মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৯ অপরাহ্ন

খোকসার উপকারাগার ৪০ বছরেও দেখেনি কয়েদির মুখ!

ওবাইদুর রহমান আকাশ / ১৩১৯ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম: সোমবার, ১ মার্চ, ২০২১, ৫:৫৬ পূর্বাহ্ন

প্রতিষ্ঠার ৪০ বছর পেরিয়ে গেলেও কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার উপকারাগার পায়নি কোনো কয়েদি। কয়েদি না থাকলে কী হবে; কারাগারের কারারক্ষীর কক্ষগুলো দখল করে রেখেছে ছাগল আর পুরুষ কয়েদির জায়গায় গরুর বসবাস। তবে, কিশোর অপরাধ দমনে কিশোর শোধানাগার করার কথা থাকলেও বাস্তবে এর ছিটেফোটাও চোখে পড়েনি। সমাজসেবা অফিস বলছে, জটিলতায় বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।

জানা গেছে, আশির দশকে দেশের ১৭ জেলায় ২৩টি উপকারাগার নির্মাণ করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসাইন মুহম্মদ এরশাদ। এর মধ্যে ছিল কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার অরক্ষিত এই উপকারাগারটি। কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশেই পৌর এলাকার ২ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত। এই উপকারাগারটিতে রয়েছে একটি প্রবেশপথ, দুটি কয়েদি রাখার হলরুম, দুটি সাক্ষাৎকার কক্ষ, একটি স্টোর রুম, দুই কক্ষবিশিষ্ট একটি অফিস রুম আর তিন কক্ষবিশিষ্ট একটি কোয়ার্টার। রয়েছে বেশ কয়েকটি টয়লেটও।

প্রায় ১২ দশমিক ২ একর জমির উপর আশির দশকে অত্যন্ত সুরম্য প্রাচীর বেষ্টিতে নির্মাণ করা হয় কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় উপকারাগারটি। দীর্ঘদিন কারাগারটি অরক্ষিত অবস্থায় থাকলেও ২০১৮ সালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে বর্তমানে কারাগারটি নিয়ন্ত্রণ চলে যায় জেলা সমাজসেবা কার্যালয়। সেখানে সমাজসেবা কার্যালয়ের একজন স্টাফ সপরিবারে বসবাস করেন। তবে স্থানীয়রা চান কারাগারটির যথাযথ ব্যবহার।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, প্রবেশপথে কারারক্ষী থাকার কথা থাকলেও রয়েছে দুইটি ছাগল। মূল ফটকে প্রবেশ করতেই বাম দিকে চোখে পড়বে মহিলা কয়েদির ওয়ার্ড; সেটিও ইট আর বাটমে ভরপুর। ভবনটির একটু সামনে গেলেই পুরুষ ওয়ার্ড। সেখানে রয়েছে কয়েকটি গরু আর গোবর। পাশেই রয়েছে মুরগি পালনের ছোট একটি কক্ষ। হাঁস, মুরগি, গরু আর ছাগল পালনের খামার হিসেবেই বর্তমানে কারাগারটি ব্যবহার করছে জেলা সমাজসেবা অফিসের একজন নাইট গার্ড। দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দেয়াল থেকে খসে খসে পড়ছে ইট-সিমেন্ট। দরজা জানালার কাঠগুলো অনেক আগেই হারিয়ে গেছে। কারাগারের বাইরে অফিস স্টাফদের জন্য নির্মিত তিন কক্ষবিশিষ্ট কোয়ার্টারটি অনেক আগেই দখল করে নিয়েছে স্থানীয়রা।

কুষ্টিয়া জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক রোকসানা পারভীন বলেন, উপকারাগারটি নানা জটিলতায় আজো চালু হয়নি, তবে প্রতীকি মূল্যে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেল সুপার তায়েফ উদ্দিন মিয়া বলেন, কিশোর অপরাধ দমনে এই উপকারাগারটি কিশোর শোধনাগার বা উন্নয়ন কেন্দ্রে রূপান্তিত করে সমাজসেবা কার্যালয়ের অধীনে দেয়া হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো খবর...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর