বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১৪ পূর্বাহ্ন

খোকসা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

মমিন হোসেন ডালিম / ৩৪৮ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম: রবিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ৮:৩৩ পূর্বাহ্ন

কুষ্টিয়ার খোকসায় আমবাড়ীয়া ইউনিয়নের ধোকড়াকোল কুঠিপাড়া মকলুর চরে ধোকড়াকোল গ্রামের ওহাব বিশ্বাস ও তার ছেলে আলাউদ্দিন বিশ্বাস প্রায় ১০ বছর যাবৎ বোরিং বা সেচ পাম্প চালিয়ে আসছে। শুষ্ক মৌসুমে পানীর স্তর নিচে চলে যাওয়ায় তার বোরিং ফেইল করে।

এ অবস্থায় আলাউদ্দিন বিশ্বাস আর একটা ছোট সেচ পাম্প স্থাপন করেন যখন একটা পাম্প বন্ধ হয়ে তখন আর একটা দিয়ে পানি উঠায়। বিনিময়ে তাকে দিতে হত প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা আর এই টাকা গ্রহন করতেন খোকসা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ওয়ারিং ইনেসপেক্টর বুলবুল। কিন্তু হঠাৎ করেই টাকা দিতে একটু গড়মিল হওয়ায় বিলের সাথে জরিমানা করে দেয় বলে জানান আলাউদ্দিন আলী।

এ অবস্থায় তিনি খোকসা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে জরিমানার কারণ জানতে চাইলে তাকে বলা হয় আপনি টাকা পয়সা ঠিক মত দেন না এই জন্য জরিমানা করা হয়েছে সামনের মাস থেকে আরও বেশি করা হবে। আলাউদ্দিন আলী আরো অভিযোগ করে বলেন ভবানীগঞ্জ, গোপগ্রাম,আমলাবাড়ী বাজারে অবৈধ ভাবে ওয়েল্ডীং মেশিন চালাচ্ছে সেখান থেকেও বুলবুল টাকা নেয়, আমি সে কথাও বলেছি এ নিয়ে তাদের সাথে আমার কথাকাটি হয় এক পর্যায়ে তারা আমার সাথে খুব দুর্ব্যবহার করে এবং সামনের মাসে আরও বেশি জরিমানা ও লাইন কেটে দেওয়ার হুমকীও দেয়। এই জন্য আমি ভয়ে বোরিং চালানো বন্ধ করে বসে আছি ।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধোকড়াকোল কুঠিপাড়া মকলুর চরে আলাউদ্দিন আলীর বোরিং থেকে প্রায় ৭০/৮০ বিঘা জমিতে পানি দেওয়া হয় বর্তমানে সেখানে বোরো ধানের চাষাবাদ চলছে। এমতাবস্থায় পানি না পেলে ফসলের মারাত্মক ক্ষতি ও ফসল নষ্ট হওয়ার আশংকা রয়েছে।

এমন চিত্র শুধু মকলুর চরেই নয় উপজেলার জয়ন্তীহাজরা ইউনিয়নের মহিষবাথান গ্রামের জনৈক কৃষক বাবু, তিন বছর যাবৎ এভাবেই তার মূল বোরিং থেকে বাঁশ পুতে তার টানিয়ে প্রায় ৪/৫ শত ফিট দুরে আর একটা সেচ পাম্প বসিয়েছেন।

এমন কাজের জন্য তিনি পল্লী বিদ্যুৎ এর কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছেন কিনা? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলেন হ্যাঁ বিদ্যুৎ অফিসের সাথে কথা বলেই তো তারপর কিছুক্ষন চুপ থেকে বলেন বিদ্যুৎ অফিসের সাথে কথা বলি নাই অবশ্য আবার একটু থেমে গিয়ে বলেন আমি নিজের থেকেই করেছি এখন আমার লাইন কাটা । কৃষক বাবুর এমন দিধা দন্দের কারণ বুঝতে আর বাকি রইল না। আগেই বিদ্যুৎ অফিসের লোক বাবুর নিকট পৌছে এ ব্যাপারে সতর্ক করে দেন । আর এ কারনেই কৃষক বাবুর এই দ্বিধাদ্বন্দ্বের উত্তর। তবে বোরিং মালিক ও বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীর পাল্টাপাল্টি অভিযোগের সত্যতা কতটুকু সেটা তারাই ভালো বলতে পারেন।

কৃষক খালেক কুষ্টিয়ার সময়কে বলেন, এই মাঠে আামার জমি আছে এক বিঘা বিদ্যুৎ এর কারণে আমরা পানি পাচ্ছিনে। ধান ঠিক মত জন্মাতি পারতিছিনে। টাকা দিলে সব ঠিক না দিলেই ঝামেলা হয়।

অন্যদিকে একই অভিযোগ করেন কৃষক কালাম কুষ্টিয়ার সময়কে জানান, গত ১০ বছর যাবৎ বোরিং ঠিক মতই চলছিল আমাদের কোন সমস্যা হয় নাই। কিন্তু এই বছরে ঐ দুই মাসের ঘুষের টাকা দিতে পারে নাই এই জন্য ঐ টাকা বিলের সাথে জরিমানা ধরেছে। আবার বলে দিয়েছে সামনের মাস থেকে জরিমানা হবে ছয় হাজার। বোরিং মালিকসহ আমরা সাধারন কৃষক অফিসে গিছিলাম তারা আমাদের কথা শোনে নাই। ঘাড় ধরে অফিস থেকে বের করে দিতি চাই পুলিশ দিয়ে আমাদের ধরিয়ে দিতেও চাই।

খোকসা পল্লী বিদ্যুৎ সাব-জোনাল অফিসের কর্মকর্তা এজিএম মো. ওমর আলী সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,যে ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন সে একজন দালাল, আমিও আমার অফিসের কোন কর্মচারী এমন কাজের সাথে জড়িত নয়। তারা যেভাবে লাইন নিয়েছে সেটা পল্লী বিদ্যুৎ এর নিয়ম বর্হিভুত মানবিক কারণে তার লাইন এখনও কাটা হয়নি।

তিনি আরো বলেন, সারা বাংলাদেশে পল্লী বিদ্যুৎ এর যদি একজন সৎ লোক থেকে থাকে সে হল আমি। তবে পল্লী বিদ্যৎ এর এই কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী একটা বোরিং এর সংযোগ থেকে আর একটা বোরিং স্থাপন করা বৈধ নয়।

বিগত দুই বছর দায়িত্বে থাকার পরেও কেন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেন নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো খবর...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর