কুষ্টিয়ার খোকসার উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের নবম শ্রেনীর ছাত্রী মিনুকে জোর করে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার দাদা ও দাদির বিরুদ্ধে। এঘটনার পরে মিনু তার প্রতিবেশী মামিকে সাথে নিয়ে খোকসা থানায় গেলে থানার দায়িত্ব প্রাপ্ত অফিসারকে বিষয়টি জানালে গত বুধবার রাতেই পুলিশ ছাত্রীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মোবাইল কোর্টে কথিত বর নূর হোসেনকে দুই সপ্তাহ ও দালাল রমজানকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেন।ওই সময় ছাত্রীর দাদি ও দাদা আত্মগোপন করে।বৃহস্পতিবার সকালে দন্ডপ্রাপ্তদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
দন্ডপ্রাপ্ত নূর হোসেন কুমারখালী উপজেলার নন্দিগ্রাম-ঘাসখাল গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। দালাল রমজান একই উপজেলার গোপালপুর গ্রামের জামাল শেখের ছেলে।
মিনু অভিযোগ করে বলেন, বুধবার সকালে তাকে জোর করে পাশ্ববর্তী উপজেলার কুমারখালীর ঘাসখাল গ্রামে নিয়ে গিয়ে বাল্য বিয়েতে বসতে বাধ্য করায় তার দাদা-দাদি।বিয়ের কয়েক ঘন্টা পরেই কথিত বর নূর হোসেন (২৫), বিয়ের দালাল রমজান আলী ও মিনুকে তার বাবার বাড়ি খোকসার মির্জাপুরে নিয়ে আসেন দাদা আলাউদ্দিন ও দাদি রেশমা খাতুন।
ছাত্রীর মা নাজমা খাতুন বলেন, দালালের খপ্পরে পরে তার শ্বশুর শ্বাশুড়ি জোর করে মেয়েকে নিয়ে গিয়ে বাল্যবিবাহ দিয়ে তারা আমাদের বিপদে ফেলেছেন।মেয়ে পড়তে চায়।আমরাও মেয়েকে পড়াতে চাই।আমাদের নিজের কোন জমি নেই। স্বামী কাজ করেন তাই দিয়েই তাদের সংসার চলে।
মিনু বলেন, বাবা মা’র ইচ্ছার বিরুদ্ধে দাদা দাদি তাকে জোর করে বিয়ে দিয়েছে। বিয়ের দুই ঘন্টা পর বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়। এই সুযোগে সন্ধ্যায় প্রতিবেশী এক মামির কে সাথে নিয়ে থানায় গিয়ে হাজির হয়। বিষয়টি তিনি থানার দায়িত্ব প্রাপ্ত অফিসারকে জানালে রাতেই অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। প্রশাসন তাকে সাপোর্ট করেছে ন্যায় বিচার পেয়ে খুশি মিনু।
খোকসা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোস্তফা হাবিুল্লাহ জানান, ছাত্রীটি তার কাছে আসার সাথে সাথে তিনি ব্যবস্থা গ্রহন করেন। ছাত্রী ও ছেলে পক্ষের কথা শুনে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন বিশ্বাস জানান, ছাত্রীটির বাবা মা বিয়েতে রাজি না। কিন্তু দাদা দাদি আর দালালে কাজটি করেছে। ঘটনা স্থলে গিয়ে উভয় পক্ষের কথা শুনে বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনে সাজা দেওয়া হয়েছে।