একদিকে মহামারী করোনা অন্যদিকে নদীতে নেই পানি। এ কারণে কুষ্টিয়ার খোকসার অর্ধশত জেলে পল্লীর মানুষগুলো কাটাচ্ছেন চরম দুর্দিনে। মহা দুশ্চিন্তায় দুবলার জেলেরা। গড়াই পাড়ের কমলাপুর মিয়াপাড়া ও কালিবাড়ি পাড়ার জেলে পল্লীতে অধিকাংশ জেলেরাই জীবন-জীবিকার তাগিদে বাপ-দাদার পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন। তাদের অতি প্রয়োজনীয় চিরচেনা জেলে পল্লীর জেলেদের ব্যবহৃত নৌকা আর জালগুলো এখন বাড়ির চালায় আর ধুধু বালুচরে শোভা পাচ্ছে। অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটছে এই সব জেলেদের।
উপজেলার মৎস্য অফিসের সূত্র জানা যায়, উপজেলায় মোট ৭৩৫ জন জেলে রয়েছেন। এর মধ্যে কার্ডধারী ৫৩৭ জন ও কার্ড নেই ১৯৮ জন জেলের। এ সাড়াও পৌরসভায় জেলে রয়েছে ৭৮ জন এর মধ্যে কার্ডধারী রয়েছেন ৬৪ জন।
বুধবার দুপুরে গড়াই নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা কালীবাড়ি জেলে পল্লী সরজমিনে গিয়েই চোখে পড়ে কর্মহীন জেলেদের নৌকা এবং জালগুলো অলস পড়ে থাকা বীভৎস অবস্থায় রয়েছে। সংসারের টানাপোড়েন জেলে পল্লীর গৃহীনিরা গবাদি পশু পালন করে কোনো মত জীবন যাপন করছে।
কালীবাড়ি জেলে পল্লীতে সরজমিনে গিয়ে কথা হয় শ্যামল হাওলাদারের সাথে ডুকরে কেঁদে এই প্রতিবেদকে বলেন, নিজেদের জীবনের তাগিদে বাপ-দাদার পেশা এখনো ছাড়তে পারিনি। তাই আমাদের অর্ধাহারে-অনাহারে জীবন চলছে। শুষ্ক মৌসুমে গড়াই নদীর ধুঁ-ধুঁ বালির মাঝে পড়ে আছে মাছ ধরা ডিঙ্গি নৌকা আর বাড়ির আঙ্গীনায় ঝুলছে মাছধরা জাল।
তিনি আরও বলেন, বছরের চার মাস গড়াই নদীতে মাছ ধরে জীবন জীবিকা নির্বাহ করলেও বাকী আট মাস বেকার বসে থাকতে হয় জেলে পল্লীর জেলেদের। তারপরেও এখন নদীতে নেই পানি । পাচ্ছি না কোনো সাহায্য সহযোগিতা। পরিবার নিয়ে মানবতার জীবন কাটাচ্ছি আমরা।
উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা রাশেদ হাসান বলেন, তাদের দুরাবস্থার কথা জেলার কর্তৃপক্ষের কাছে জানাবো। সরকারি কোন অনুদান ও সহায়তার বরাদ্দ আসলে অবশ্যই তাদেরকে পৌঁছে দেওয়া হবে।