শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৭ অপরাহ্ন

কুষ্টিয়ায় চামড়া সিন্ডিকেটের দৌরাত্ব, সরবরাহ কম দাম বেশি

কুষ্টিয়ার সময় ডেস্ক / ৪২৪ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম: সোমবার, ২৬ জুলাই, ২০২১, ৩:৪৪ পূর্বাহ্ন

আমদানি কম থাকায় মোকামে বেড়েছে চামড়ার দাম। টানা তিন বছর বিপর্যয়ের পর এবার কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে কুষ্টিয়ায় চামড়ার বাজার। এবারও অভিযোগ উঠেছে সিন্ডিকেট করে কুষ্টিয়ার ব্যবসায়ীরা ঈদের দিন কম দামে চামড়া কিনেছেন। তবে বাসাবাড়ি থেকে ব্যাপারী ও মজুদদাররা বাড়তি দামে চামড়া ক্রয় করায় সন্ধ্যা পর মোকামে কিছুটা দাম বাড়িয়ে দেয় আড়তদারা।

এদিকে কুরবানি কম হওয়ায় এবার লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশংকা করছেন ব্যবসায়ীরা। গত চারদিনে লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৩০ শতাংশ চামড়া সংগ্রহ করেছেন আড়তদাররা। এ অঞ্চলের একমাত্র চামড়ার মোকাম কুষ্টিয়া শহরের বাবুর আলী গেটের চামড়া পট্রি। ছোট-বড় মিলিয়ে এখানে প্রায় ৬০ জন আড়তদার নানা প্রতিকূলতার মাঝেও দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছেন।

তাদের দাবি, কয়েক বছরের চেয়ে এবার কুষ্টিয়ার মোকামে কুরবানির পশুর চামড়ার আমদানি কমেছে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, করোনাকালীন মহামারি ও সরকারি বিধিনিষেধের কারণে এ অঞ্চলে কুরবানি কম হয়েছে। ফলে চামড়ার আমদানি কম।

চামড়া ব্যবসায়ীদের হিসেব মতে, কুষ্টিয়ার মোকামে এবার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫ লাখ কুরবানির পশু চামড়া। এরমধ্যে গরু এক লাখ ৫০ হাজার এবং খাসিসহ অন্যান্য পশু ৩ লাখ ৫০ হাজার। ঈদের চতুর্থ দিন রোববার পর্যন্ত এই মোকামে ৩৫ হাজার গরু ও এক লাখ খাসির চামড়া আমদানি হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৩০ শতাংশ। চামড়া ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ফড়িয়া ও মজুদদাররা দাম বৃদ্ধির আশায় চামড়া বিক্রি না করে লবণজাত করে রেখেছেন।
অন্যদিকে গত বছরের তুলনায় এবার কমেছে কুরবানির সংখ্যা। সব মিলিয়ে মোকামে খুব কম চামড়া আমদানি হচ্ছে। এসব কারণে দামও কিছুটা বেড়েছে। চামড়া ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন বলেন, এবার কুরবানির সংখ্যা অনেক কম। গত বছরের তুলনায় এবার অর্ধেক চামড়াও কিনতে পারিনি। এ কারণেই এবার কিছুটা দাম পেয়েছে বিক্রেতারা।

গত ঈদের তুলনায় এবছর গরুর চামড়া পিস প্রতি ১শ থেকে ২শ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বলে জানান এই ব্যবসায়ী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুষ্টিয়ার এক মাদ্রাসা শিক্ষক জানান, মাদ্রাসা বা এতিখানায় সহায়তা হিসেবে নেয়া চামড়া বেশিক্ষণ সংরক্ষণ করা যায় না। এটা জেনে শুনেই সকাল থেকে ব্যবসায়ীরা পানির দরে চামড়া কিনেছে। সব প্রতিষ্ঠানের চামড়া বিক্রি শেষ হলে দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়। এটা মূলত অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে।

শহরের ঐতিহ্যবাহী মোমতাজুল উলুম মাদ্রাসার প্রধান মুফতি আরিফুজ্জামান জানান, গত বছর গরুর চামড়া বিক্রি করেছি ৫শ থেকে ৬শ টাকায়। এবছর ঈদের দিন রাত ১০টায় গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ৭৫০ টাকায়।

শহরের মদিনাতুল উলুম মাদ্রসার প্রধান মাওলানা রফিকুল ইসলাম বলেন, তারা গরুর চামড়া গড়ে বিক্রি করেছেন ৮৫০ টাকায়। তবে সেটি রাতে। সারাদিন চামড়ার দাম কম ছিল।

কুষ্টিয়া চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনিস কেরাইশি জানান, এবছর প্রতি বর্গফুট গরুর কাচা চামড়ার মূল্য সরকারিভাবে ঢাকার বাইলে নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা। গত বছর একই চামড়া ২৫ টাকা বর্গফুট কিনলেও এবার ৩৭ টাকা করে কিনছেন।

অন্যদিকে খাসির চামড়া কিনেছেন ১শ টাকার উপরে। তার অভিযোগ, বিগত বছরগুলোর মতো ট্যানারি মালিকদের কাছে তাদের মূলধন বকেয়া আটকে আছে। এ কারণে চামড়া ক্রয় করতে তাদের আর্থিক সংকটে পড়তে হচ্ছে।

সূত্র : যূগান্তর


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো খবর...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর