাউন্ট হোল্ডারকে টাকা ফেরত না দিলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে কুমারখালী জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফারুখ আহমেদ খান, পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আনিসুর রহমান, সাংবাদিক ও এলাকার গণ্য মান্য ব্যক্তিবর্গ সুরাহার জন্য শালিসী বৈঠক করলে আব্দুর রহিম জানান, শহিদুল ইসলামের ছেলে তার দোকানের কর্মচারী ছিলো। শহিদুল ইসলামের ছেলের ন্যাশনাল আইডি কার্ড না থাকায় তার আইডি কার্ড দিয়ে টাকা উত্তোলন করে তার ছেলেকে সমস্ত টাকা দিয়েছেন।

এ সময় শহিদুল ইসলামের ছেলে সোহান জানায়, আব্দুর রহিমের দোকানে সে কাজ করে। আব্দুর রহিম তার বাবা বাড়িতে নেই শুনে চেক বই আনতে বলে। চেক বই এনে আব্দুর রহিমের কাছে দেবার পর কি হয়েছে তার জানা নেই। পরবর্তীতে সে জানতে পারে আব্দুর রহিম তার বাবার একাউন্ট থেকে ৪ লাখ টাকা তুলে নিয়েছে। আব্দুর রহিম কেন তার বাবার সই জাল করে টাকা তুলেছে জিজ্ঞেস করতে গেলে তাকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয় বলে জানায়। সে আরো জানায় এখনো চেক বইটি আব্দুর রহিমের কাছেই রয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো খবর...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর