কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় বহু বছর ধরে ভেজাল গুড়ের কারবার করে আসছে একটি প্রভাবশালী চক্র, তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। হয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। একাধিক বার সীলগালা করা হয়েছে কারখানা। সর্বশেষ (৩১ শে জুলাই, ২০২১) শনিবার রাতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সবুজ হোসেনের নেতৃত্বে কুষ্টিয়া র্যাব ১২ এর একটি দল অভিযান চালায়। এবং দুজন আটক করে।
এর আগে (৩রা, এপ্রিল ২০২১ )ইং, তারিখে এনএসআই’র অনুসন্ধানী দলের অনুসন্ধানের ভিত্তিতে আখের গুড় তৈরীর কারখানায় অভিযান চালায় খোকসা উপজলার তৎকালীন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইসাহক আলী। নিন্মমানের চিনির সাথে মানব দেহের জন্য ক্ষতিকারক রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে ভেজাল আঁখের গুড় তৈরীর সময় হাতেনাতে আটক করা হয় প্রতিষ্ঠানের প্রধান দিলীপ বিশ্বাস সষ্ঠী ও তার ভাই রাজকুমার বিশ্বাসকে। এবং ভোক্তা অধিকার আইন ২০১৯ এর ৪৩ ধারায় একলাখ টাকা জরিমানা করা হয় এবং একটি মামলা রুজু করা হয়, যার নম্বর ৭।
এছাড়াও ২৭ শে এপ্রিল ২০২০ ইং, দিবাগত রাতে খোকসা থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান চালায় এই ভেজাল গুড়ের কারখানায় এবং সেখানে দেখা যায় নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরীকৃত গুড় টিনের কন্টিনারে সাজিয়ে রাখা হয়েছে পাচার করার জন্য। পরবর্তীতে (২৮ এপ্রিল ২০২০) ইং, তৎকালীন খোকসা থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ জহুরুল আলমের নির্দেশে খোকসা থানার এসআই সোহেল বাদী হয়ে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (গ), ১ (ক),(খ) ধারায় ৩ দোজালী ব্যবসায়ীকে আসামী করে নিয়মিত মামলা দায়ের করে।
মামলার প্রেক্ষিতে খোকসা থানা পুলিশ মামলার ৩ আসামী দোজালী ব্যবসায়ী নিত্য গোপাল বিশ্বাস , দিলীপ বিশ্বাস ষষ্টী এবং শেখ আলমাছ হোসেন কে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেন।
এর পরেও অদৃশ্য শক্তির বলে বারবার পাড় পেয়ে যায় ভেজাল কারবারিরা। এবং পূনরায় শুরু করে তাদের ভেজাল কারবার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খোকসা উপজেলা সদরের বাজারের ডাকবাংলো রোডে মেসার্স দিলীপ ট্রেডার্স ও কালীবাড়ি রোডে নিত্য গোপালের ভেজাল গুড়ের কারখানায় চলছে ভেজাল উৎপাদন। কমলাপুর রোডে নদীর তীরে অপর একটি কারখানা বন্ধ পাওয়া যায়।
চিনির সাথে নাম মাত্র গুড়ের সংমিশ্রণে মানব দেহের ক্ষতিতকারক ক্যামিকেল মিশিয়ে জমাট বাঁধিয়ে বাজারজাত করা হচ্ছে।
এ বিষেয়ে, খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ আশিকুর রহমান বলেন, ২০২২ এর শুরুতে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে একটা অভিযান পরিচালনা করেছিলাম, এখন যদি কেউ আবার করে থাকে বি এস টি আই পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখবে যদি কোন সমস্যা থেকে থাকে তারা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে।
খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন বিশ্বাস বলেন, ইতিপূর্বে এখানে মোবাইল কোট পরিচালনা করা হয়েছে তাদের কে বড় অংকের টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জেলা থেকে ম্যাজিস্ট্রেট এসে ভেঙে দিয়েছিলো তাদের কারখানা। তবে এখন যদি চালু হয়ে থাকে এ বিষয়ে আমার জানা নেই।ডিসি স্যারের সাথে কথা বলে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।