রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০৬ অপরাহ্ন

২২ চি‌কিৎসকের একজনও থা‌কে না দৌলতপুর উপস্বাস্থ‌্যকে‌ন্দ্রে

সরোয়ার পারভেজ / ৬৯৬ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম: শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১০:৪৬ পূর্বাহ্ন

 জনবহুল বাংলাদেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন ভিত্তিক উপ-স্বাস্থকেন্দ্র চালু করে সরকার, যেগুলোর পরিকল্পনা একেকটি মোটামুটি স্বয়ং সম্পন্ন হাসপাতাল,যেখানে থাকার কথা বহির্বিভাগ, ওআরটি কর্নার,যক্ষা ও কুষ্ঠ নিয়ন্ত্রণ, আইএমসিআই,প্যাথলজি-এক্সরে,স্বাস্থ্য শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ সব সেবা। প্রায় ৮ লাখ জনসংখ্যার একটি উপজেলা দৌলতপুরেও রয়েছে এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন প্রকল্প,কিন্তু হতাশার ঘটনা উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। আয়তনেও দেশের বৃহত্তম উপজেলা গুলোর মধ্যে অন্যতম কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা। ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ৫২ টি কমিউনিটি ক্লিনিক আর ১৪ টি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে এই উপজেলার মানুষের স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার কথা থাকলেও, তা কেবল মৌখিক। নেই কাগজ কলমের সঠিক হিসাবও। ১৪টি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দু’টি আগেই বন্ধ দাতা দেশ নেদারল্যান্ডের সিদ্ধান্তে।

অব্যবহৃত থাকায় ভবন দু‘টি এখন পরিত্যাক্ত। সেবা প্রত্যাশীরা বলছেন, এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোন চিকিৎসক বা চিকিৎসা কোনটাই পান না তারা। নিম্ন আয়ের এক বিশাল জনগোষ্ঠী বঞ্চিত সরকারি বরাদ্দের এই বিনামূল্যের সেবা থেকে। বাঁকি ছ’টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সেবা কাগজে কলমে চালু থাকলেও তার বাস্তবায়ন নেই দাবি স্থানীয়দের। কোথাও স্বাস্থ্য বিভাগের কোন মানুষই আসেন না,আবার কোথাও চিকিৎসা দিচ্ছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মচারী কিংবা ফার্মাসিস্ট নিজেই। দিনের পর দিন,মাসের পর মাস চিকিৎসকেরা এখানে আসেন না বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী। খোদ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা-ই অস্পষ্ট বক্তব্য দিচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২২ জন চিকিৎসক কে কোথায় কাজ করছেন ?

করোনা কালীন সেবাদানে কিছুটা হেরফের আসলেও কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের এ দৃশ্য সবসময়ের। কিন্তু সমাধানের চেষ্টায় স্বাস্থ্য কর্মকর্তার উদাসীনতা চোখে পড়ার মতো, ২২ জনের মধ্যে কর্মস্থলে দেখা মিলেছে হাতে গোনা কয়েক জনকে। অন্যদিকে শুভঙ্করের ফাঁকি দিচ্ছেন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দায়িত্বরত চিকিৎসকেরা। কর্মস্থলে না গিয়েও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কে মিথ্যা তথ্য দিতে দেখা যায়, বুধবার ১৬ সেপ্টেম্বর খলিশাকুন্ডী কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক অমৃত দাসকে,অনুসন্ধানে চিকিৎসকদের এ চর্চা লম্বা সময় ধরে চলছে বলে পরিষ্কার হয়। বেলা ১০ টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়ার কথা থাকলেও মাঝে মধ্যে কর্মকর্তারা ঢু দেন দু’একটি জায়গায়। এক ভুক্তভোগী জানান, ডাক্তার থাকে না, গেলেই শুধু প্যারাসিটামল দেয়,ব্যাথার ওষুধ চাইলে বলে ব্যাথার ওষুধ নাই গ্যাসের ওষুধ নাই। এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, কিছু দোষ আমাদের আছে।

এছাড়া তিনি তুলে ধরেন কিছু প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধতার কথা। কিন্তু,সমস্যার সমাধানে পর্যাপ্ত উদ্যোগ আর সেবা মনিটরিংয়ে ব্যাপক গাফিলতির চিত্র দেখা যায় তার। যোগদানের পরপর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সমস্যা স্থানীয় গণমাধ্যমে তুলে ধরা হলেও গত কয়েকমাসে মাত্র একটি কেন্দ্র পরিদর্শনের সুযোগ হয়েছে এই কর্মকর্তার। উর্ধতন কর্তৃপক্ষ কে বিষয়গুলো দাপ্তরিক ভাবে অবগত করার বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। মূল কমপ্লেক্স,কমিউনিটি ক্লিনিক, আর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সেবা সুবিধা বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানালেন স্থানীয় এমপি সরওয়ার জাহান বাদশাহ। তিনি বলেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর, মন্ত্রী,সচিবকে এমনকি জাতীয় সংসদেও আমি দৌলতপুরের চিকিৎসা সেবা উন্নয়নের বিষয়ে বেশ কিছু সহায়তা চেয়েছি।

চলতি অর্থবছরে সেগুলো ইনশাল্লাহ দৌলতপুরের মানুষ পাবে বলে আশা করছি। তবে চিকিৎসকদের গাফিলতি থাকলে সেটা খুবই দুঃখজনক, বিষয়গুলো আমিও গুরুত্ব দিয়ে দেখছি বলে জানান এমপি। বিগত বছরগুলোর মতো চলতি অর্থ-বছরেও উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র গুলো বাবদ পর্যাপ্ত ব্যয় দেখাচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো খবর...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর