কুষ্টিয়ার খোকসার মাশিলিয়া গ্রামের আনছার আলী মোল্লার পুত্র সুনামগঞ্জের দোয়ারা বাজারের সোনাপুর এস, ডি পি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (ইসলাম ধর্ম) নাজমুছ ছালেহীনের বিরুদ্ধে চাকরি দেবার নাম করে ও ব্যবসা করার জামানতের নাম করে খোকসা উপজেলার ১০ যুবকের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাতের করেছে। একটি প্রতারনা মামলায় গত ৮ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন নাজমুছ সালেহীন। গত ৮ অক্টোবর একজন নিকট আত্মীয়ের সহযোগীতায় মোটা অংকের অর্থ ব্যায় করে জামিনে মুক্তি পান নাজমুছ সালেহীন। মুক্তি পাওয়ার পর থেকে প্রতারিত যুবকদের টাকা ফেরত না দিয়ে পুনরায় তাদের নানা ভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে চলেছে প্রতারক নাজমুছ সালেহীন।
প্রতারক নাজমুছ সালেহীন এখন খোকসার শাহেদ নামে পরিচিত হয়েছে। নাজমুছ সালেহীন গ্রেপ্তারের পর থেকেই একের পর এক তার প্রতারণার কাহিনী উঠে আসতে শুরু করে।
প্রতারিত যুবকেরা জানিছে, কারো কাছ থেকে চাকরি দেবার নাম করে অথবা ব্যবসা করার জামানতের নাম করে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে খোকসার শাহেদ খ্যাত এই নাজমুছ ছালেহীন। ৪২ বছর বয়সী নাজমুছ ছালেহীন খোকসা উপজেলার মাশিলিয়া গ্রামের আনছার আলী মোল্লার ছেলে। একই সাথে নাজমুছ ছালেহীন সুনামগঞ্জের দোয়ারা বাজারের সোনাপুর এস, ডি পি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে়র সহকারী শিক্ষক (ইসলাম ধর্ম) হিসেবে কর্মরত। এছাড়াও সুনামগঞ্জ সদরের বিহারী পয়েন্টে তার হোমিও প্যাথিক চিকিৎসা কেন্দ্র দোকান রয়েছে।
জানা গেছে, নাজমুছ ছালেহীন বৃটিশ এর বনায়ন, এর এডুকেশন এন্ড আইসিটি সমন্নিত প্রকল্প প্রধান হিসেবে পরিচয় দেয়। অভিযোগ উঠেছে, বিভিন্ন জায়গায় চাকরি দেবার কথা বলে ও তার সাথে ব্যবসা করার জামানতের কথা বলে নাজমুছ ছালেহীন খোকসার ১০ যুবকের জনের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ ব্যপারে তার নামে খোকসা থানায় দুইটি মামলা দায়ের হয়েছে। একটি প্রতারণার মামলায় গত ৮ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেফতার করে সিআইডি পুলিশ। নাজমুছ সালেহীন গ্রেপ্তারের পর থেকে তার বিরদ্ধে একের পর এক প্রতারণার কাহিনী বেরিয়ে আসছে। একমাস জেল হাজতে কাটানোর পর গত ৮ অক্টোবর একজন নিকট আত্মীয়ের সহযোগীতায় মোটা অংকের অর্থ ব্যয় করে জামিনে মুক্তি পান নাজমুছ ছলেহীন। মুক্তি পাওয়ার পর থেকে প্রতারিত যুবকদের টাকা ফেরত না দিয়ে পুনরায় তাদের নানা ভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে চলেছে প্রতারক নাজমুছ ছলেহীন।
মামলার বাদী খোকসার নিশ্চিন্তবাড়ীয়ার মোহাম্মদ আলীর ছেলে শামীমুল ইসলাম জানান, ব্যবসা করার কথা বলে নাজমুছ ছালেহীন তার কাছ থেকে জামানত বাবদ দফায় দফায় মোট সাড়ে ৬ লাখ টাকা নিয়েছে। বিভিন্ন সময়ে তার কাছে জামানতের টাকা ফেরত চাইলে তালবাহানা করে এই টাকা দেয় না।
এ দিকে অনুসন্ধানে জানা গেছে, সিলেটের হাফিজ মোস্তাক আহমদ এর কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নিয়েছে নাজমুছ ছালেহীন। আর খোকসার এস এম আনোয়ারের কাছ থেকে সাড়ে ৪ লাখ, আব্দুল লতিফ এর কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা, সাজিদুল ইসলাম এর কাছ থেকে ২ লাখ, মনিরুজ্জামান এর কাছ থেকে ২ লাখ এবং হাবিবুল আলম মুর্শিদ এর কাছ থেকে ১৩ লাখ ২০ হাজার টাকা, সিরাজুলের কাছ থেকে ২৯ লাখ ২৯ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সিরাজুল এ বিষয়ে কুষ্টিয়া আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
এছাড়াও প্রতারনার মাধ্যমে বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নাজমুছ ছালেহীন এসব টাকায় একটি এনজিওতে খাটান বলে জানা গেছে।
এ ব্যপারে প্রতারক নাজমুছ সালেহীনের বাবা আনছার আলী মোল্লা বলেন, আমার ছেলে নাজমুছ সালেহীনের সাথে বেশ কিছুদিন কোন প্রকার যোগাযোগ নেই। আমার ছেলের কাছে যারা টাকা পাবেন তারা বেশ কয়েকজন আমার কাছে এসেছিল।
এ বিষয়ে মুটোফোনে মোহাম্মদ নাজমুছ ছলেহীন সাথে কথা হলে তিনি বলেন, অভিযোগের বিষয়ে কিছুই জানেন না। এর আগেও একই অভিযোগে মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলো কি না এমন প্রশ্ন করলে তিনি কোন উওর না দিয়ে উল্টো এই প্রতিবেদকে প্রশ্ন করে ব্যস্ততা দেখিয়ে ফোন কেঁটে দেন।