শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:১৪ পূর্বাহ্ন

`চোখ ওঠা’ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে দৌলতপুরে, হাসপাতালে যাচ্ছেন না রোগীরা

কুষ্টিয়ার সময় প্রতিবেদক / ৫১ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম: সোমবার, ১০ অক্টোবর, ২০২২, ১১:৩১ পূর্বাহ্ন

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ছড়িয়ে পড়েছে ‘চোখ ওঠা’ রোগ । ঘরে-ঘরে পরিচিত এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন সব বয়সীরা। চোখ ওঠা রোগেরও ভয়ও ছড়িয়েছে চারপাশে। আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার কথা বলছেন চিকিৎসকরা। এদিকে, এই রোগের সুচিকিৎসার ঘাটতি নিয়ে কথা বলছেন স্থানীয়রা। চোখ ওঠায় ব্যবহৃত বিভিন্ন ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে বাজারে। ওষুধ বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীদের দাবি, এসব ওষুধের চাহিদা বাড়ায় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে, ব্যপকভাবে রোগটি ছড়িয়ে পড়েছে।

উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মাহাতব হোসেন জানান, ‘দুই দিন ধরে আমার চোখ উঠেছে। চোখ ওঠার এক দিনের ব্যবধানে আমার ছেলেরও , চোখ উঠেছে। সারাক্ষণ চোখে জ্বালাপোড়া করে।’ একই অবস্থা ফিলিপনগরের ব্যবসায়ী রাজন আলীর, তারাগুনিয়ার স্কুল পড়ুয়া আসিফের পরিবারের তিন সদস্যের । রাজন বলেন, ‘আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের এক কর্মীর প্রথমে চোখ ওঠে। তার চোখের অবস্থা দেখেই ছুটি দিয়ে দিই। কিন্তু পরদিনই আমি আক্রান্ত হই।

এ প্রসঙ্গে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসকরা বলছেন, আক্রান্ত ব্যাক্তি বাইরে বের হলে কালো চশমা ব্যাবহার করবে। চোখে কোনো ভাবেই চুলকানো বা হাত লাগিয়ে ডলাডলি করা যাবে না। একজন আক্রান্ত ব্যাক্তির ব্যবহার করা রুমাল, গামছা, তোয়ালে বা কাপড়চোপড় অন্য কেউ ব্যবহার করবে না। কোন প্রয়োজনে চোখে হাত লাগানোর দরকার হলে হাত সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। জনসমাগম, অনুষ্ঠান, অফিস,শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আক্রান্ত ব্যাক্তি না যাওয়া ভালো।

কনজাঙ্কটিভাইটিস বা চোখ ওঠা রোগ হলে চোখ ফুলে লাল হয়ে থাকে। ব্যথা, জ্বালাপোড়া ও নানান অস্বস্তি অনুভব হয়। প্রথমে এক চোখ আক্রান্ত হয়,পরে অন্য চোখে ছড়িয়ে পড়ে।
এ রোগে চোখ থেকে পানি পড়তে পারে । আলোয় চোখে অস্বস্তি বাড়ে। চোখ থেকে শ্লেষ্মাজাতীয় পদার্থ বের হতে থাকে ও হলুদ রঙের পুঁজ সৃষ্টি হয়। সাধারণত ৭ থেকে ৮ দিনের মধ্যে উপসর্গগুলো কমে আসে। কিন্তু দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়। মণি বা কর্নিয়াতে সাদা দাগ পড়ে যায়। খালি চোখে দেখে বোঝা যায় না। এতগুলো উপসর্গ রোগীর ক্ষেত্রে একসাথে দেখা নাও যেতে পারে। প্রাথমিক অবস্থাতেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা না করালে জটিল অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।

উপজেলা পরিষদ সদর বাজারের চশমার দোকানী নাহিদ বলেন, চোখ ওঠার এবারের মৌসুমে রোগের কারণে কালো চশমা বিক্রয় বেড়েছে, যেসব ক্রেতারা আসছেন তারা অধিকাংশই চোখ ওঠা রোগীর জন্য চশমা কিনতে আসছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, চোখ ওঠা একটি মৌসুমি ভাইরাসজনিত রোগ। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ড্রপ ও ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হতে হবে। এপর্যন্ত হাসপাতালে এই রোগের চিকিৎসা নিতে আসেননি কেউ।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, দৌলতপুর উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামেই চোখ ওঠা রোগী রয়েছে। সাবধানতা অবলম্বন করে চলছে অনেকেই।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো খবর...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর