বাংলা সাহিত্যের দ্রোহী কথাসাহিত্যিক আব্দুর রউফ চৌধুরীর জন্মদিন আজ। তিনি ছিলেন একাধারে কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, ছোট গল্পকার, গবেষক, ইতিহাসবিদ ও দার্শনিক। সৃষ্টিশীলতার সমান্তরালে তিনি ধর্ম, দর্শন, রাজনীতি ও সমাজভাবনা সমানভাবেই চালিয়ে গেছেন।
১৯২৯ সালের এই দিনে হবিগঞ্জের শাখাবরাক নদীর তীরে মুকিমপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কথাসাহিত্যিক আব্দুর রউফ চৌধুরী। সামাজিক সংস্কার, অর্থনৈতিক দুরাবস্থা, প্রবাসী জীবনযাপন এবং বৈচিত্র্যময় কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা তাঁকে লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশে তাড়িত করে। পাকিস্তানে অবস্থানকালে বাঙালির আর্থ-সামাজিক বৈষম্য এবং ধর্মের নামে পাপাচার তাঁকে ক্ষুব্ধ করে, ফলে ১৯৬১ সালে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর চাকুরি ছেড়ে ব্রিটিশ বিমানবাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় পত্রপত্রিকায় লেখালেখি শুরু করেন।
ধর্ম ও দর্শনভিত্তিক একাধিক গ্রন্থ তিনি রচনা করেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পান্ডুলিপি নাম মোছা যায় না (১৯৬৩), বাইবেলে সত্য নবী মুহাম্মদ (সা.) (১৯৬৮),ধর্মের নির্যাস (১৯৬৫), ইসলাম ও সমাজতন্ত্র (১৯৬৯), পথ (১৯৬৩-১৯৯১)। ধর্ম ও বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা, যৌক্তিকতার বিচার-বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ন করে কথাসাহত্যিক আব্দুর রউফ চৌধুরী লিখেছেন, যে কথা বলা যায় না ও প্রফেট মোহাম্মদ। এছাড়া তিনি আরও অসংখ্য গ্রন্থ রচনা করেন।
বস্তুত আব্দুর রউফ চৌধুরী ছিলেন বাংলা-সাহিত্য-জগতে দ্রোহী কথাসাহিত্যের নির্মিতি ও মর্মাংশে এক শুদ্ধ আধুনিকোত্তরক। যুগাত্মক জটিল চেতনাপ্রবাহী আঙ্গিকে তিনি যেমন ছিলেন চূঁড়াবিহারি তেমনই বিষয়-বস্তু-ঘটনাও অতিশয় কালচৈতন্যবাহী ও বিস্ময়সূচক। ‘বাংলা মুভমেন্ট থিয়েটার’ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা, গবেষক, সম্পাদক ও লেখক ড. মুকিদ চৌধুরী হলেন আব্দুর রউফ চৌধুরীর সন্তান।