শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৩০ অপরাহ্ন

খোকসায় পুলিশের বিরুদ্ধে ভাটা শ্রমিককে চোখ বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ  

নিজস্ব প্রতিবেদক / ২২৬ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম: রবিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৪, ৭:৪৭ অপরাহ্ন

কুষ্টিয়ার খোকসা থানায় রাতভর আটকে রেখে দুই ভাটা শ্রমিকে চোখ বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।গত মঙ্গলবার গভীর রাতে থানা হাজতে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। পরের দিন বুধবার তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। বৃহস্পতিবার ভাটা শ্রমিক সুরুজ শেখ জামিনে মুক্তি পেলেও শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় খোকসা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।বর্তমানে তিনি খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আজ রোববার খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন সুরুজ শেখের সাথে কথা বললে তিনি জানান, নদী ভাঙ্গনে তাদের বসতবাড়ি বিলিন হয়ে গেলে প্রায় ১৫ বছর আগে খোকসার জয়ন্তীহাজরা ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া গ্রামে এসে বাড়ি করেন।

গত সোমবার(১ এপ্রিল) পার্শ্ববর্তী মাজেদার বাড়িতে চিল্লাচিল্লি শুনে সেখানে গেলে জানতে পারেন তার স্ত্রীর বড় বোন ও নজরুলের চাচাতো বোন মাজেদাকে  নজরুল ঢাকা গাজীপুর বসবাসকালে জামিনদার হয়ে চার মাস পূর্বে “পদক্ষেপ” এনজিও থেকে ৯০ হাজার টাকা ঋণ তুলে দেন। ঋন তোলার পর  মাজেদা কিস্তির টাকা না দেওয়ায় এনজিও’র লোকজন নজরুলকে কিস্তির জন্য চাপ দেয়। একপর্যায়ে নজরুল ঢাকা গাজীপুর ভাড়া বাসায় সমস্ত জিনিসপত্র ফেলে রেখে স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন।

নজরুল একাধিকবার এনজিও’র কিস্তি নিয়ে মাজেদার সাথে কথা বলে সুরাহা করতে না পারলে সোমবার মাজেদাকে তার গ্রামের বাড়ি হাজির করে ঢাকায় ফেলে আসা মালামালের টাকা দাবী করেন। কথাবার্তার এক পর্যায়ে মাজেদাকে দিয়ে স্টাম্পে স্বাক্ষর করানো হয় । সেই স্ট্যাম্পে তিনি স্বাক্ষী ও হতে রাজি হন।

পরবর্তীতে মঙ্গলবার বেলা ২ টার দিকে খোকসা থানার এএসআই দেলোয়ার তাকে ও সাব্বির নামে আরেক ভাটা শ্রমিককে থানায় নিয়ে আসেন।

পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন মাজেদার দেবর শাহীন খোকসা থানায় তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ একটি মামলা দায়ের করেন।

একই দিন আনুমানিক রাত দেড়টা থেকে দুইটার মধ্যে তার হাত এবং চোখ বেধে নির্যাতন করে পুলিশ । অসহ্য নির্যাতন সইতে না পেরে একপর্যায়ে পুলিশকে তিনি যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে নিজেই আত্নহত্যা করার কথা জানালেও রেহায় পাননি ওই পুলিশ কর্মকর্তার থেকে। পরের দিন তাদের দুু’জনকে  কোর্টে চালান করে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্তি পেয়ে অসুস্থ অবস্থায় খোকসা হাসপাতালে ভর্তি হন সুরুজ।

খোকসা থানার এএসআই দেলোয়ার হোসেন জানান, সুরুজ আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগের কারণে তাকে ধরে আনা হয়। নির্যাতনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সাইফুল। তিনি রাতে থানায় বাইরে টহলে ছিলেন।

অভিযুক্ত এসআই সাইফুল জানান, ফাঁকা স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক সই করিয়ে নেওয়ার ঘটনায় খোকসা থানায় ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেই মামলায় তাদের চালান ও দেওয়া হয়। নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বিষয়টি কে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেন।

অভিযোগের বিষয়ে খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আন-নূর যায়েদ জানান, নির্যাতনের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। অন্যদিকে এই মামলার আসামি খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছে সেবিষয়ে জানা নেই তার।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো খবর...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর