বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৪৪ অপরাহ্ন

দৌলতপুরে কৃষি জমিতে গড়ে উঠা অবৈধ ইটভাটায় পুড়ছে কাঠ

মানজারুল ইসলাম খোকন,দৌলতপুর / ১৭ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম: বুধবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ৮:৩২ অপরাহ্ন

নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে দেদারসে চলছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ২৬টি অবৈধ ইটভাটা। এসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধে দ্রুত অভিযান পরিচালনার কথা জানিয়েছেন দৌলতপুর উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর।

এসকল ইট ভাটায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে শিশুসহ শতশত শ্রমিক। ইট তৈরিতে ব্যাবহার হচ্ছে কৃষি আবাদি ও সরকারি জমির মাটি, পুড়ানো হচ্ছে গাছ, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। এসব ভাটায় মাটি ও ইট পরিবহনে ব্যাবহার করা হচ্ছে শতাধিক অবৈধ শ্যালো ইঞ্জিন চালিত ট্রলি ও স্টারিং গাড়ি।

তবে একটি তথ্য বলছে উপজেলার ইটভাটাগুলোতে প্রতি মৌসুমে এক লাখ টনেরও বেশি কাঠ পুড়ানো হয়। যার আনুমানিক বাজার মূল অন্তত ৫০ কোটি টাকার কাছা কাছি। সরজমিনে দেখাযায় এসব ইটভাটা গড়ে উঠেছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ নষ্ট করে। এখানে নামমাত্র দু-একটি কয়লার ভাটা থাকলেও বাকি সব গুলো চলছে কাঠ পুড়িয়ে। ইট তৈরির জন্য কাটা হয় ফসলি জমির মাটি। অনেকেই আবার ইটের ভাটাতেই বসিয়েছেন কাঠ কাটার কল। তবে লোক দেখানো পূর্বে দু’এক যায়গায় অভিযান চালানো হলেও এবছর এখন পর্যন্ত কোন অভিযান হয়নি দৌলতপুরে। সূত্র বলছে পুলিশ প্রসাশন কে ম্যানেজ করেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাটি কেটে ভাটায় বিক্রয় করা হচ্ছে।

এদিকে, উপজেলার স্বরুপ্পুর ও সাদীপুর এলাকায় ফসলের মাঠ এখন ইটভাটার দখলে। এই এলাকায় ইটের ভাটা ৮টি যার মধ্যে একটিতে কয়লার জ্বালানির আয়োজন থাকলেও তা অব্যবহৃত। চক দৌলতপুর এলাকার রমজান আলীর নুরু ব্রিকস ছাড়াও দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় চলছে চারটি ইটের ভাটা। সব ভাটাতেই পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় ঘটানোর চিত্র চোখে পড়ে। ডাংমড়কা এলাকার তিনটি ফসলের মাঠে ইটভাটা সংখ্যা চারটি। দৌলতপুর থানা থেকে রিফায়েতপুরের পথে ওলি এবং নজরুলের দুটি ভাটা।

নজরুলের ভাটায় কয়লার আয়োজন থাকলেও ওলির ভাটা খড়ি নির্ভর। গলাকাটি এলাকায় তিনটি, বড়গাংদিয়ায় একটি, আদাবাড়িয়ায় একটি, খলিশাকুন্ডীতে একটি, কোলদিয়াড়ে একটি এবং জয়রামপুর-কল্যাণপুর এলাকায় তিনটি ইটভাটা চলছে ফসলের ক্ষেতে।

এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, ইটভাটাগুলোর লাইসেন্স না থাকলেও পরিবেশ অধিদপ্তর কুষ্টিয়া অজ্ঞাত কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। সাদিপুর গ্রামের কয়েকজন কৃষক জানান, তাদের আবাদি জমির চারিপাশে ইটভাটা গড়ে তোলায় সেখানে আর কোন ফসলের আবাদ করতে পারছেন না।

দৌলতপুর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ তৌহিদুল হাসান তুহিন জানান, দীর্ঘদিন ইটভাটার ধোয়ায় বাতাসে কার্বণ বৃদ্ধি পায়। এবং তা মানুষের শরীরে প্রবেশ করে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি ও নানা ধরণের চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, এবিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে কথা হয়েছে, খুব সিঘ্রই অবৈধ ইট ভাটায় অভিযান পরিচালনা করবো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর