রাজনৈতিক টানাপোড়েনে কুষ্টিয়ার খোকসার আওয়ামী লীগের বারবার নির্বাচিত সভাপতি বাবুল আখতারের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ উঠেছে, রাজনৈতিক সুযোগ নিয়ে তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে সেনাবাহিনীর এক লেফটেন্যান্ট কর্ণেলের ছোট ভাই খোকসা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনাকে নিন্দা জানিয়ে একাট্টা হয়েছে খোকসা উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠন।
আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, উপজেলার বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নের কাজে বরাবরই বাধা দিয়ে আসছিলেন ওই সেনা কর্মকর্তার ভাই আরিফ রহমান তপু। গ্রামীণ শিক্ষার উন্নয়নের বিষয়টি আমলে নিয়ে বিদ্যালয়টির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও বেতবাড়িয়া ইউনিয়ন থেকে বারবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান বাবুল আখতার ওই সেনা কর্মকর্তার ভাইকে অনুরোধ করেন ঝামেলা মিটিয়ে নিতে। কিন্তু দেশের একটি বাহিনীর বড় কর্মকর্তার অহমিকায় তিনি বিদ্যালয়ের উন্নয়নকাজের কোনো তোয়াক্কা করেননি। উল্টো এলাকার ত্যাগী, জামায়াত-শিবিরের দ্বারা নির্যাতিত জনপ্রিয় এই জনপ্রতিনিধির নামে ঠুকে দেন একটি হয়রানিমূলক মামলা। মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে সেনা কর্মকর্তার বাড়িতে হামলার। তবে এ মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ ১০ জন জামিন পেয়েছেন।
তবে কুষ্টিয়া আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু সাঈদ কুষ্টিয়ার সময়কে বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি মামলায় জামিন পেয়েছেন। এই মামলাটি একটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মামলা।
জানা গেছে, বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠ সম্প্রসারণ, নতুন ভবন নির্মাণসহ নানা উন্নয়নমুখী উদ্যোগ নেয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রস্তাবিত ওই ভবনটির কিছু সামান্য অংশ সেনা কর্মকর্তা আতিকুর রহমান ও বিএনপি নেতা টেন্টুর জমির সীমানায় ঢুকে যায়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফায় দফায় বৈঠকে স্কুলের উন্নয়নের স্বার্থে সামান্য সেই অংশ কেনার প্রস্তাব দেন বিদ্যালয়টির সভাপতি বাবুল আখতার।
কিন্তু সুন্দর একটি প্রস্তাবকে বাড়িতে হামলা বলে চালানোর চেষ্টা করেন ওই সেনা কর্মকর্তার ছোটভাই আরিফ। যিনি বিতর্কিত ওই মামলার বাদি।
মামলার বাদী আরিফ রহমান তপু জানান, তাদের জমিতে স্কুলের ভবন করায় বাধা দেওয়ায় প্রতিপক্ষরা তার বাড়িতে হামলা করে।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল আখতার কুষ্টিয়ার সময়কে বলেন, আমি সবসময়ই শিক্ষার প্রসারে কাজ করে গিয়েছি। শিক্ষার উন্নয়নে আমি অনেক ছাড়ও দিয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার প্রসারে আমাদেরকে কাজ করতে বলেছেন। আমি আমার এমপির নির্দেশমতে উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়নসহ শিক্ষার মান বৃদ্ধিতে কাজ করছি। আর এটা করতে গিয়ে যদি আমাকে মামলা খেতে হয় তাহলে মানুষ আর শিক্ষার উন্নয়ন নিয়ে কাজ করবে না।
হামলার বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, দুই বছর আগে গ্রাম্য শালিসে এই জমি সংক্রান্ত রায় হয়। কিন্তু সেনা কর্মকর্তা সে রায় মানেননি। আর এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা ওই সেনা কর্মকর্তার বাড়িতে গিয়েছিল বোঝানোর জন্য।