‘কেউ চাই গাড়ি,কেউ চাই বাড়ি, আমি চেয়েছি দাড়ি’ সাদা কালো দাড়িতে মুখভর্তি মাহতাব উদ্দিন লাদেনের । লাদেন গ্রিনিস বুকে তুলতে চান লম্বা দাড়ি । সে দাড়ির দৈর্ঘ্য ছয় ফুট (চার হাত)। ছয় ফুট উচ্চতার মাহতাব উদ্দিনের এই লম্বা দাড়ি এর মধ্যে তাঁকে বিশেষ পরিচিতি এনে দিয়েছে। এই দাড়ির জন্য ৬৯ বছরের মানুষটিকে কুষ্টিয়া জেলার প্রায় মানুষই চেনে। এলাকাবাসীর ধারণা লাদেনই দেশের সবচেয়ে লম্বা দাড়ির অধিকারী!
কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার চর পাককোলা গ্রামে তাঁর পৈতৃক বাড়িতে তিনি বসবাস করেন। সোমবার (২৩ আগস্ট) পাককোলার নিজ বাড়িতে মাহতাব উদ্দিনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি কুষ্টিয়ার সময়কে বলেন, ছোট বেলায় বাপ-দাদার মুখভর্তি দাড়ি দেখে নিয়ত করেছিলাম বড় হয়ে তাঁদের চেয়েও বড় দাড়ি রাখবো। আল্লাহ সে আশা পূরণ করেছেন।
নিয়মিত তিনি দাড়ির যত্নে প্রতিদিন চিরুনি দিয়ে দাড়ি আঁচড়ান, তেল দেন। সহজে শুকানো যায় না বলে সপ্তাহে এক দিন শ্যাম্পু দিয়ে দাড়ি পরিষ্কার করেন। দাড়ির যত্নে সহায়তা করেন স্ত্রী আশানুর বানু । জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত এই দাড়ি রাখার ইচ্ছা রয়েছে তাঁর। সংসারের অভাব অনটনে হাইস্কুলের গন্ডি পেরোতে পারেনি লাদেন। গ্রামে মৌসুমি (পাট, তামাক) ব্যবসা ও কৃষিকাজ করতেন।
২০০২ সাল থেকে মুখে দাড়ি রাখা শুরু করেন। ২০০৪ সালে তিনি পরিবার নিয়ে কুষ্টিয়া শহরে বসবাস করতে থাকেন । এরই মধ্যে তিন দফায় প্রায় এক হাত করে দাড়ি কেটে ফেলেন। পরে আবার বেড়ে ওঠে। এভাবে এখন দাড়ির দৈর্ঘ্য ছয় ফুট। বাহিরে চলাচলের সময় ধুলাবালু থেকে রক্ষা পেতে খোঁপার মতো দাড়ি বেঁধে রাখেন।
মাহতাব জানান, তাঁর দাড়ির সৌন্দর্যে মানুষ আকৃষ্ট হয়ে তাঁর সঙ্গে ছবি তুলতে আসেন। তিনি আধ্যাত্মিক বাউল লালন শাহের ভক্ত। বিভিন্ন জেলায় বাউলদের সঙ্গে ঘুরতেও যান। কৃষি কাজের পাশাপাশি কুষ্টিয়া শহরের কাটাইখানা মোড় এলাকার গ্রীন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অস্থায়ী ভিত্তিতে বিপণন ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করছেন মাহতাব উদ্দিন।
স্ত্রী আশানুর বানু শহরের একটি ক্লিনিকে নার্স হিসেবে কাজ করতেন বর্তমানে গ্রামের বাড়িতে রয়েছেন। তাঁদের দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। তাঁদের ইচ্ছা এই দাড়ির জন্য গ্রিনিস বুকে যেন তাঁর নাম উঠে।
পাককোলা গ্রামের বাসিন্দা ও আনন্দ ধাম আশ্রমের গুরু সামসুল ফকির বলেন, মাহতাব উদ্দিনের বাপ-দাদারও এমন লম্বা দাড়ি ছিল। শখের বশে মাহতাব লম্বা দাড়ি রেখেছেন।