গত ১১ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ার কয়েকটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ও তার পরিবারকে জড়িয়ে প্রকাশিত সংবাদটিকে মিথ্যা দাবি করেছেন ভূক্তভোগী মোস্তাফিজুর রহমান। পাশাপাশি ওই সংবাদটির প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
এক প্রতিবাদলিপিতে তিনি বলেন, আমি মোস্তফা মো. মোস্তাফিজুর রহমন খোকসা উপজেলার শোমসপুর ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা। আমি চাকরির প্রয়োজনে ঢাকা শহরে অস্থায়ীভাবে বসবাস করছি এবং গ্রামে আমার অসুস্থ্য বাবা-মাকে নিয়ে আমার ছোট ভাই মেহেদী হাসানুর রহমান স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।
গত ১১ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ার কয়েকটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে ‘খোকসায় ব্যবসায়ীর বসতভিটা দখলের চেষ্টা অতঃপর হুমকি’ শীরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত ওই সংবাদটি পুরোটাই মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট, বিভ্রান্তিমূলক এবং কুরুচিপূর্ণ। যা অর্থের বিনিময়ে মিথ্যা স্বাক্ষী সাজিয়ে অবৈধ পন্থায় আমাদের জমি দখলের দুরভিসন্ধি চক্রান্ত। আমি আমার পরিবারের পক্ষ থেকে এই সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
প্রকাশিত সংবাদটি সম্পর্কে আমি একটু পরিষ্কার করতে চাই। কুমারখালীর স্থায়ী বাসিন্দা সাজেদুর রহমান মুকুল দাবি করেছেন আমার পিতা হাজী লুৎফর রহমানের কাছ থেকে রুবিনা রহমান নামের এক নারী ২০১৮ সালের ২৮ মার্চ সমশপুর মৌজার আর. এস ১৫৭৭ দাগের .০৬৫০ একর জমি ক্রয় করেছেন। অথচ ওই সময় আমার বাবা গুরতর অসুস্থ ছিলেন। তখন আমার পিতা হাজি মোঃ লুৎফর রহমান গুরুতর অসুস্থ ছিলেন। এখনো তিনি ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না এবং হাটাচলা করতে পারেন না। এটা নিয়ে এর বেশি কিছু আমার বলার নাই। এ ব্যাপারে আমি বিজ্ঞ আদালতের শরনাপন্ন হয়েছি। বিজ্ঞ আদালত আমাকে যে রায় দিবে আমি তা মেনে নিবো। বিষয়টি বিচারাধীন বিধায় এ ব্যাপারে সংবাদ প্রকাশ কতটুকু আইনসিদ্ধ, সেটিও পরিষ্কার হওয়ার দরকার।
সংবাদের একটি অংশে দাবি করা হয়, আমি নাকি মুকুলের বাড়ির সামনে গাছ লাগিয়েছি। আমার প্রশ্ন, আমি যেখানে গাছ লাগিয়েছি, সেটি আসলে কোন জায়গার! তার এল আকৃতির বাড়ির সামনে একটা বারান্দা, ওঠান, চাপকল এবং টয়লেট রয়েছে। এতো কিছু থাকার পরও কেনো তার বাড়ির পিছনকে সামনে বলছেন, এটা পরিষ্কার নয়। আমি আমার পৈত্তিক সম্পত্তিতে গাছ লাগিয়েছি। এই জমি কখনোই তার বাড়ির সামনে নয়। যেহেতু একই দাগের সম্পত্তি সুতরাং তার পাশের জমিটিই আমার বাবার। সেটা কেনো বাড়ির সামনে বলছেন তারা? আর যাদেরকে ভাড়াটিয়া বানানো হয়েছে তারা ভাড়াটিয়া না, তারা দিনমজুর।
সাজেদুর রহমান গং উল্লেখ করেছেন সমশপুর মৌজার আর.এস ১৫৭৭ ও ১৫৭৫ নং দাগে মোট জমির পরিমান এক একর সাতচল্লিশ শতাংশ। এখানে আমার সেজো ফুপু নুরমহল পৈত্রিক সূত্রে পেয়েছেন ১৬.৬৯ শতাংশ। এখন কথা হচ্ছে বাকি সম্পত্তি কার? আমার আব্বা পৈত্রিক সূত্রে পেয়েছেন ৫৪.৫৩ শতাংশ। আমি আমার বাবা লুৎফর রহমানের অংশের জমিতে গাছ লাগিয়েছি। যেহেতু একই দাগের সম্পত্তি সুতরাং তার পাশেই আমার বাবার সম্পত্তি। তাহলে কেন বলা হলো আমি মুকুলের সম্পত্তি দখল করে গাছ লাগিয়েছি?
প্রসঙ্গত সাজেদুর রহমান গং আমার ১৫৭৫ দাগের জমি দখল করে তার চলাচলের রাস্তা বানিয়েছে। যার দখলমুক্ত চাই। এজন্য আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
আমার বাবা মানবিক কারণকে প্রাধান্য দিয়ে মুকুলের কাছে দেড় শতাংশ জমি বিক্রি করেছিল। কেননা তার ভাই আরিফ মাহমুদের বকুলের সাথে তদের সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে পারিবারিক দ্বন্দ্ব থাকার জেরে মুকুলের বাড়ির যাওয়া আসার কোনো রাস্তা ছিল না। এ কারণে আমার বাবা ১৫৭৭ দাগ থেকে এক শতাংশ এবং ১৫৭৫ দাগে দশমিক শূন্য পাঁচ জমি বিক্রয় করেন। যা ভুলবশত. দলিলে শুধু ১৫৭৭ নং দাগ উল্লেখ রয়েছে। যেহেতু ১৫৭৫ দাগ উল্লেখ নাই দলিলে সুতরাং তিনি ১৫৭৫ নং দাগের জমি তার দাবি করতে পারেন না।
মুকুল আরো অভিযোগ করেছেন, কে বা কারা তার কাছে চাঁদা দাবি করেছে। এটা যে সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন তার প্রমাণ তারই দায়ের করা ১০৭/১১৭ ধারা মামলাটি। সে আমার ও আমার ছোট ভায়ের নামে তাকে মারতে যাওয়ার মামলা করেছেন যার নাম্বার, তার উল্লেখ করেন নাই। কেন? কিন্তু তিনি তার বক্তব্যে কোথাও এই ঘটনাটি বলেননি।
তিনি উল্লেখ করেছেন তার বোন ফরিদা ইয়াসমিন (পিয়ারী) চাকরির সুবাদে ভেড়ামারায় থাকেন। কিন্তু বোনজামাইয়ের থাকার বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে গেছেন। তার বোনজামাই মো. পিন্টু মোল্লা পাবনার বেড়া উপজেলার মৃত আখের মোল্লার ছেলে। কিন্তু তিনি মুকুলের খোকসার শমসপুরের বাড়িতেই থাকে এবং নিয়মিত মাদক সেবন করে। ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা- কী নেই তার সেই মাদকবাড়িতে!
এই নেশাগ্রহণের কারণে তাকে তার বাড়ির লোকজন পাবনা এলাকা থেকে বের করে দিয়েছে। সে নেশা শুধু সেবনই করে না, জনশ্রুতি রয়েছে সে মাদক কারবারের সাথেও সম্পৃক্ত। মুকুল পিন্টু মোল্লাকে তার বাড়িতে থাকতে দিয়ে তার এই অসাধু ব্যবসায় সহায়তা করেছে বলেই এলাকার সবাই ধারণা করে।
আমি মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ভবিষতে সমাজের দর্পণ সাংবাদিকদেরও সংবাদ প্রকাশে যত্নশীল হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।