কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারী ইউনিয়ন সমাজ কর্মী বিকাশ কুমার সরকারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিকাশ কুমার সরকারের দূর্নীতির দৌরাত্ম্যে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে ভাতাভোগীদের।
টাকা দিলে সেবা নিশ্চিত আর না দিলেই ভোগান্তির শেষ নেই। ভুক্তভোগীরা যে কোন সেবার জন্য সমাজসেবা অফিসে গেলে এই কর্মচারীকে দিতে হয় চা পানি খাওয়ার টাকা। বয়স্ক বিধবাদের ভাতার কার্ড অনলাইনে নিবন্ধন সহ কার্ড আপডেট করতে যাওয়া ভুক্তভোগীরা হয়রানির শিকার এবং প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০০/৩০০ করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ, টাকা দিলে সহজেই সেবা মিলে, না দিলেই হয়রানী এমন অভিযোগ পৌরসভার ৫,৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের ভাতাভোগীদের।
পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের ভাতাভোগী, সাবেরা খাতুন (৫০) বলেন, ভাতার কার্ড নিয়ে গেলাম সমাজ সেবা অফিসে, সেখান থেকে একজন বলল টাকা আনছেন, আমি বললাম না, তারপর সে বলল, বিকাশের কাছে যান, তারপর, তাকে দেড়শ টাকা দেওয়ার পর সীল মেরে আমার বই ফেরত দেয়। একই অভিযোগ, 8 নং ওয়ার্ডের বৃদ্ধ রবিউল ইসলাম (৫৫), ও সেলিনা খাতুন (৬০) সহ আরও অনেকের ।
ভাতাভোগী সেলিনা খাতুনের সংগে সংবাদিকদের কথা বলার সময় এগিয়ে আসেন আর একজন ভাতাভোগী কাইয়ুম বিশ্বাস (৬৫), সাংবাদিকদের দেখে তিনিও হয়রানীর শিকার হয়েছে বলে জানান।এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি প্রথম বার কাগজ পত্র জমা দিয়েছি, তার কিছুদিন পরে আবার গেছি তখন সে বলল, আপনার কাগজ পত্র হারিয়ে গেছে।
আমি আবার পয়সাকড়ি খরচ করে কাগজ পত্র জমা দিছি, এইবার বই দিয়েছে ঠিকই কিন্ত আমি সোনালী ব্যাংক খোকসা শাখার আওতাভুক্ত আর আমাকে পাঠাইছে শোমসপুর শাখায়, তারা আমার বই দেখে বলল আপনি অফিসে গিয়ে ঠিক করে নেন, তো সেখান থেকে আমি আবার সমাজ সেবা অফিসে এসে মহিলা অফিসারে কাছে যায়, তিনি তখন ঐ ব্যক্তিকে ডেকে বেশ রাগ করে বললেন, তুমি এইভাবে মুরব্বি মানুষকে ঘুরাইছ কেন? যাইহোক তারপর আমি বই ঠিক করে নেওয়ার সময় সে বলছে আপনি আমার অফিসারকে বললেন কেন? আমি বললাম, আমি এই ভাবে ভোগান্তী পোহাচ্ছি, তাকে তো বলবই।তখন সে বলছে কিছু পয়সাকড়ি না দিলে কি, এই সব কাম তাড়াতাড়ি হয়। এই রকম আরও অনেক ভাতাভোগী তাদের ভোগান্তীর কথা সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন।
উল্লেখ্য, গত শনিবার কুষ্টিয়ার খোকসা পৌরসভা চত্বরে বয়স্ক বিধবা ভাতা ভোগীরা ভাতার কার্ড হালনাগাদ করতে ভাতাভোগীরা ভীড় জমায় খোকসা পৌরসভা চত্বরে। সেখানে বয়স্ক ভাতাভোগীদের সাথে দুর্বব্যহার এবং কয়েকজন মহিলা ভাতাভোগীদের ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় বিকাশ কুমার সরকার, সেটার প্রতিবাদ করে পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসেম আলী।
ঐ ঘটনার জেড়ে তাকে মারধরের অভিযোগে, কাউন্সিলর হাসেম আলীর বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেন ইউনিয়ন সমাজ কর্মী, বিকাশ কুমার সরকার। তবে, মোছাঃ কাজলী খাতুন (৪০), নামে এক ভাতাভোগী মহিলা শ্লীলতাহানীর অভিযোগ এনেছেন বিকাশ কুমার সরকারের বিরুদ্ধে, এমনটাই দাবী করেছেন ঐ মহিলা।
ইউনিয়ন সমাজ কর্মী, বিকাশ কে মারধর করা ও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে, খোকসা উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা, শাম্মী আকতার যুথী বলেন, কারও সাথে আমাদের বিরোধ নেই, সে নিজেই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
তবে একজন দায়িত্বরত সরকারী কর্মচারীর গায়ে হাত তোলাটা উচিৎ হয়নি । অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আমি পাইনি পেলে উর্ধ্বতন কর্তপক্ষ কে জানানো হবে। এদিকে বিকাশের করা মামলায় কাউন্সিলর হাসেম আলী পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।তার বিরুদ্ধে করা মামলা নং (৯), ধারা (৩৩২) (৩৩৩) (৩৫৩) ( ৫০৬) দন্ডবিধি।