শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১৩ অপরাহ্ন

কোটায় পাঁচ বছর পুলিশের চাকরী করছে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার ছেলে কাজল

এনামুল হক ইমন, কুমারখালী(কুষ্টিয়া) / ২৫৫ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম: বুধবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১০:০৬ পূর্বাহ্ন

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামের ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার ছেলে (কোটায়) পুলিশের চাকরি করছে পাঁচ বছর। বর্তমানে পাবনা সদর থানায় কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত আলী মন্ডলের অনলাইন বা লাল বার্তা মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম না থাকলেও রয়েছে মুক্তিযোদ্ধার সমস্ত কাগজপত্র। যে কাগজের বলে বর্তমানে তার ছেলে চাকরি করছে।

বুধবার সরেজমিন বল্লভপুর গ্রামে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধার নাম বলতেই এলাকাবাসীকে মিটিমিটি হাসতে দেখা যায়। তাদের হাসির কারণ জানতে চাইলে জানান, শওকত আলী ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা এটা এলাকার সবাই জানে। তার ছেলেকে কম্পিউটারে মুক্তিযোদ্ধার জাল সার্টিফিকেট বানিয়ে পুলিশের চাকরি দিয়েছে। এই নিয়ে এলাকায় অনেকবার সাংবাদিক সহ বিভিন্ন লোকজন আসলেও সে এখনও বহাল তবিয়তে চাকরি করছে। তারা আরো জানান ২০১৬ সালে শওকত আলীর ছোট ছেলে কাজল মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পুলিশের চাকরি পায়। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় সাংবাদিক সহ বিভিন্ন সংস্থার লোকজন এসে জিজ্ঞাসাবাদ করে চলে যায়।

শওকত আলীর বাড়িতে গিয়ে তাকে না পেয়ে তার স্ত্রী সাবিরন বেগমের কাছে ছেলের জাল মুক্তিযোদ্ধা সনদে চাকরির বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, আমার স্বামী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না যুদ্ধকালীন সময়ে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার এগিয়ে দিতেন। ছেলের চাকরি প্রসঙ্গে জানান যারা চাকরি দিয়েছে তারাই বলতে পারবে এটা সঠিক না বেঠিক।

পুলিশ সদস্য কাজলের বড় ভাই উজ্জল হোসেন জানান, তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কোন ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন নাই এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অনলাইনে যে তালিকা থাকে তাতেও তার বাবার নাম নেই। ছোট ভাইয়ের চাকরি প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করলে জানান তার ভাই বর্তমানে পাবনা সদর থানায় পুলিশ সদস্য হিসেবে কর্মরত রয়েছে। কাগজপত্র না থাকলে তো আর চাকরি হতো না তবে বিষয়টি নিয়ে পুলিশি তদন্ত চলছে।

কুমারখালী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এটিএম আবুল মনছুর মজনু জানান, বল্লভপুর গ্রামের শওকত আলী মন্ডল নামে কোন মুক্তিযোদ্ধা নেই। যদি সে মুক্তিযোদ্ধার সনদ দেখায় সেটি ভুয়া।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জানান, কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার কুমারখালী সমাজসেবা কার্যালয়ে শওকত আলী মন্ডল প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কিনা তার তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছেন। আমরা যাচাই করে দেখেছি তিনি একজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা কম্পিউটারে ফটোশপের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধার সমস্ত জাল কাগজপত্র বানিয়েছেন। অনলাইন বা লাল বার্তা মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় তার নাম নেই। ইতিমধ্যে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো জানান পুলিশ সদস্য কাজল তার অফিসে এসে এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কি জিজ্ঞেস করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো খবর...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর