বিএনপি কর্মীকে ধরতে কুষ্টিয়ার স্থানীয় সাপ্তাহিক দ্রোহ পত্রিকার সম্পাদকের বাড়িতে থানা পুলিশ দুই দফায় তাণ্ডব চালিয়েছে। এ ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে স্থানীয় সাংবাদিক মহল।
জানা গেছে, কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা শহর থেকে প্রকাশিত একমাত্র সাপ্তাহিক দ্রোহ পত্রিকার সম্পাদকের বাড়িতে রবিবার (৩ ডিসেম্বর) বেলা ১টার দিকে সাদা পোষাকধারী ৫/৬ জন হকিস্টিক ও মোটা লাঠি নিয়ে প্রবেশ করেন। এ সময় তারা বাড়িটির চারদিক ঘুরে দেখেন। এক পর্যায়ে হকিস্টিক হাতে এক ব্যক্তি খড়ির ঘরে ঢুকে ঘরের বিভিন্ন স্থানে খোজাখুজি করতে থাকেন।
তাদের পকেটে ওয়াকিটকি ও অস্ত্র দেখে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে তাকে বিষটি অবগত করা হয়। প্রায় ১০ মিনিট অভিযানের পর তারা চলে যায়।
এর প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা পর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ পুলিশ সদস্যরা দ্বিতীয় দফায় আবারো অভিযান শুরু করে।
সাপ্তাহিক দ্রোহ পত্রিকার সম্পাদক সম্পাদক তমা মুনসী জানান, কয়েক মিনিট আগে জোহরের নামাজের আযান শেষ হয়েছে। তিনি তখন রান্নার কাজে ব্যস্ত। হঠাৎ করে কয়েকজন অপরিচিত লোক হকিস্টিক ও লাঠি সোটা নিয়ে আমার বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করে। তারা বিভিন্ন স্থানে কাউকে খোজাখুজি করতে থাকে। ইতোমধ্যে আমার স্বামী বাড়িতে ফিরে আসেন। তাদের কাছে অভিযানের বিষয় সম্পর্কে জানতে চান। তারা কোন কথা না বলে আমার বাড়ির খড়ির ঘরে ঢুকে খড়ির গাদার উপর হকিস্টিক দিয়ে পেটাতে থাকে।
এ সময় আমার স্বামী ওসিকে ফোন করেন। উত্তেজিত হয়ে ওসি জানান বিএনপি কর্মী সম্রাটকে ধরতে পুলিশ অভিযান করছে বলে জানায়। কিছু সময় পর পুলিশ ফিরে যায়। এ ঘটনার পৌনে এক ঘন্টা পর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজবীর আহমেদ রাজাসহ দ্বিতীয় বার আমার বাড়িতে আসেন। তারা বাড়ির ভেতরে বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন সময়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়াকে কেন্দ্র করে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তফা হাবিবুল্লার সাথে মতপার্থক্যের সৃষ্টি হয়। তিনি আমার স্বামীকে আটক করে নাশকতার মামলার আসামী করার হুমকি-ধামকিও দিয়ে আসছেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তফা হাবিবুল্লাহ বলেন, নাশকতার মামলার আসামী সম্রাটকে ধরতে তার ভাড়া বাড়িতে অভিযান করা হয়। পরে সে সাংবাদিকের বাড়ির ভিতরে চলে যায়। তাকে ধরতেই সেখানে পুলিশ গিয়েছিল। তবে সেখানে আসামি পাওয়া যায়নি।
সামান্য ঘটনা নিয়ে এতো বিচলিত হওয়ার কিছু নেই বলেও তিনি হুমকি দেন। তিনি ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, নাশকতার মামলার আসামি ধরতে পুলিশ যেখানে সেখোনে অভিযান করতে পারে। সে যদি অপমানিত হয়ে থাকেন তা হলে যেসব লোক উপস্থিত ছিলো তাদের ডাকেন। আমি মাপ (ক্ষমা) চেয়ে নিচ্ছি।
বিষয়টি সহকারী রিটার্নিং অফিসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন বিশ্বাসকে অবগত করা হয়। সাংবাদিকের বাড়িতে পুলিশের অভিযানের কথা শুনে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে তিনি পুলিশের কথা বলে জানাবেন।