কুষ্টিয়ার খোকসায় মাছ চুরির অভিযোগে জসিম উদ্দিন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যায় অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বিশ্বাসসহ ছেলে ও ভাতিজারদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) বিকাল ৪ টায় উপজেলার বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে নিহতের পরিবার রতনপুর গ্রাম থেকে বিক্ষোভ মিছিল বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বাসস্টান্ডে এসে মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে নিহত জসিম উদ্দিন শেখের ভাই মো. হাসেম শেখ মামলার বাদী বক্তব্যে বলেন, সন্ত্রাসী, বিভিন্ন অপকর্মের মদদদাতা খোকসা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী বিশ্বাসসহ তার ছেলে ও পোষা বাহিনীদের নিয়ে মিথ্যা চুরির অভিযোগ আমার ভাইকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করেছে।
এছাড়াও আসন্ন আগামী ইউপি নির্বাচনে আমি এই ওয়ার্ডের একজন মেম্বার প্রার্থী। আমি যাতে কোন অবস্থাতেই দাঁড়াতে না পারি সেজন্য শত্রুতা করে আমার ভাইকে হত্যা করেছে।
তিনি আরো বলেন, হত্যাকাণ্ডের ৪৮ ঘণ্টা পার হয়ে গেল পুলিশ প্রশাসন এখন পর্যন্ত চিহ্নিত চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়নি। ইউপি চেয়ারম্যানসহ অন্যন্যা আসামীদের গ্রেপ্তারপূর্বক আইনের আওতায় এনে ফাঁসি কার্যকর করবে বলেও তিনি দাবি জানান প্রশসানের কাছে।
এ সময় অন্যানদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, তৌহিদুল ইসলাম জুয়েল, ওলিদ, রাকিব, ওয়াসিম, সাইফুর রহমান জিকু, নিহতের ছোট বোন ঋতু প্রমুখ।
অন্যদিকে, মানববন্ধনে উপস্থিত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হুসাইন মো. এমদাদুল হক জানান, হত্যা মামলার অভিযুক্ত আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য জোর অভিযান চলছে। যতদূত সম্ভব আসামীদের গ্রেপ্তার করে আইনের হাতে সোপর্দ করা হবে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মোঃ আশিকুর রহমান জানান, নিহত জসীম উদ্দীন হত্যা মামলার এজাহারের দুই আসামিকে ঘটনার দিন গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকী আসামিদের গ্রেফতারেরে চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ, মাছ চুরির অভিযোগে জসিম উদ্দিন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠে ইউপি চেয়ারম্যান ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (১৫ জুন) ভোরে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।
জসিম উদ্দিন উপজেলার রতনপুর গ্রামের রওশন আলীর ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান। তিনি বলেন, মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার খোকসা ইউনিয়নের আইয়ুব আলী বিশ্বাসের বাড়ির পাশের পুকুর থেকে মাছ চুরি করতে যায় জসিম উদ্দিন। বিষয়টি জানতে পেরে তাকে আটক করে তারা। এরপর তাকে বেধড়ক মারধর করে। অতিরিক্ত মারধর এবং মাথায় বড় ধরনের আঘাতের কারণে তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তার আশরাফ আলী জানান, গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সকাল ৬টা ৩৫মিনিটে ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এখানে নিয়ে আসার ১৫ মিনিট পর জসিমের মৃত্যু হয়। তাকে অক্সিজেন দেওয়াসহ প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া শুরু করা হয়েছিল। এ অবস্থায় তিনি মারা যায়।