কুষ্টিয়ায় কলেজশিক্ষক রাকিবুল হাসান রাকিবের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স শেষ বর্ষের পরীক্ষা দিতে এসে সংখ্যালঘু পরিবারের ওই কলেজছাত্রী যৌন হেনস্তার শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় কলেজে লিখিত অভিযোগ দিলেও চাপের মুখে মামলা দায়ের থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সংখ্যালঘু ওই পরিবারটি। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও মেলেনি বিচার।সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলেও অভিযুক্ত ওই শিক্ষক এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। উল্টো ওই পরিবারটিকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে শিক্ষক রাকিবের লোকজন। এ ঘটনায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ওই শিক্ষার্থীর পরিবার।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ জানুয়ারি কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের পরীক্ষা কেন্দ্রে ২০২০ সালের অনার্স শেষ বর্ষের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা শেষের দিকে ওই কক্ষে দায়িত্বপালনকারী শিক্ষক রকিবুল ইসলাম ওই শিক্ষার্থীকে ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ কৌশলে একটি নির্জন কক্ষে নিয়ে শিক্ষার্থীর স্পর্শকাতর স্থান স্পর্শ করার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থী জোরপূর্বক ওই কক্ষ থেকে বেরিয়ে সরাসরি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের দপ্তরে গিয়ে ঘটনা জানিয়ে বিচার দাবি করে লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক আনছার আলী। বলেন, পরীক্ষার হলে ছাত্রী হয়রানির ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়ে ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ওই অভিযোগের কপি সংযোজনসহ ঘটনাস্থল কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের অধ্যক্ষ নওয়াব আলী এবং কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত পত্র প্রেরণ করেছি। পরে শুনেছি ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রী যৌন হয়রানির মতো ঘটনায় কেবলমাত্র সাময়িক বাহিষ্কারই দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ নয়। আমরা ওই ছাত্রীর পরিবারের সাথে কথা বলেছি, উনারা সরাসরি মামলা করতে রাজি হননি। শুনেছি মামলা না করার জন্য তাদের উপর ভয়ভীতি প্রদর্শন ও চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে।
এরবিষয়ে ঘটনাস্থল কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের অধ্যক্ষ নওয়াব আলীর বলেন, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের দপ্তর থেকে পাঠানো পত্রে অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানো নোটিশ ইস্যু করেছি। অভিযুক্ত শিক্ষক রাকিবুল ইসলাম কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব দিয়েছেন। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন আছে।
অভিযুক্ত শিক্ষক রাকিবুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, আসলে ঘটনা কিছুই না; একটু ভুল বোঝাবুঝি মাত্র। পরে আমরা নিজেরা বসে ঠিক করে নিয়েছি।
কী ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, কুষ্টিয়া শহরের আমলাপাড়াস্থ আমার কোচিং সেন্টার বাবদ এক সাংবাদিক কিছু চাঁদা দাবি করেছিলো, সেটা না দেয়াতে ওই সাংবাদিক এই নিউজ ছেপেছিলো। পরে সব ঠিক হয়ে গেছে। তাছাড়া এ বিষয়ে কেউ কোন লিখিত অভিযোগও করেননি বলে দাবি করেন অভিযুক্ত শিক্ষক রাকিবুল ইসলাম।