কুষ্টিয়ায় খোকসায় নার্সের ভুলে মাত্র তিন মিনিটের ব্যবধানে দুইবার করোনা টিকা নেওয়া বাশারুজ্জামান সুস্থ্য আছেন। এ ঘটনায় ওই নার্সকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে পূর্ব নির্ধারিত ডিউটি শিডিউল অনুযায়ী টিকা কেন্দ্রে ওই নার্সের দায়িত্ব শেষ হয়েছে।
খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা টিকাদান বুথে কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্স শামিমা ওরফে শারমিন টিকা নিতে আসা বাশারুজ্জামান (৩৮) কে তিন মিনিটের ব্যবধানে দুইবার টিকাপুশ করেন। তাও আবার বাম হাতের মাসুলের একই স্থানে। ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার দুপুরে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিনটি বুথের একটিতে। এ দিন এ কেন্দ্রে বুথগুলো থেকে প্রায় ৩৪০ জনকে করোনা টিকা দেয়া হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামরুজ্জামান সোহেল বলেন, শনিবার (৩১ জুলাই) অফিস খুললেই ওই নার্সকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হবে। জবাব সন্তোষজনক না হলেই তদন্ত কমিটিও করা হতে পারে।
শুক্রবার (৩০ জুলাই) সকালে খোকসা পৌর এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডে বুজরুখ মির্জাপুরের শহীদুজ্জামানের ছেলে ভুক্তভোগী বাশারুজ্জামানের খোঁজ-খবর নিয়ে তার গ্রামে যাওয়া হয়। সকাল ১০টায় পাকা রাস্তা দিয়ে প্রতিবেশি চাচার সাথে গল্প করতে করতে নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন বাশারুজ্জামান। দূর থেকে হাত ইশারায় সুস্থ থাকার কথা জানালেন। বলেন, রাতে এক সময়ে তার মধ্যে ভয়ের সৃষ্টি হয়েছিল। তবে কোন পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হয়নি। সকালে নিজের গরুর ফার্মে গিয়েছিলেন। কাজও করেছেন।
তিনি দাবি করেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বুথে কর্তব্যরত স্টাফ নার্স শামিমা ওরফে শারমিনের ভুলের কারণেই তাকে দুইবার করোনা টিকা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া তার নিজের অনভিজ্ঞতাকেও কারণ হিসেবে মানলেন।
তিনি বলেন, রেজিস্ট্রেশন করার সময় ভুল করে তাকে শোমসপুর ইউনিয়ন এলাকা বাসিন্দার বলে চালিয়ে দেয় কম্পিউটারের দোকানি। টিকা নিতে গিয়ে দ্বিতীয় বার নার্সের ভুলের শিকার হন।
ভুল টিকা নেয়া যুবকের প্রতিবেশি খোকসা পৌর এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডের টিপু সুলতান বলেন, সারাদেশের মানুষের জন্য টিকা। কিন্তু এভাবে অপব্যবহার হলে চলবে না। স্বাস্থ্য প্রশাসনকে সজাগ হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
অভিযুক্ত স্টাফ নার্স শামিমা ওরফে শারমিনের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। তাকে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত সুপারভাইজার কনিকা সেটে জানান, প্রথম ডোজ টিকা দেওয়ার পর যুবককে বুথ থেকে নার্স শামিমাই বের করে দেয়। পরে আবার যুবক দ্বিতীয় দফায় ঢুকে পড়ে এবং টিকা নেয় বলে ওই নার্স তাকে জানিয়েছে।
খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. কামরুজ্জামান বলেন, এটা একটা ভুল। ভুলবশত দুইবার টিকা নেয়া বাশারুজ্জামানের প্রথম ডোজ একটু বেশি হয়েছে। তবে এটাতে মারাত্বক ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। তবে তাকে নির্দিষ্ট সময়েই টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে।
তিনি ভুল স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা কড়া নজরদারি রাখছেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) রাতে কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেছিলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনাটি ঘটেছে। কর্তৃপক্ষের এ ঘটনার দায় এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি জানার সাথে সাথে তিনি সংশ্লিষ্টদের মৌখিকভাবে কড়া সতর্ক করেছেন বলেও জানিয়েছিলেন।