আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার লক্ষ্যে কুষ্টিয়া জেলার ৪টি আসনের ৪১ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে শুধুমাত্র কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসন থেকেই তুলেছেন ১২ জন। তারা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দপ্তর থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের আওয়ামী লীগের নৌকার মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ, সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রউফ, সাবেক সংসদ সদস্য বেগম সুলতানা তরুন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, কুমারখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান খান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জাহিদ হোসেন জাফর, ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলামের কন্যা ব্যারিস্টার তানিয়া আমির, সুনীল কুমার চক্রবর্তী, সুফি ফারুক ইবনে আবুবকর, শাহিনুজ্জামান, সাংবাদিক অভি চৌধুরী ও মিজানর রহমান।
জানা গেছে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কে মনোনয়ন পাচ্ছেন আর কে পাচ্ছেন না বিষয়টি এখনো অজানা। কিন্তু প্রত্যেক প্রার্থীই মনোনয়ন পাচ্ছেন বলে আশা করছেন। চালাচ্ছেন প্রচারণা, চাচ্ছেন নৌকার পক্ষে ভোট।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্লিন ইমেজের একজনকে প্রতিটি সংসদীয় আসনে বেছে নেওয়া হবে বলে জানান দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। সম্প্রতি গণবভনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটিই জানিয়েছেন তিনি। তবে যাদের বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আছে তাদের মনোনয়ন দেবে না আওয়ামী লীগ। বাদ পড়তে পারেন দলের সঙ্গে দুরুত্ব সৃষ্টি করা এমপিদেরও।
এ ব্যাপারে বর্তমান সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ না থাকলেও আওয়ামী লীগের প্রবীণ ও তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব চরমে বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক নেতা। সম্প্রতি এই দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যেও এসেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচীতে। তার বিরুদ্ধে খোকসা উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শিমুল হোসেন খানসহ আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে মামলা দেয়ারও ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ অনেকটাই এগিয়ে। সূত্র বলছে, কাকতালীয় কিছু না ঘটলে সেই পেতে পারেন দলীয় মনোনয়ন। তার সঙ্গে আওয়ামী লীগও একাট্টা। এলাকায় তার জনপ্রিয়তাও আকাশচুম্বী। খোকসা-কুমারখালীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে তার রয়েছে বিরাট ভূমিকা। তার অদৃষ্টে আছে অদৃশ্য আর্শীবাদও।
কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান আওয়ামী লীগের জন্য নিবেদিত প্রাণ। দলের দুঃসময়ে তার ছিল সাহসী ভূমিকা। তিনিও নৌকার মনোনয়ন পাওয়ার জোর দাবিদার। তবে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ায় সে সম্ভাবনা খুবই কম।
এদিকে দলের দুঃসময়ে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন জাফরও আছেন মনোনয়ন দৌড়ে। আছেন কুমারখালী উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খানও।
তবে ক্লিন ইমেজ রয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য বেগম সুলতানা তরুণেরও। কোনো বিতর্ক না থাকলেও বয়স বিবেচনায় তিনি মনোনয়ন নাও পেতে পারেন।
সূত্র বলছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সংগঠক, ঘোষণাপত্র রচয়িতা এবং বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলাম যদি কুষ্টিয়া-৩ আসন থেকে মনোনয়ন না পান। সেক্ষেত্রে সব সমীকরণই উল্টে কুষ্টিয়া-৪ আসনের টিকিট পেতে পারেন তার কন্যা ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর।