বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন

কুষ্টিয়ায় টিকাদান কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা, সাংবাদিক লাঞ্ছিত

নিজস্বপ্রতিবেদক / ২৮৫ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম: বৃহস্পতিবার, ২৬ আগস্ট, ২০২১, ২:৩৩ অপরাহ্ন

কুষ্টিয়ায় করোনাভাইরাস টিকাদান কেন্দ্রে সংবাদ সংগ্রহ করতে আসা সাংবাদিককে ভেতরে প্রবেশ করতে বাধা দিয়েছে দায়িত্বে থাকা পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। টিকাদান কেন্দ্রের যে ভবনে বুথ, সে ভবনে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম। পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের লাঞ্ছনার শিকার হন ঢাকা পোস্টের জেলা প্রতিনিধি রাজু আহমেদ।

বৃহস্পতিবার ( 26আগস্ট) দুপুর একটার দিকে কুষ্টিয়া কলকাকলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটেছে।

লাঞ্ছনার শিকার ঢাকা পোস্টের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি রাজু আহমেদ বলেন, অন্যান্য দিনের তুলনায় বৃহস্পতিবার কলকাকলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে টিকা গ্রহীতাদের ভিড় ছিল কয়েকগুণ বেশি। টিকা গ্রহীতাদের অভিযোগ ছিল লাইনে না দাঁড়িয়ে অনেকেই টিকা নিচ্ছে। কর্তৃপক্ষের পরিচিত বা অন্য কোনো কারণে সহজেই টিকা পাচ্ছে তারা। এসময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে টিকাদান বুথের ভবনে প্রবেশ করতে গেলে বাধা দেয় পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। এ সময় তারা আমাকে গালাগালি দেয় এবং বিভিন্নভাবে লাঞ্ছিত করে।

গণমাধ্যমকর্মী রাজু আহমেদ আরও বলেন, টিকাদান বুথের ভবনে প্রবেশ করতে গেলে ভবনের গেটে দায়িত্বে থাকা এএসআই রশিদসহ সোহাগ ও এনামুল নামের তিনজন পুলিশ আমাকে বাধা দেয়। গণমাধ্যমকর্মীর পরিচয় দিলে তারা আমাকে গালাগালি দিয়ে বলেন প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না। ভিতরে সাংবাদিক প্রবেশ নিষেধ। পরে পুলিশের সাথে যুক্ত হন কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী। তারাও আমাকে বিভিন্নভাবে লাঞ্চিত করে।

এসময় এই প্রতিবেদক কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলামকে ফোন দিলে তিনি বলেন, টিকাদান কেন্দ্রে হাজারো মানুষের ভিড়। টিকাদানের বুথ যে ভবনে আছে, সেখানে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। সাংবাদিককে প্রবেশ করতে দিলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। এজন্য আপনাকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। বাইরে থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন।

টিকাদান কেন্দ্রে উপস্থিত টিকা গ্রহীতারা বলেন, সকাল থেকে হাজারো মানুষ করোনা টিকা নিতে লাইনে দাড়িয়েছেন। এখানে অনিয়ম হচ্ছে, লাইনে না দাঁড়িয়েই অনেকে টিকা নিয়ে চলে যাচ্ছে। আর আমরা ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। খুব ধীরগতিতে টিকাদান কার্যক্রম চলছে। বুথের সংখ্যা বাড়িয়ে দিলে বিশৃঙ্খলা এবং ভোগান্তি থেকে আমরা মুক্তি পাব। বুথের সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছেন তারা।

টিকা গ্রহীতা ও বেসরকারি চাকরিজীবী মামুন হোসেন বলেন, লাইনে না দাঁড়িয়ে অনেকে টিকা নিয়ে চলে যাচ্ছে। কেন্দ্রে যারা দায়িত্ব আছে তাদের পরিচিত হওয়ায় সহজেই টিকা পাচ্ছে অনেকে। আর আমি অফিস থেকে একদিনের ছুটি নিয়ে সকালবেলা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। দুপুর বয়ে গেল তাও টিকা নিতে পারিনি। আর স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই।

এবিষয়ে কুষ্টিয়ার গণমাধ্যমকর্মীরা বলেন, সাংবাদিকের সাথে দুর্ব্যবহার, টিকাদান কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা এবং সাংবাদিক লাঞ্ছিত করার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। দায়িত্ব পালনকালে একজন গণমাধ্যম কর্মীর সাথে পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এধরণের আচরণ করতে পারেন না। এটা সাংবাদিকতার পরিপন্থী ও খুবই কষ্টের ব্যাপার। এ ধরনের ঘটনা কখনোই আশা করি না।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলম বলেন, গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে খারাপ আচরণ করা হচ্ছে ঠিক না। সাংবাদিক পুলিশের বন্ধুর মত। পুলিশ বা স্বাস্থ্যকর্মী কোনভাবেই সাংবাদিকদের সাথে খারাপ আচরণ করতে পারে না। আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।

তিনি আরো বলেন, কেন্দ্রে দায়িত্বরত পুলিশ সিভিল সার্জন অফিসের নির্দেশনা দায়িত্ব পালন করছে। সিভিল সার্জন অফিস তাদের নিষেধ করলে তা পালন করতে বাধ্য দায়িত্বর পুলিশদের। বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো খবর...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর