বর্তমান সরকারের চলতি মেয়াদে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ২৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও ভূক্ত হয়েছে। এমপিও ভূক্তির আওতায় আসতে উপজেলাটিতে বাকি আছে আবেদিত থাকা মাত্র কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমপিও ভূক্তি এবং এমপিও ভূক্তির সম্ভাবনাময় পরিস্থিতি পাঠদানে আগ্রহ ও অনুপ্রেরণা বাড়িয়েছে শিক্ষকদের। নিষ্ঠা বেড়েছে কর্মচারীদের।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ যে অর্থ সরকার দিয়ে থাকে তাকে ইংরেজিতে বলা হয় মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার যা সংক্ষেপে এমপিও।
সরকারি বেতন স্কেল অনুযায়ী একটি এমপিও ভূক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক বেতন পাচ্ছেন ২৯ হাজার টাকা, সহকারী বা সাধারণ শিক্ষক শেণী ভিত্তিতে পাচ্ছেন ১৬-২২ হাজার টাকা। এছাড়াও বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ও উৎসব ভাতা হিসাবে বেতনের সাথে শতাংশের হিসাবে আরও কিছু টাকা পচ্ছেন তারা। সরকারের নতুন নীতিমালা অনুযায়ী একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি কওে তাতে কোন রকমে পাঠদান চালিয়ে গেলেই হবে না। এমপিও সুবিধার আওতায় আসতে বেশকিছু যোগ্যতার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দিতে হবে প্রতিষ্ঠানকে।
সরেজমিন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এমপিও ভূক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে লেখাপড়ার মান ও পরিবেশ এবং ফলাফল ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনায় ভালো। কেবলমাত্র চলতি বছরেই এমপিও ভূক্তির আওতায় এসেছে ১৫ টি প্রতিষ্ঠান। নিম্ন মাধ্যমিক থেকে মাধ্যমিকে উন্নিত হওয়ার পাশাপাশি এমপিও ভূক্ত হয়েছে উপজেলার পিপুলবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, জি.টি.সি.পি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মঈন উদ্দীন বিশ্বাস মাধ্যমিক বিদ্যালয়,পিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং কিশোরী নগর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। নিম্ন মাধ্যমিককের কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতির সাথে এমপিও ভূক্তির তালিকায় উঠেছে প্রান্তিক নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দীঘলকান্দি নিম্ন মাধ্যমকি বিদ্যালয় বোয়ালিয়া নিম্ন মাধ্যমকি বিদ্যালয়, হাসানপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পি.কে.সি নিম্ন মাধ্যমকি বিদ্যালয়, জি.এন নিম্ন ম্যাধ্যমিক বিদ্যালয়। মাদ্রাসা বিভাগে এমপিও ভূক্তির আওতায় এসেছে উপজেলার ফয়সাল ওয়াজেদ দাখিল মাদ্রাসা।
দৌলতপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সরদার মোহাম্মদ আবু সালেক বলেন, এপর্যন্ত ৯০ টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এমপিও ভূক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দৌলতপুরে রয়েছে। এখানে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১ টি এবং সরকারি কলেজের সংখ্যা ১ টি, যদিও এখনও এগুলোতে সরকারি সুবিধা আসতে শুরু করেনি। এমপিও ভূক্তি নি:সন্দেহে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অগ্রগতি এবং শিক্ষার মানোন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য ভীষণ উপকারের।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, এখনও ৫ থেকে ৬ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং এর অন্তত ৫০ জন শিক্ষক-কর্মচারী এমপিও ভূক্তির আওতায় আসতে আবেদিত। এই কিছু সংখ্যক প্রতিষ্ঠান হয়ে গেলেই শতভাগ এমপিও ভূক্ত হবে এবং দৌলতপুরের শিক্ষা খাত আরও বেশি তরান্বিত হবে বলে আমরা আশাবাদী। শিক্ষকদের এই সংগঠনের আরেক নেতা সভাপতি মজিবর রহমান জানান, চার ধরণের যোগ্যতা অর্জন করলে সাধারণত প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের পক্ষ থেকে এমপিও ভূক্তি পায়। বর্তমান সংসদ সদস্যের আন্তরিকতা, শিক্ষার উন্নয়নের প্রচেষ্টা এবং আমাদের সম্মিলিত চেষ্টার সাথে তার সার্বিক সহযোগিতা দৌলতপুরের শিক্ষা ব্যবস্থায় সার্বিক ভাবে উন্নয়ন ঘটাচ্ছে।
দৌলতপুরের শিক্ষা খাতে রেকর্ড পরিমাণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটেছে সরকারের বর্তমান মেয়াদে। তবে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আরও কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন বলে মত দেন এই শিক্ষক নেতা।
সংশ্লিষ্ট আসনের সংসদ সদস্য আ: কা: ম: সরওয়ার জাহান বাদশাহ বলেন, আগামী নির্বাচনের আগে শুধু কুষ্টিয়া বা দৌলতপুর নয় সারাদেশেই যোগ্যতা সম্পন্ন সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিও ভূক্তির আওতায় আনবে বর্তমান সরকার। আশাকরি দৌলতপুরের বাদবাকি প্রতিষ্ঠান গুলোও অচিরেই এই সুবিধার আওতায় আসবে।
সম্প্রতি জাতীয় সংসদে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ এবং শিক্ষকদের অধিকার বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে দেয়া বক্তব্য দেশব্যাপী সমাদৃত হয় এমপি বাদশাহ’র। সংশ্লিষ্টরা প্রত্যাশা করছেন শিগগিরই কেটে যাবে দৌলতপুরের শিক্ষা খাতের যাবতীয় সংকট।